সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৬ জুলাই, ২০১৬ ১৫:৫৩

তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান ‘সফল’, ‘মিডিয়া ক্যু’ চলছে!

তুরস্কে ক্ষমতাসীন সরকারকে হটাতে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টার পর বিশ্বমিডিয়া কি এখন মিডিয়া ক্যু চালাচ্ছে এমনটাই প্রশ্ন উঠেছে। রাতে অভিযানের পর পরই আন্তর্জাতিক মিডিয়া সেনাবাহিনী দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এমন সংবাদ প্রকাশের পর আমেরিকার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পক্ষ থাকার ঘোষণার পর মিডিয়ার ভাষা বদলে গেল বলে ইঙ্গিত করেছেন অনলাইন এক্টিভিস্ট দেবজ্যোতি দেবু।

এ সম্পর্কে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, রাতে সেনা অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক সব মিডিয়া ফলাও করে প্রকাশ করল সেনাবাহিনী সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিছে। আবার রাত শেষে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের গোপন স্থানে পাঠানো বার্তার বরাত দিয়ে সেসব মিডিয়া বলতে শুরু করল সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও লিখেছেন, এরদোয়ান গোপন স্থান থেকে বার্তা দিছে, তুরস্কের সরকার সফল হলে গোপন স্থান থেকে বার্তা দেবে কেন? তুরস্ক এরদোয়ানের সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে তার ত প্রকাশ্যেই এ দাবি জানানোর কথাই ছিল!

দেবু লিখেন,

তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া কি কিছু লুকাতে চাইছে?

রাতে সেনা অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক সব মিডিয়া ফলাও করে প্রকাশ করলো সেনাবাহিনী সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আবার রাত শেষে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের গোপন স্থানে পাঠানো বার্তার বরাত দিয়ে সেসব মিডিয়া বলতে শুরু করল সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ।

কেন এমন হলো? উত্তর খুঁজুন!

বড় উত্তর হচ্ছে আমেরিকা এখন চায় এরদোয়ান ক্ষমতায় থাকুক। বারাক ওবামা এরদোয়ানের পক্ষ নিয়ে বিবৃতির পর পরই মিডিয়ার ভাষা কি বদলে গেল?

এরদোয়ান গোপন স্থান থেকে বার্তা দিয়েছে। তুরস্কের সরকার সফল হলে গোপন স্থান থেকে বার্তা দেবে কেন? তুরস্ক এরদোয়ানের সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে তারতো প্রকাশ্যেই এ দাবি জানানোর কথাই ছিল!

মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে 'জনতার প্রতিরোধ' এর কথা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সরকার বনাম সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে সাধারণ জনতা আসলো কিভাবে? আসলোই যদি তাহলেতো সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক এবং আধুনিক অস্ত্রের সামনে সাধারণ জনতার হাজারখানেক লাশ পড়ার কথা। সেনাবাহিনী কেন তাদের হত্যা না করেই আত্মসমর্পণ করে দিবে? বিষয়টা কি সন্দেহজনক না?

গোপন সংবাদ, তুরস্ক সেনাদের দখলে। তাহলে মিডিয়াতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে কেন?

তুরস্কের সেনা ক্যু'র পালটা কি বিশ্বব্যাপী মিডিয়া ক্যু চলছে?


এদিকে, তুরস্কে বাংলাদেশের যমুনা টিভির বরাত দিয়ে শুভ চক্রবর্তী ফেসবুকে প্রশ্ন রেখে লিখেন,  তুরস্কের ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করছে আমেরিকার মদদপুষ্ট সিএনএন এবং কিছু আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেল।

তিনি জানান, সত্যটা হচ্ছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা সম্পূর্ণ বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এবং ইস্তাম্বুলে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সমর্থক পুলিশ আর সেনাবাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের তীব্র সংঘর্ষ চলছে। অর্থাৎ, সামরিক অভ্যুত্থান এখন পর্যন্ত সফল।

শুভ চক্রবর্তী লিখেন-

তুরস্কের ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করছে আমেরিকার মদদপুষ্ট সিএনএন এবং কিছু আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেল। সত্যটা হচ্ছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা সম্পূর্ণ বিদ্রোহী সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এবং ইস্তাম্বুলে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সমর্থক পুলিশ আর সেনাবাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের তীব্র সংঘর্ষ চলছে। অর্থাৎ, সামরিক অভ্যুত্থান এখন পর্যন্ত সফল।

এরদোগান যেসব বক্তব্য আর বিবৃতি দিচ্ছে তা সবই গোপন স্থান থেকে। আমি এরদোগানের পতন দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
(সূত্র: তুরস্কে অবস্থানরত যমুনা টিভির প্রতিনিধি)

উল্লেখ্য, তুরস্কের আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে গতকাল শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর একাংশ ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান নিয়ে অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে রাতভর সংঘর্ষ চলে। এ সময় বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অভ্যুত্থানকারীদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৬০ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত