সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৬ এপ্রিল, ২০২১ ১২:২৭

শাল্লায় হামলার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় কতুব আলম (৩৮) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  এনিয়ে এ মামলায় মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের দাড়াইন বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কুতুব আলম উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে।

এ বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম জানান, বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুতুবকে গ্রেপ্তার করা হয়। কুতুব মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারকৃত কুতুবকে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার অভিযোগে গত ১৭ মার্চ সকালে শাল্লা উপজেলার কাশিপুর, দিরাই উপজেলার নাসনি, সন্তোষপুর ও চণ্ডিপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের পাশের ধারাইন নদের তীরে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেখান থেকে শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালান। এ সময় বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

শাল্লায় হামলার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ৭ এপ্রিল শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে শাল্লা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলামকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করে মৌলভীবাজার জেলায় বদলি করা হয়।

শাল্লায় হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানা ও আদালতে মামলা হয়েছে চারটি। শাল্লা থানায় গত ১৮ মার্চ দুটি এবং ২২ মার্চ একটি মামলা হয়। সর্বশেষ ১ এপ্রিল আদালতে আরেকটি মামলা হয়।

১৮ মার্চ করা দুটি মামলার একটির বাদী শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজারজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার। এই মামলায় ৫০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজারজনকে আসামি করা হয়। আর ২২ মার্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে থানায় আরেকটি মামলা করেন শাল্লা থানার এসআই আবদুল করিম।

ঝুমন দাশের ফেসবুক পোস্ট নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। তিনি ১৭ মার্চ থেকে কারাগারে। ১ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন ঝুমন দাশের মা নিভা রানী দাশ। এই মামলার এজাহারে আসামি হিসেবে ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও দুই হাজার। এর মধ্যে ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা গ্রেপ্তার হওয়া নাসনি গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বাধীনকে এই মামলাও ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

গ্রামে হামলার মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে শহিদুল ইসলামকে পাঁচ দিনের এবং আরও ২৮ জনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত