নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ অক্টোবর, ২০১৭ ১৯:২১

গোলাপগঞ্জে কিশোরীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন নিয়ে সংর্ঘষ: ওসি-মেয়রসহ আহত অর্ধশত

গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ক্যান্সারে আক্রান্ত এক কিশোরীর লাশ দাফন ও কবর থেকে উত্তোলন নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ২টা থেকে ফুলবাড়ি পূর্ব ও উত্তরপাড়া গ্রামের লোকজনের মধ্যে থেমে থেমে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।

এ সংঘর্ষে গোলাপগঞ্জ পৌরসভা মেয়র সিরাজুল জব্বার ও ওসি শিবলী, এসআই আবু তাহের, এসআই শংকর সহ প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছেন। তাছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পক্ষ থেকে ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়।

অপরদিকে সংঘর্ষ চলাকালীন দুপুর ২টা থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রেখেছে স্থানীয় জনতা। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) একেএম ফজলুল হক শিবলী।

সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন যাবত ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত ছিলেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের কালাম মিয়ার মেয়ে ফারজানা বেগম(১৪)। বৃহস্পতিবার সকালে সে মৃত্যুবরণ করে। ঐ দিন যোহরের নামাজের পর তার লাশ দাফন করা হয় ফুলবাড়ির পঞ্চায়েতি কবরস্থান বড় মোকামে। কিন্তু ঐ কবরস্থান নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত বিরোধ চলে আসছে ফুলবাড়ি পূর্বপাড়া ও উত্তর পাড়ার মধ্যে।

সেই বিরোধের জের ধরে দাফনের পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পূর্বপাড়া গ্রামের লোকজন। এ বিষয় নিয়ে জানাজানি হলে উত্তরপাড়ার লোকজন এর কারণ জানতে চান পূর্বপাড়ার কাছে । তখনই পূর্বপাড়া ও উত্তরপাড়ার জামে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শুরু হয় সংঘর্ষ ও উভয়পক্ষ থেকে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ। তাছাড়া সিলেট-জকিগঞ্জ মহাসড়কের উপর টায়ার জ্বালিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় যোগাযোগ।

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গোলাপগঞ্জ পৌরসভা মেয়র সিরাজুল জব্বার। উভয়পক্ষের দাঙ্গা থামাতে গিয়ে ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হন মেয়র। তাছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। তাছাড়া উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যে কোন ধরণের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষনিক আহতদের খবর জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ পৌরসভা মেয়র সিরাজুল জব্বার জানান, তিনি সংঘর্ষের খবর পেয়ে ফুলবাড়ি এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে তিনি ইট-পাটকেলের ছোড়া ঢিলে নাকে আঘাত পেয়ে আহত হন।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম ফজলুল হক শিবলী জানান, লাশ দাফন নিয়ে উপজেলার ফুলবাড়ি পূর্ব ও উত্তরপাড়ার মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আমি নিজে পুলিশের এসআই ও পৌর মেয়র সহ অর্ধশত আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত