সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ জুলাই, ২০১৬ ১৬:২৭

মঠের অধ্যক্ষকে কুপিয়ে হত্যা: ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে (৫০) গলা কেটে হত্যা ও মঠের সেবায়েত গোপাল চন্দ্র রায়কে (৩৫) গুলি করে আহত করার ঘটনায় পুলিশ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।
 
গত ২৮ জুন আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি স্থানান্তর করে। অভিযোগপত্রে ১০ জন আসামির মধ্যে ছয়জনকে পলাতক এবং চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যায় অংশ নেয়া আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে, খুব কম সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
 
উল্লেখ্য, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাতটার দিকে মোটরসাইকেল আরোহী কয়েকজন দুর্বৃত্ত পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের করতোয়া নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠে এসে মঠের অধ্যক্ষ যোগেশ্বর রায়কে (৫০) গলা কেটে হত্যা এবং গোপাল চন্দ্র রায় (৩৫) নামে এক সাধুকে গুলি করে এবং ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে অপর পূজারী নির্মল চন্দ্র এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত যজ্ঞেশ্বরের বড় ভাই রবীন্দ্রনাথ রায় ওই দিনই দেবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. আইয়ূব আলীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সাত পৃষ্ঠার কম্পিউটার কম্পোজ করা এ অভিযোগ পত্রে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে। 
 
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার দিন সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে আসামি নজরুল ওরফে হাসান, রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ও শফিউল ইসলাম ওরফে ডন মোটরসাইকেলে করে মঠে আসে। নজরুল মোটরসাইকেলে বসে থাকে। রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ও শফিউল ইসলাম ওরফে ডন মোটরসাইকেল থেকে নেমে মঠের ভিতরে যায়। রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল যজ্ঞেশ্বর রায়কে চাপাতি দিয়ে কোপ মারে এবং দেহ হতে মস্তক দ্বিখণ্ডিত করে হত্যা করা। রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ও শফিউল ইসলাম ওরফে ডন দুজনেই পিস্তল দিয়ে গুলি করে। ককটেল ফাটিয়ে মোটরসাইকেলে করে আবার চলে যায়।
 
আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব ওরফে আন্ধি (২৬) ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী অর্থ ও অস্ত্র যোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 
 
ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যায় অংশ নেয়া তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাটিকে (ডিটেক্ট) এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আইয়ূব আলী বলেন, মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না গেলেও পুরো ঘটনাটিকে খুব কম সময়ের মধ্যে ডিটেক্ট করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ১০ জনের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
 
একই ঘটনায় দেবীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মজিবর রহমান অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। এ দুটি মামলার একই তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আইয়ূব আলী উপরোক্ত ১০জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত