সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৯ জুলাই, ২০১৬ ০০:১১

মহাশ্বেতা দেবীর দেখানো পথে মেয়েরা নিজের সেই ভুবন খুঁজে নিক!

বৃহস্পতিবার ৯০ বছর বয়সে জীবনাবসান হয়েছে  উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবীর। প্রচলিত সংসার ধর্মের বাধা না পড়ে যিনি গড়ে তোলেছিলেন তাঁর স্বকীয় ভুবন। সৃষ্টি করে গেছেন কালজয়ী সব সাহিত্যকর্ম।

বাংলাদেশের ঢাকায় জন্ম নেয়া প্রখ্যাত এই সাহিত্যিকের প্রয়াণের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে স্মরণ করছেন অনেকে।

প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মী কাজল দাশ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, "বিয়ের পরে এই নারী একমাত্র পুত্র নবারুণকে ছেড়ে চলে আসেন। স্বামীকে ফেলে ও চলে আসেন। কারণ তিনি লেখক হতে চান। তিনি আর কোনদিন পরিবার বা সাজানো সংসারে ফিরে যাননি। তিনি কোথায় যাননি কিন্তু হয়ে উঠেছিলেন এক সমাজ। যে সমাজ একজন মেয়ে আজো চায়। সেই জায়গা স্বাধীনতার। স্বাধীনতা মানে পরিপূর্ণ স্বাধীনতা যেখানে প্রতিটি মেয়ে পৌঁছাতে চায়"


কাজলের পোস্টের বিস্তারিত:

দেহ নয়, আগুনের পাটাতনে এক মহাজীবন রাখলেন মহাশ্বেতা দেবী। 'হাজার চুরাশির মা' খ্যাত মহাশ্বেতা দেবী বিখ্যাত কবি মনীশ ঘটকের মেয়ে। ত্যাজী আর জেদী পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের ভাতিজি। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন আরেক গ্রেট নাটক 'নবান্ন' খ্যাত নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যের স্ত্রী। তাঁদের একমাত্র পুত্র আরেক গ্রেট, তিনি 'এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না'' কবিতা ও উপন্যাস 'হার্বার্ট' খ্যাত লেখক নবারুণ ভট্টাচার্যের মা। এতো কিছুই মহাশ্বেতার আসল পরিচয় না, তাঁর আসল পরিচয় হল, বিয়ের পরে এই নারী একমাত্র পুত্র নবারুনকে ছেড়ে চলে আসেন। স্বামীকে ফেলে ও চলে আসেন। কারণ তিনি লেখক হতে চান। তিনি আর কোনদিন পরিবার বা সাজানো সংসারে ফিরে যাননি। তিনি কোথায় যাননি কিন্তু হয়ে উঠেছিলেন এক সমাজ। যে সমাজ একজন মেয়ে আজো চায়। সেই জায়গা স্বাধীনতার। স্বাধীনতা মানে পরিপূর্ণ স্বাধীনতা যেখানে প্রতিটি মেয়ে পৌঁছাতে চায়। যেখানে প্রতিটি মেয়ে নিজের জন্য একটি রুম চায়, যাকে ভার্জিনিয়া ওলফ বলেছিলেন ''এ্য রুমস অফ ওয়ান্স ঔন" ।

মহাশ্বেতা দেবী, আপনার দেখানো পথ এগিয়ে যাক। মেয়েরা নিজের সেই রুম খুঁজে নেক। শ্রদ্ধা ও ভালবাসা আপনাকে।

 

মহাশ্বেতা দেবী ১৯২৬ সালে অবিভক্ত ভারতবর্ষের পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর লেখা অনেক উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ, বাংলাবিভূষণ, র‍্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার ইত্যাদি।

১৯৭৯ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। অরণ্যের অধিকার উপন্যাসের জন্য পুরস্কার পান তিনি।

পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ, জ্ঞানপীঠ-সহ একাধিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। বঙ্গবিভূষণ সম্মানেও সম্মানিত করা হয় তাঁকে।

তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে  অরণ্যের অধিকার,  হাজার চুরাশীর মা, হাজার চুরাশীর মা,অগ্নিগর্ভ, অগ্নিগর্ভ, রুদালী,  উনত্রিশ নম্বর ধারার আসামী, প্রস্থানপর্ব, ব্যাধখন্ড, ৬ই ডিসেম্বরের পর, নীলছবি (১৯৮৬, অধুনা, ঢাকা), গণেশ মহিমা ইত্যাদি

আপনার মন্তব্য

আলোচিত