রেজুওয়ান কোরেশী, জগন্নাথপুর

২৯ মার্চ, ২০২৪ ২০:২২

ঈদের কেনাকাটায় ভিড় বাড়ছে জগন্নাথপুরে

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন মার্কেটে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা। মার্কেটগুলোতে পুরুষের চাইতে নারী ক্রেতার সমাগম বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দোকান ও মার্কেটগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। এই ভিড় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত থাকছে।

উপজেলা সদরের মোজাফর মার্কেট পৌর পয়েন্ট, আল জান্নাত প্লাজা, আসিদ উল্লাহ মার্কেট, কাপড়, জুতা ও কসমেটিক্স দোকানে ক্রেতা সাধারণের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ফুটপাতের মৌসুমি ও ভ্রাম্যমাণ দোকানেও নিম্নবিত্ত মানুষদের আনাগোনা আছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সরেজমিনে জগন্নাথপুর বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। অনেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন। অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে তারা আগে ভাগেই সেরে নিচ্ছেন ঈদের কেনাকাটা। পছন্দের পণ্যটি নিয়ে খুশি মনে ফিরছেন অনেকেই। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ এবার পোশাকের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি।

অপরদিকে রমজানের এই সময়ে ক্রেতাদের এমন সমাগম দেখে ঈদে ভালো বিক্রির আশা করছেন বিক্রেতারা। ঈদকে ঘিরে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে আলিয়া কাট ও নায়রা এবং ছেলেদের পোশাকের মধ্যে সিকুয়েন্স ও সুলতান পাঞ্জাবি এবার বেশি সাড়া ফেলার সম্ভাবনাও দেখছেন তারা।

এবছর ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে থাকা মেয়েদের আলিয়া কাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২’শ টাকায়। ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে থাকা ছেলেদের সিকুয়েন্স পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫শ’ টাকায়।

টিএন্ডটি রোড ব্যবসায়ী ডলফিন ফ্যাশন মালিক জহিরুর ইসলাম বলেন, এবার ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পোশাক উঠিয়েছি। রোজার শুরু থেকে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। আশা করছি এবার বিক্রি ভালো হবে।

জগন্নাথপুর বাজারের নিউ ঝলক ফ্যাশন এন্ড সুজ’র সত্ত্বাধিকারী মালিক কুদ্দুছ মিয়া বলেন, এবার রমজানের প্রথম থেকেই মোটামুটি ভালো বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ভালো ব্যবসা হবে।

সৈয়দপুর রাদিস শপিংমলে কথা হয় সৈয়দা গুলশানা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার হাজব্যান্ড একজন সংবাদকর্মী। খুব বিজি থাকেন। তাই আমার হাজব্যান্ড জন্য একটা পাঞ্জাবি নিলাম। তবে গতবারের তুলনায় দাম একটু বেশি। কিন্তু পছন্দমতো কিনতে পেরে খুশি তিনি।

পরিবারসহ কেনাকাটা করতে এসেছেন নুর নবী। তিনি বলেন, রোজার শেষ সময় মার্কেটে অনেকে ভিড় থাকে। ভিড়ের মধ্যে কেনাকাটা করা খুব কষ্টের। অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়, তাই আগেই কেনাকাটা সেরে ফেলছি।

জগন্নাথপুর বাজারের কয়েকজন কসমেটিক্স দোকানদারের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, গতবারের তুলনায় ক্রেতা বেশি, কেনাবেচাও বেশি। পোশাক ও কসমেটিক্সের পাশাপাশি বেড়েছে জুতা, স্যান্ডেলের বিক্রি। ছোট-বড় সবাই আসছেন, সাধ্যের মধ্যে পছন্দমতো জুতা-স্যান্ডেল কিনতে। কারও কাছে মান ও দাম ঠিক থাকলেও, কারও কাছে গতবছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। তবে দোকানিরা বলছেন তারা যেভাবে কিনে এনেছেন সেভাবেই বিক্রি করছেন।

জগন্নাথপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মশাহিদ মিয়া ভূঁইয়া জানান, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে তাদের বেচাকেনা সম্পন্ন করতে পারেন সেজন্য আমরা ব্যবসায়ী নেতারা তৎপর রয়েছি। নিয়মিত ব্যবসায়ীদের খোঁজ খবর নিচ্ছি, মার্কেট মনিটরিং করছি।

জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা তৎপর রয়েছে। মার্কেটগুলোর সামনে পুলিশের টিম রয়েছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত