স্পোর্টস ডেস্ক

১০ জুলাই, ২০১৭ ১৬:৩৬

নিজেদের দাবি থেকে পিছু হটছেন না স্মিথরা

কোনো না কোনো পক্ষকে তো ছাড় দিতেই হবে। নইলে বেতন-ভাতা নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) আর অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব শেষ হবে না কখনোই। কিন্তু ছাড়টা দেবে কোন পক্ষ? ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া অনড়। কাল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিএ) হয়ে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথও আরেকবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নিজেদের দাবি থেকে পিছু হটবেন না তাঁরা!

টুইটারে এ নিয়ে এর আগেও টুকটাক কথা বলেছেন স্মিথ। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থানটা পরিষ্কার করলেন কাল। ইনস্টাগ্রামে দীর্ঘ এক বিবৃতিতে বলতে গেলে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) আবারও হুমকি দিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক, ‘দীর্ঘ দিন ধরে খেলোয়াড়েরা যেটা বলে আসছে, আমি সেই কথাটাই আবারও বলব। সব খেলোয়াড়ের জন্য রাজস্ব বণ্টন নীতি থেকে আমরা সরে আসছি না।’

মূল দ্বন্দ্বটাও এই রাজস্ব বণ্টন নীতি নিয়েই। খেলোয়াড়েরা চাইছেন, ২০ বছর ধরে যে রাজস্ব বণ্টন নীতি চলে আসছে, সেটাই থাকুক। আর সেই নীতিটা প্রযোজ্য হতে হবে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া সব ক্রিকেটারদের জন্য। অন্যদিকে বোর্ড চাইছে, রাজস্ব নয়, লভ্যাংশ বণ্টন হবে। সেটাও শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জন্য। ঘরোয়া ক্রিকেটারদের জন্য অন্য নীতি।

এই জায়গায় খুবই শক্ত আছেন স্মিথরা, ‘আমরা চাই রাজস্ব বণ্টন নীতিটা সবার জন্যই থাকুক। কারণ, ঘরোয়া ক্রিকেটারদের অবশ্যই দেখভাল করতে হবে।’ কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নিজের ক্যারিয়ারের উদাহরণ টেনেই বুঝিয়েছেন স্মিথ, ‘নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই আমি বলছি, ২০১১ সালে আমি যখন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লাম, খুব ভালো একটা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট না থাকলে আমি আজকের অবস্থানে আসতে পারতাম না।’

শুধু ঘরোয়া ক্রিকেটারই নয়, নারী ক্রিকেটারদের ব্যাপারেও কোনো ছাড় দিতে রাজি নন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক, ‘দিন দিন মেয়েদের ক্রিকেটটাও বড় হচ্ছে। সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেটারদেরও অবশ্যই নিজেদের উপার্জনের ভাগ পাওয়া উচিত। আমি নিশ্চিত, এ ব্যাপারে সব পুরুষ ক্রিকেটারই আমার সঙ্গে একমত হবেন। নেতা হিসেবে ডেভিড ওয়ার্নার, মেগ ল্যানিং, অ্যালেক্স ব্ল্যাকওয়েল ও আমি; আমরা সবাই এটার জন্যই লড়ছি।’

কিন্তু বোর্ড এখনো পর্যন্ত এমন আভাস দেয়নি যে স্মিথদের দাবি মেনে নেওয়া হতে পারে। ওদিকে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা সিএর প্রস্তাবিত নতুন চুক্তিতে সই না করায় এ মাসের শুরু থেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দল বাতিল করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। শঙ্কার কালো মেঘ অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ ও ভারত সফর এবং পরবর্তী অ্যাশেজ সিরিজ ঘিরেও। তবে অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেট দল দেশের স্বার্থের কথা ভেবে খেলে যাচ্ছে চলমান বিশ্বকাপে।

স্মিথের কথা শুনেও বোঝা যাচ্ছে, মূল দাবি থেকে সরে আসতে তাঁরা নারাজ। তবে বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের দাবিদাওয়াগুলো পরিমার্জনা করতে যে আপত্তি নেই, সেটিও বোর্ডকে জানিয়ে রাখলেন স্মিথ, ‘এসিএর মাধ্যমে আমরা বর্তমান চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আনতে ইচ্ছুক, যাতে এটি আরও আধুনিক হয়। আমরা সব সময় এই পরিবর্তনে আগ্রহী ছিলাম। তবে সেসব হতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে।’

এখন সিএ স্মিথের এই ডাকে সাড়া দেয় কি না, সেটি দেখার অপেক্ষা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, দুই পক্ষ আজ থেকে আবার বৈঠকে বসবে। এএফপি, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত