তপন কুমার দাস, বড়লেখা

০৯ মে, ২০১৬ ২২:১৮

বড়লেখায় নিয়ম না মেনে শিক্ষক বদলি!

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে বড়লেখায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলির অভিযোগ ওঠেছে। কর্মকর্তাদের পছন্দমতো মতো শিক্ষকদের বদলি করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলানায় শিক্ষক সংখ্যা কম হলেও এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক না দিয়ে শিক্ষকদের পছন্দের স্কুলে অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে বদলি করা হয় বলেও অভিযোগ।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রাক্ প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে উপজেলার সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগদান করেন অসিত দাস। চাকরিতে যোগদানের প্রায় ৩ মাসের মাথায় বড়লেখা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাক্ প্রাথমিকের শিক্ষক অসিত দাসকে মৌখিক আদেশে বদলি করেন খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অসিত দাস খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন গত ২ এপ্রিল। কিন্তু এতে শিক্ষক বদলির নির্দেশিকা উপেক্ষা করা হয়েছে।

একইভাবে খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সহকারি শিক্ষক রানা কান্ত দাসকে মৌখিক আদেশে বদলি করা হয় সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মৌখিক আদেশের প্রেক্ষিতে রানা কান্ত দাস যোগদান করেন সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে কর্মরত অর্ধশতাধিক শিক্ষক বদলির আবেদন করেন। এ সময় সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্ প্রাথমিকের শিক্ষক অসিত দাস যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন অসুবিধার কারণ দেখিয়ে বদলির আবেদন করেন।

বদলির আবেদনটি শিক্ষক বদলির নির্দেশিকা মেতাবেক না হওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ফেরত আসে। কিন্তু জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে বদলির আদেশ না হয়ে ফেরত আসা শিক্ষক অসিত দাসকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অনুমতি ছাড়াই উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ মৌখিক আদেশে বদলি করেন খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সহকারি শিক্ষক রানা কান্ত দাসকে মৌখিক আদশে বদলি করা হয় সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গত এপ্রিল মাস থেকে অসিত দাস খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও রানা কান্ত দাস সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন।

খুটাউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র দাস (৯ মে) সোমবার বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা স্যার আমাকে মোবাইল ফোনে বলেছেন প্রাক্ প্রাথমিকের শিক্ষক অসিত দাস আমার বিদ্যালয়ে যোগদান করবে। কিন্তু অসিতকে আমার প্রতিষ্ঠানে যে বদলি করা হয়েছে সে রকম কোন কাগজ আমি পাইনি।’

সৎপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গৌরি রানি চন্দ বলেন, ‘অসিত দাসের বদলি ও রানা কান্ত দাসের যোগদানের কোন কাগজ আমি পাইনি।’

বদলির বিষয়ে জানতে বড়লেখা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অরবিন্দ কর্মকারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনার কোন প্রশ্নের জবাব আমি দিতে পারবো না।’

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম (৯ মে) সোমবার বলেন, ‘আমরা এরকম বদলির কোন নির্দেশ দেইনি। ঘটনাটি আমি শুনেছি। বিষয়টি বড়লেখার স্থানীয় একজন প্রভাবশালী শিক্ষানুরাগী করেছেন এবং তিনি এ বিষয়ে আমার কাছে ফোন করে বাহ্ বাহ্ নিতে চাইছেন। তিনি নাকি এটা ভালো কাজ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত