নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ এপ্রিল, ২০২১ ২২:৫১

মামুনুলের সমালোচনা: শাল্লায় আবারও হামলার হুমকি

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জে শাল্লা উপজেলার নোয়াগাও গ্রামে হামলা চালানো হয়। হামলায় ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় ওই গ্রামের অন্তত ৮০টি হিন্দু বাড়ি। এ তান্ডবের রেশ না কাটতেই শাল্লা উপজেলা সদরের ঘুঙ্গিয়ারগাঁওসহ আশপাশের গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলার হুমকি প্রদান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এমন অভিযোগ এনে ১৩ জনের বিরুদ্ধে শাল্লা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। উপজেলার যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপুর ছোট ভাই অমিতাভ চৌধুরী গত শনিবার রাতে এ জিডি করেন।

এতে অভিযোগ করা হয়, ওই ১৩ জন ফেসবুকে অপুকে অশালীন ও আপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ এবং ঘুঙ্গিয়ারগাঁওসহ আশপাশের গ্রামে নোয়াগাঁওয়ে হামলার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তির হুমকি দেয়।

অপু শাল্লা থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা অনিল বরণ চৌধুরীর ছেলে। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত 'মামুনুল হকের স্ত্রীর ফোনালাপ ফাঁস' শিরোনামে একটি অডিও লিঙ্ক গত ৪ এপ্রিল নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেন তিনি। এরপরই তাকে ফেসবুকে ভয় দেখানো শুরু হয়। দেওয়া হয় আবারও সাম্প্রদায়িক হামলার হুমকি।

নিরাপত্তা চেয়ে জিডিতে বলা হয়, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের অনুসারী অন্তত ১৩ জন ফেসবুকে এ হুমকি ও হামলার উস্কানি দিচ্ছে। এতে যে কোনো সময় অপুর পরিবার ও তার গ্রামে হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। জিডিতে ওই ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তাদের বাড়ি শাল্লা উপজেলায়।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম বলেন, বর্তমানে ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এরআগে গত ১৫ মার্চ হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাওয়ের যুবক ঝুমন দাস। এতে ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে হেফাজত অনুসারীরা। ১৬ মার্চ তারা এলাকায় বিক্ষোভ করে। ওই রাতেই পুলিশ আটক করে ঝুমন দাসকে। পরদিন সকালে ঝুমনের গ্রাম নোয়াগাওয়ে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় কয়েক হাজার লোক। আশপাশের গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালায় তারা।

পরে এই দুঘটনায় দুটি মামলা দায়ের হয়। হামলা ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় শাল্লা থানার ওসিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

এদিকে, এই ঘটনার পর থেকেই সমালোচনায় থাকা মামুনুল হক সম্প্রতি নারায়নগঞ্জের একটি রিসোর্টে নারীসহ ধরা পড়ে তীব্র বিতর্কে পড়েন। তাকে নিয়ে দেশজুড়েই সমালোচনা চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত