সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৬ জুলাই, ২০১৬ ১৮:০৭

পরিবেশ ও নদী আন্দোলনের কর্মীদের ছাড়াই নদী উৎসব!

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে চলছে দুদিনব্যাপী নদী উৎসব। এতে নদী সুরক্ষার দাবি ওঠেছে। বাংলাদেশ থেকে এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন ৪৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তবে এই দলে কোনো পরিবেশ বা নদী অধিকার কর্মী নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম।  

শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে কিম লিখেন-

শিলং-এ দুইদিন ব্যাপি 'নদী উৎসব' হচ্ছে । সে উৎসবে বাংলাদেশের দুই মন্ত্রী সহ প্রায় ৪৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে । এই প্রতিনিধি দলে সরকারের কর্তা ব্যাক্তিদের বাইরে বেসরকারী প্রতিনিধিদের মধ্যে অধিকাংশই নৃত্যশিল্পী, সঙ্গিত শিল্পী ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি। দেশে যারা নদ-নদী রক্ষায় অহর্নিশ লড়াই করে যাচ্ছেন তেমন কারো নাম প্রতিনিধি দলে দেখেছি বলে মনে হল না ।

প্রথম আলো'র যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান-এর এ লেখা পড়ে এ উৎসব সম্পর্কে যতটুকু ধারনা পেলাম তা হল- এ নদী উৎসব ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বিশাল বেসরকারী নাগরিক আয়োজন । যেখানে এ অঞ্চলের নদ-নদীর অবস্থা তুলে ধরে আওয়াজ উঠেছে "নদী বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও।"
ভারতের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ আয়োজনকে বলা হয়েছিল "নদী উৎসব" । যদিও উৎসবে নদী বাঁচানো ও মানুষ বাঁচানোর কথাই মূল সুর হয়েছে, জানালেন সোহরাব হাসান ।

নদী নিয়ে ভারত উৎসব করবে, এটাই স্বাভাবিক । আমাদের প্রতিটি নদীর উজানে বাঁধ-ড্যাম তৈরি করে ভারত আমাদের পানিশূন্য করছে। সুরমা নদীর উজানে টিপাইমুখ বাঁধ ও ফুলেরতল ব্যারেজ নির্মাণ প্রকল্প বাতিল হয় নাই । সারী, ধলাই, খোয়াই, জাদুকাটা, মনু সব নদীকে নিয়ন্ত্রন করছে ভারত । তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ভিন্ন পথে প্রবাহিত করে দক্ষিন ভারতে নেয়া হবে । এমন বাস্তবতায় শিলং-এ আয়োজিত 'নদী উৎসব'-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের পক্ষ্য থেকে আমাদের দুর্দশার চিত্র কী যথাযথ ভাবে তুলে ধরা হয়েছে ? বেসরকারি উৎসবে সরকারের পক্ষ্য থেকে অংশ নেয়া মন্ত্রীরা কাজের কাজ কিছু বলবেন বলে আশা করি না । নাগরিক আয়োজনে নাগরিকদের কথাই গুরুত্বপূর্ণ । আর এ জাতীয় উৎসব বা সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক আলোচনার থেকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাই বেশি প্রভাব বিস্তার করে।

উৎসবে অংশ নেয়া উত্তর-পূর্ব ভারতের নদী আন্দোলনের কর্মী, পরিবেশকর্মীদের সাথে মেলবন্ধন হলে তা ভবিষ্যতে নদীরক্ষার লড়াইয়ে প্রভাব রাখবে । ভারত সরকারের মানবতাবিরোধী নদী নিয়ন্ত্রন প্রতিরোধ করতে হলে সেখানকার পরিবেশকর্মী ও নদী আন্দোলনের সংগঠকদের সাথে মতবিনিময় জরুরী। এ জাতীয় উৎসব সেই সুযোগ তৈরি করে দেয় । বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে সিলেট থেকে যাওয়া পরিবেশকর্মী ও নদীকর্মীরা সে কাজ করবেন বলে আশা করি । যদিও আমার চেনাজানা কোন পরিবেশকর্মী বা নদী আন্দোলনের কর্মী শিলং উৎসবে যোগ দিয়েছেন বলে শুনিনি ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত