কুলাউড়া প্রতিনিধি

১২ অক্টোবর, ২০১৬ ২২:৫১

তাজিয়া মিছিল ও মার্সিয়া মাতমে কুলাউড়ায় পবিত্র আশুরা পালিত

সারা দেশের ন্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ির ইমাম বাড়ায় যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের ও তাজিয়া মিছিলের মধ্য দিয়ে ১০ মহররম (১২ অক্টোবর) বুধবার পালিত হলো পবিত্র আশুরা।

এ উপলক্ষে দেশ বিদেশ থেকে আগত শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীদের হায় হুসেন হায় হুসেন মার্সিয়া মাতমে পৃথিমপাশার জমিদার বাড়ি সরব হয়ে ওঠেছিলো।

সারাবিশ্বের মুসলিম উম্মাহ কারবালার প্রান্তরে ঘটে যাওয়া ট্রাজেডি স্মরণে প্রতি বছর মহরম মাসের ১০ তারিখে নানা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যতা আর ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমেই শোকাবহ দিনটি পালন করেন। তবে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানগণ দিনটি স্মরণে ১ মহররম থেকে শুরু করে ১০ মহররম পর্যন্ত মার্সিয়া মাতম, মজলিশ, জারিসহ তাদের বয়ে চলা নিজস্ব ভঙ্গিমায় বেশ ঘটা করেই তা পালন করেন।

এ উপলক্ষে দেশ বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলিম ধর্মাবলম্বিরা ছুটে আসেন পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ির ইমাম বাড়ায়।

স্থানীয়রা জানান, পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ি, তরফি সাহেব বাড়ি ও মনরাজ বাড়িতে ১ মহররম (৩ অক্টোবর) মজলিশ, মিলাদ, মাহফিল ও দোয়ার মাধ্যমেই শুরু হয় পবিত্র আশুরার আনুষ্ঠানিকতা। ৯ মহররম পর্যন্ত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মজলিশ, মার্সিয়া মাতম, জারি, নোওয়া, সাথে চলে রোজা ও নফল নামাজ ইবাদাত বন্দেগি।

১০ মহররম (১২ অক্টোবর বুধবার) তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমেই সমাপ্ত হয় আনুষ্ঠানিক শোক পালনের কার্যক্রম। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ির ইমাম বাড়া থেকে ছোট বড় প্রায় ৪০টি তাজিয়া নিয়ে মিছিল সহকারে রবিরবাজার সংলগ্ন ‘পদ্ম দীঘির’ পাড়ে ‘স্থানীয়দের কাছে কারবালার ময়দান’ নামে পরিচত স্থানে এসে শেষ হয়। সেখানে খঞ্জর ও ছুরি দিয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা নিজেদের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে হায় হুসেন হায় হুসেন মার্সিয়া মাতমের মাধ্যমে কারবালার সেই শোক স্মৃতি স্মরণ করেন। তাজিয়া মিছিল ও শরীরের রক্ত ঝরিয়ে কারবালার ময়দানে ঘটে যাওয়া শোক স্মৃতি স্মরণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও রীতি অনুযায়ী শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা ৪০ দিন পর্যন্ত ইবাদত বন্দেগী চালিয়ে যান।

পৃথিমপাশা ইমাম বাড়ার মোতাওয়াল্লি ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাছ খান জানান, তাদের এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সকল ধর্মের লোকজন একত্রিত হন যাতে করে এক অসাম্প্রদায়িক মুহূর্তের অবতারনা হয়। কোন রকম অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়া তাজিয়া মিছিল ও ছুরি মাতমসহ পবিত্র আশুরার সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জনসাধারণসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা জানান, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওযে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতাধিক সদস্য মাঠে ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত