নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ অক্টোবর, ২০১৭ ১৭:০১

সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটার দাবি

চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক ৫ শতাংশ কোটার দাবি জানিয়েছে চা শ্রমিকদেরই এশটি সংগঠন। গতকাল শুক্রবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে এ দাবি জানায় তারা। সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র-যুব কল্যাণ পরিষদ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর দুপুরে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের কাছে একই দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র-যুব কল্যাণ পরিষদ।

শুক্রবারের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিলেট বিভাগে ১৫৮টি চা বাগান রয়েছে। এসব চা বাগানের নিরীহ শ্রমিক জনগোষ্ঠী সেই ব্রিটিশ শাসনামল থেকে শোষিত হয়ে আসছে। বাগান কর্তৃপক্ষ মুনাফা অর্জন করলেও শ্রমিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সরকার মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলেও চা বাগানের শ্রমিকরা বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবেই আছে। চা বাগানের শ্রমিকরা ৮৫ টাকা মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে, যা দুই কেজি চাল কেনারও মূল্য নয়, মৌলিক চাহিদা পূরণ তো স্বপ্ন। এই আয়ের বিপরীতে চলে ৪/৫ জন চা শ্রমিকের সংসার।

এ অবস্থায়একজন শ্রমিকের সন্তান কি করে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখতে পারে? প্রশ্ন রেখে মানববন্ধনে চা শ্রমিক নেতারা বলেন, সরকার হয় তো নিজ স্বার্থে আমাদের ভোটাধিকার দিয়েছে, কিন্তু অধিকার দেয়নি। অন্যের জমিতে বসবাসকারী পরাধীন জাতি চা শ্রমিকরা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে নিজ সন্তানদের ভর্তির স্বপ্ন দেখা অবাস্তব।
বক্তারা বলেন, চা বাগানের মালিক সমিতি কখনোই চায় না শ্রমিক সন্তানেরা ন্যূনতম শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। বর্তমানে সভ্য সমাজের ছোঁয়ায় চা শ্রমিকদের সন্তানেরা শিক্ষাক্ষেত্রে কিঞ্চিৎমাত্র এগিয়ে আসছে। বাকিরা সুশিক্ষার অভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে। অথচ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন ধরণের কোটা থাকলেও চা শ্রমিকদের সন্তানরা ভর্তির স্বপ্ন দেখতে পারছে না। পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে শাবিপ্রবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক কোটা পদ্ধতি চালুর দাবি  জানান বক্তারা।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান শামীম। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সিনিয়রসহ-সভাপতি বরুণ সিং ছত্রী।

সংগঠনের সভাপতি দিলিপ রঞ্জন কুর্মী’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুজিত বাড়াইকের সঞ্চালনায় সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কীম, গনসাহিত্য কেন্দ্র সিলেটের সম্বনয়ক আহমেদ সোহেল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কার্যকরী সদস্য নারায়ন কুর্মী, স্বপ্নকুড়ি সমাজকল্যান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বিজয় রুদ্র পাল, দলদলি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মিঠন দাশ, আয়োজক সংগঠনের সহ সভাপতি প্রদীপ দাশ, নারী ও শিশুসম্পাদিকা ঊষারানী দাশ, প্রচার সম্পাদক দেবাশীষ যাদব প্রমূখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত