রিপন দাস, বড়লেখা:

১৭ মে, ২০২১ ০০:৫২

মাধবকুণ্ড বন্ধ, উন্মুক্ত স্থানে পর্যটকের ভিড়

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সারাদেশের মতো মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দেশের অন্যতম জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ১ এপ্রিল বনবিভাগ এই নির্দেশনা জারি করে। 

মাধবকুণ্ড বন্ধ থাকলেও ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সেখানে ভিড় করছেন পর্যটকরা। তবে প্রশাসন তাদেরকে গেট থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।



এতে লোকজন চা বাগান, হাকালুকি হাওর, পাখিবাড়িসহ উন্মুক্ত স্থানগুলোতে ভিড় করছেন। দল বেঁধে শিশু কিশোররা যানবাহনে গান-বাজনা করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকেরা ভিড় করেন মাধবকুণ্ডে। এই তিনদিনে মাধবকুণ্ড গেট থেকে প্রায় ৬ হাজার পর্যটককে ফেরত পাঠিয়েছে স্থানীয় পর্যটন পুলিশ ও বন বিভাগ।

সরেজমিনে পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে আসা লোকজনকে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি।

সিলেট থেকে পরিবার নিয়ে আসেন ছালেক আহমদ। তিনি বলেন, ‘জানি মাধবকুণ্ড বন্ধ। তারপরও এসেছি। বাসা বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগছে না। গেট থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছে। কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছে না। ঝরনা দেখতে না পারার হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। চা বাগান ঘুরে ছবি তুলে চলে যাব।’



মাধবকুণ্ডে দায়িত্বে থাকা পর্যটন পুলিশের সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) প্রণীত চাকমা শনিবার বিকেলে বলেন, ‘করোনার কারণে সব পর্যটন স্পট বন্ধ। ঈদের ছুটিতে শুক্র ও শনিবার অনেক পর্যটক এসেছেন। আমরা কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেই না। ৩ থেকে ৪ হাজারের মতো আমরা গেট থেকে ফেরত পাঠিয়েছি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভেতরে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।’

এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকির হাল্লা এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পাখি বাড়ি ও হাওরে পর্যটকরা ভিড় করেছেন। কেউ খোলা পিকআপে দল বেঁধে গান বাজনা করছেন। কেউ বা পরিবার পরিজন নিয়ে গাড়ি, মোটরসাইকেলে করে ঘুরছেন।

আমিনুল ইসলাম বড়লেখা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা। বন্ধুদের নিয়ে হাওরে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে কোথাও যেতে পারছি না। দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। তাই সবাই মিলে হাওরে ঘুরতে এসেছি।’

কথা হয় স্থানীয় ধারাভাষ্যকার ইকবাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ‘হাকালুকির পরিবেশটা খুব সুন্দর। উন্মুক্ত জায়গায় একটু প্রশান্তির খুঁজে এসেছি।’

বন বিভাগের হাকালুকি বিটের দায়িত্বে থাকা জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট তপন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘উন্মুক্ত জায়গা হওয়ায় হাওরে মানুষ বেশি ভিড় করছেন। ঈদের দিন শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজারের মতো লোকজন এসেছেন।’



এদিকে ঈদের ছুটিতে বড়লেখার চা-বাগানগুলোতে পর্যটকরা ভিড় করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, বড়লেখার লক্ষীছড়া, কেরামতনগর, পাল্লাথল, সমনভাগ চা বাগানসহ বিভিন্ন বাগানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে করে নানা বয়সী ভ্রমণ পিপসু মানুষ চা-বাগানে ভিড় করেছেন। তারা চা-বাগানে প্রিয়জনের সাথে ছবি তোলছেন। ভিড় বাড়লেও চা-বাগানে ঘুরতে আসা অধিকাংশ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত