নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ জুন, ২০১৫ ২২:২৩

নেতিবাচক মানসিকতা আর উদ্ভট দল নির্বাচন: প্রথম দিন শেষেই কাঠগড়ায় অধিনায়ক

এই ছবির মতই পুরো দিনই ছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দাপট

দিনের শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ দল নির্বাচনের সমালোচনা দিয়ে, দিনভর তা চলল এবং দিনশেষে রীতিমত কাঠগড়ায় অধিনায়ক, কারণ দিনশেষে ভারতের স্কোর বিনা উইকেটে ২৩৯।

উইকেট কেমন আচরণ করবে তা বুঝতে পারছিলেন না কোচ অধিনায়ক অথবা উইকেটে কিছু নেই তাই একমাত্র জেনুইন পেসার শহিদের সঙ্গে দুই স্পিনার তাইজুল আর জুবায়ের। দলে আট ব্যাটসম্যানের সঙ্গে তিন জেনুইন বোলারের এমন কম্বিনেশন আগে কি কখনও কেউ করেছে এমন খুঁজে পেতে গলদঘর্ম হতে হবে নিশ্চয়ই। তবে এত খোঁজাখুঁজি না করেও দিনভর ধারাভাষ্যকারেরা বললেন নেতিবাচক মানসিকতার কথা।

টেস্ট ক্রিকেট যেখানে প্রতিপক্ষের বিশ উইকেট নেওয়ার খেলা সেখানে দলে জেনুইন বোলার মাত্র তিন, আর স্পিন খেলতে বিশ্বসেরা ভারতের বিপক্ষে স্পিন এটাক- ভাবা যায়? ভাবতে না চাইলে বাস্তবতা সেটা!  


পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ এক সিরিজের পর ভারতীয় বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারদের কন্ঠে সমীহের আভাস। টিভি স্পন্সর স্টার স্পোর্টসের প্রোমোতে বাংলাদেশের বড় হয়ে উঠার গল্প। সবাই যখন ইতিবাচক ক্রিকেটের প্রত্যাশা করছিল তখনই অধিনায়ক মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার করে দিলেন- ড্র করতে পারলেই খুশী তারা। এমনকি খেলবেনও ড্রয়ের লক্ষ্যে।

ক্রিকেটের বহুল প্রচারিত কথা- কেউ যখন জয়ের জন্য খেলে তখন জিততে না পারলে ড্র করতে পারে সহজেই কিন্তু কেউ যখন ড্র'র জন্যই খেলতে নামে হার হয়ে যায় ভবিতব্য।

ম্যাচের আগের দিন কোচ-অধিনায়ক পিচ দেখে এসে বললেন এমন পিচ নাকি তারা জীবনেও দেখেননি। বুঝতে পারছেন না কেমন হবে এর চরিত্র। অথচ দল নির্বাচন করতে গিয়ে ঠিকই বুঝে ফেললেন পিচের চরিত্র। বলা ভালো একটু বেশিই বুঝলেন। তাই কিনা একাদশে ৮ ব্যাটসম্যান আর এক পেসার!

কোন দল টেস্ট খেলতে নামছে একজন মিডিয়াম পেসার নিয়ে, এমন দৃশ্য টেস্ট ক্রিকেটের জন্য বিরল। ৪ স্পিনারের মধ্যে বোলিংয়ে অনেকদিন থেকেই ফর্ম খুঁজে ফেরা সাকিব আর শুভাগতকে নির্ভেজাল বোলার বলার উপায় নেই। কাজেই বোলার মূলত তিনজনই- তাইজুল, জুবায়ের আর শহীদ।

৩ স্পেশালিষ্ট বোলার আর ২ অলরাউন্ডার নিয়ে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট যে নেয়া যায় না এটা পরিষ্কার। এই একাদশ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে জানিয়েও দেয়া হল আমরা আসলে জেতার জন্য নয় হার বাঁচাতে খেলছি। কেউ যখন খেলার আগেই এমন মনোভাব নিয়ে ফেলে তার পক্ষে পুরো ম্যাচের চাবি ধরা কঠিনই বটে।

টেস্ট ক্রিকেটে যতটা স্কিলনির্ভর খেলা ততটাই মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। সেই মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে শুরুতেই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত- এমন অবস্থায় মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ দলকে পিছিয়ে দিয়েছে ভারতের উদ্বোধনী দুই ব্যাটসম্যানের অবিচ্ছিন্ন দুই শতাধিক রানের জুটি।

প্রথম দিন শেষে নিজেদেরকে চালকের আসনে সমাসীন করা ভারতের শিখর ধাওয়ান এগুচ্ছেন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে আর মুরালি বিজয় এগুচ্ছেন সেঞ্চুরির দিকে। প্রথম দিনে বাংলাদেশ দলের ৭ জন বোলার হাত ঘুরালেও সাফল্যের হিসাবে সবাই আছেন এখনও শূন্যের ঘরে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত