রেজুওয়ান কোরেশী, জগন্নাথপুর

১৪ মে, ২০২১ ১৯:০৩

ছয় বছর ধরে ভাঙাচোরা সড়ক, মেরামতে এগিয়ে এলেন প্রবাসী

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ভবেরবাজার-নয়াবন্দর-কাঁঠালখাইর সড়কে সংস্কার কাজ গত ছয় বছরেও শেষ করতে পারেনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। যান চলাচলের অনুপযোগী এ সড়কে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লোকজনকে। ঈদকে সামনে রেখে সড়কের জনদূর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে এসেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা গীতিকার সৈয়দ দুলাল।

গত দুই দিন ধরে তিনি সড়কের ছোট বড় গর্তগুলো ভরাটের কাজ শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাজ চলতে দেখা যায়। তিনি নিজে তদারকির মাধ্যমে শ্রমিক দিয়ে গর্ত ভরাটের কাজ শুরু করায় পরিবহন শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা যায়।

সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা সমাজকর্মী সৈয়দ রেজওয়ান আহমেদ বলেন, সড়কটি জগন্নাথপুর পৌরসভার একাংশ, সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়ন ও আশারকান্দি ইউনিয়নের লাখো মানুষের উপজেলা সদরের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। সড়ক সংস্কারে এলজিইডির দায়িত্বহীনতায় আমরা হতাশ। সড়কের দূর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে এসেছেন একজন প্রবাসী। এতে ঈদের আনন্দে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে।

এলজিইডির জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্র জানা যায়, ২০১৪ সালে চারকোটি টাকা বরাদ্দে ১২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। সুনামগঞ্জের সজিব রঞ্জন রায়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। সময়মতো কাজ শেষ না করায় স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যাদেশ বাতিল করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। ২০১৮ সালে আইনি লড়াই শেষ হলে ২০১৯ সালে আবারও সড়ক সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঢাকার পদ্মা কনষ্ট্রাকশন সাড়ে চার কোটি টাকা বরাদ্দে কাজ পায়।

৩০ জানুয়ারি ২০২১ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও যৎ সামান্য কাজ করে সড়কের কাজ শেষ না করে চলে যায়।

আশারকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা ছাত্র নেতা মুহিবুর রহমান রাসেল বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোয়ালাবাজার হয়ে স্বল্প সময়ে ঢাকা ও সিলেট যাতায়াত করা যায়। সড়কের সৈয়দপুর ও আশারকান্দি অংশে বড় বড় গর্ত সড়কটি আমাদের দূর্ভোগের অন্ত নেই। ঠিকাদারের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে আছি। রাসেলসহ এলাকাবাসীর অভিমত স্হানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বার বার সড়ক সংস্কারে বরাদ্দ দিলেও সংশ্লিষ্টরা কাজ বাস্তবায়ন না করে আমাদের জিন্মি করে রেখেছে।

সড়ক সংস্কার কাজের উদ্যক্তা সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ দুলাল বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে জনদূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে সড়কের বড় বড় অংশের গর্ত ভরাট করার উদ্যাগ নেই। তিনি বলেন প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার টাকার ইটের খোয়া ও বালু ফেলেছেন।সাধ্যমতে তিনি সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত চালু রাখার চেষ্টা করবেন।

স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয়ের উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, সড়কের কাজ শেষ করতে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসহযোগীতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করতে পারায় পদ্মা কনস্ট্রাকশনের সাথে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। শ্রীঘ্রই নতুন করে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সড়কের অসমাপ্ত কাজ শেষ হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত