সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৭ মে, ২০১৬ ২১:৩৮

ফেসবুক জুড়ে ‘সরি স্যার’

ছাত্র-শিক্ষক শ্রদ্ধার, ভালোবাসার। স্নেহাশিস ছাত্রের জন্য যেমন করে শিক্ষকের আবেগ থাকে। শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকের অবমাননা তেমনি প্রকৃত ছাত্রের পক্ষে সহ্য করা কঠিন।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠবস  করিয়ে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে সরব হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ।
আরও পড়ুন- শাবিতে ‘কান ধরে’ শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে শিক্ষক শ্যামল কান্তির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পোস্ট। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ নিজেরা কান ধরে ছবি তোলে এই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইছেন।

ব্যতিক্রমী এই প্রতিবাদের মাধ্যমে দায়ি সাংসদ সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন- সেই ছাত্রই বলছে, ‘স্যার ধর্ম নিয়ে কোন কটূক্তি করেননি’


অভিনেতা ইরিশ জাকের তাঁর ফেসবুকে নিজের কান ধরে উঠবস করার ছবি পোস্ট করে শ্যামল কান্তির কাছে ক্ষমা চান। একই রকমের পোস্ট করেন আরেক অভিনেতা রওনক হাসান।

এমন প্রতিবাদময় ছবি ফেসবুকে দিতে দেখা গেছে অসংখ্য মানুষকে।  শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবশ্য কেবল ফেসবুকে নয়। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের লাইব্রেরী হলের সামনে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে আধাঘন্টা কান ধরে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষকের গ্লানির ভাগ নেন।

শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও।  

গত ১৩ মে বিকেলে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ রটিয়ে  নারায়ণগঞ্জের  কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যান্দি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে সবার সামনে কান ধরে উঠবস করিয়ে ক্ষমা চাওয়ান স্থানীয় সংসদ ও জাতীয় পার্টি নেতা সেলিম ওসমান। সেলিম ওসমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শ্যামল কান্তি ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করায় এলাকাবাসীর রোষ থেকে তাকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ভিডিওতে দেখা যায় সাংসদ সেলিম ওসমান নিজেই শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করে শাস্তি দিচ্ছিলেন। যে ছাত্রের বরাত দিয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লাঞ্ছিত করা হল দশম শ্রেণী পড়ুয়া সেই ছাত্র রিফাত বলছে প্রধান শিক্ষক তাকে মারধোরের সময় ধর্ম নিয়ে কোন কটূক্তি করেননি।

এদিকে  লাঞ্ছিত করার সমালোচনার মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় কোন ফৌজদারি অপরাধ খুঁজে না পাওয়ার কথা জানানো হয় তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনা বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে শাস্তিযোগ্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত