সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:৩৪

পুলিশের বর্বরতা, ফেসবুকে তোলপাড়

মাটিতে পড়ে চিৎকার করছে একটি পথশিশু। একজন পুলিশ সদস্য তাকে মারধর করছে। আরেকজন পুলিশ সদস্য পাশেই বসে সে দৃশ্য 'উপভোগ' করছে। বাকীরা এ নিয়ে হাসাহাসি করছে।- এমন কিছু ছবি ভাইরাল হয়ে গেছে ফেসবুকে। পুলিশের এই বর্বরতা নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের একাউন্ট থেকে এসব ছবি শেয়ার করে পুলিশের কঠোর সমালোচা করছেন।

জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে ঘট এই ঘৃণ্য ঘটনা। এদিন উদ্যান এলাকায় টহলে ছিলেন পুলিশের ১৩ সদস্য। এদের সিদ্ধান্ত ছিল চন্দ্রিমা উদ্যানের ভেতর কোনো টোকাই শিশুকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কিন্তু জীবিকার তাগিদে এক শিশু ঢুকতে চাইলে পুলিশ তার ওপর চালায় নির্যাতন।

শিশু নির্যাতনের ওই ছবিটি তুলেছেন ফটোগ্রাফার সৈকত মজুমদার। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে ছবিগুলো তার ফেসবুক পাতায় শেয়ার করেছেন।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক পুলিশ সদস্য ওই শিশুটিকে মারধর করছেন। কখনো গলা টিপে ধরছেন, কখনো মুখ চেপে ধরছেন। কখনো জুতাপেটা করছেন। আর শিশুটি কান্নাকাটি করছে। পাশে বসা পুলিশের কয়েকজন হাসাহাসি করছে। হাতে মোবাইল নিয়ে ঘটনাটি দেখছেন হাবিব (নেমপ্লেট সূত্রে) নামে পুলিশের এক সদস্য।

সৈকত মজুমদার জানিয়েছেন, এটি ২১ এপ্রিলের ঘটনা। ওইদিন দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে।



ছবি তোলার সময় সৈকত মজুমদারকে এক পুলিশ সদস্য মারধরের কারণ হিসেবে বলেন, আমরা ১৩ জন পুলিশ সদস্য উদ্যান টোকাইমুক্ত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু টোকাইদের কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে করতে পাগল হয়ে যাচ্ছি। এখন মার-ই এদের একমাত্র ওষুধ।'

ফেসবুকে মারধরের একটি ছবি শেয়ার করে রাজীব রাসেল লিখেছেন- 'একজন নিজের মুখস্থবিদ্যা থেকে মারতে শুরু করে দিয়েছে, আরেকজন গম্ভীর হয়ে ভাবছে আর কোন কোন সৃজনশীল উপায়ে মারা যায়!'

শেরেবাংলা নগর থানার চন্দ্রিমা উদ্যান এলাকা ৪ নম্বর বিটের আওতায়। শিশু নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ডিউটি অফিসার আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমি সিনিয়র হিসেবে চার নম্বর বিট মনিটরিং করি। কিন্তু ওই বিটের ইনচার্জ নাজমুল হুসাইন।’

বিট ইনচার্জ নাজমুল হুসাইন বলেন, ‘থানার কোনো টহল ওইদিন চন্দ্রিমা উদ্যানে ছিল না।’

থানায় হাবিব নামে পুলিশের কোনো কর্মকর্তা আছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ একজন আছেন। তার নাম আহসান হাবিব। তিনি এএসআই।’

এ ব্যাপারে শেরেবাংলা নগর থানার এএসআই আহসান হাবিব বলেন, ‘আমার নেমপ্লেটে হাবিব লেখা থাকে না, আহসান থাকে। ওই হাবিব আমি নই। ওইদিন চন্দ্রিমা উদ্যানে আমাদের কোনো ডিউটি ছিল না। তবে আগারগাঁও পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মাঝে মাঝে চন্দ্রিমা উদ্যানে টহল দেওয়া হয়। ওই ফাঁড়িতে হাবিব নামে কেউ আছে কি না জানি না।’

আগারগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিআই নূরুজ্জামান বলেন, ‘আমার ফাঁড়িতে হাবিব নামে কেউ নেই। মাঝে মাঝে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকেও পুলিশ আসে। অনেক সময় তারা গণভবন এলাকায় ডিউটি করে। এখন সংসদ চলছে, ওখানেই পুলিশ আছে।’

তবে কে শিশু নির্যাতন করেছে তা জানা নেই বলে জানান নূরুজ্জামান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত