সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৪ এপ্রিল, ২০১৬ ১৪:৩২

‘বন্ধুদেরকেই দূরে সরিয়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ’

মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী ও প্রগতিশীল ঘরানার শিক্ষক, ব্লগার, এক্টিভিস্টদের একের পর এক খুনের ঘটনায় সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেছেন অনেকেই। উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী প্রতিটি ঘটনায় দায় স্বীকার করে বিভিন্ন মাধ্যমে বার্তা দিলেও সরকার প্রধান লেখালেখির কারণে কেউ নিহত হলে দায় না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের এরকম নির্বিকারত্বের কারণে দেশ আজ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই।

কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোনাম এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন:

রাষ্ট্রটিকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যার সামনে অতলান্ত গহ্বর, পেছনে হিংস্র হায়েনার দল। হয় খাদে ঝাঁপ দিয়ে অনিবার্য ধ্বংসকে মেনে নেওয়া, নয় বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে হায়েনার দলকে পরাজিত করে সামনে অগ্রসর হওয়া। কিন্তু যুদ্ধটা করবে কে? সৈন্য কোথায়? সেনাপতিই-বা কোথায়? দেশদ্রোহী যুদ্ধাপরাধী ধর্মান্ধ জামায়াত-শিবিরেকে নির্মূল করতে গিয়ে আরেক দেশদ্রোহী ধর্মান্ধ দল হেফাজতে ইসলামের কাছে মস্তক বন্ধক দিয়ে রেখেছে খোদ আওয়ামী লীগ।

অপরপক্ষে যারা আওয়ামী লীগের বন্ধু, যারা দলটির নৈতিক কর্মকাণ্ডকে তো বটেই, অন্যায় জেনেও রাষ্ট্রের অস্তিত্বের স্বার্থে অনৈতিক কর্মকাণ্ডকেও বিনাপ্রশ্নে সমর্থন দিয়েছে বা দিয়ে যাচ্ছে, যাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের কারণে দলটি অনৈতিকভাবে (গণতন্ত্র যদি রাষ্ট্রীয় নৈতিকতার ভিত্তি হয়) রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকে আছে, তাদেরকেই যোজন যোজন দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। তাদেরকেই শত্রু ভাবছে। তারা বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে, অথচ হন্তারকদের গ্রেপ্তারে কোনো উদ্যোগ তো নিচ্ছেই না সরকার, উল্টো বরং কথিত ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে নিহতদের অভিযুক্ত করে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।

দুই বছর আগেও যারা আওয়ামী লীগের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিল, যারা দলটির বন্ধু ছিল, তারাই এখন দলটির কট্টর সমালোচক। প্রত্যেকেই এখন এন্টি আওয়ামী লীগ। তাদের কেউ এখন আর সরকারের প্রশংসা কিছু করতে পারছে না। করলে তাদের নিন্দিত হতে হচ্ছে, সমাজে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। তবু, প্রদোষ সমাগত, আলো ক্রমে ক্ষীণ হয়ে আসছে জেনেও নীরবে তারা সরকারকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কেননা যে বৃক্ষে তারা বসে আছে সেটিতে ডাল তো একটাই। ওটাতেই তারা বসে আছে। ওটা কেটে ফেললে তো পতন অনিবার্য।

পুনশ্চ : কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রাক্কালে অর্জুন বলেছিল, হে কৃষ্ণ, যুদ্ধে যদি এইসব আত্মীয়বর্গ নিহত হয়, তবে কাকে আমি শাসন করব? কার জন্য এই রাজ্য? সবাই তো নিহত। আমি একা বেঁচে থেকে কী লাভ? কী হবে আমার রাজ্য দিয়ে?

আপনার মন্তব্য

আলোচিত