সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৬ আগস্ট, ২০১৬ ১১:২৬

‘বঙ্গবন্ধুর খুনি আজিজ পাশা ব্যারিস্টার ইমনের মামা নয়, এ মিথ্যাচার’

'সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন বঙ্গবন্ধুর খুনের ঘটনার চার্জশিটভুক্ত আসামি লে. কর্ণেল আজিজ পাশার ভাগ্নে'- সোমবার বিভিন্ন অনলাইন সংবাদপত্রে এমন খবর প্রকাশিত হয়। সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল হুদা মুকটের বরাত দিয়ে এ খবর প্রচার করে মিডিয়া।

তবে এমন খবরকে মিথ্যাচার বলে দাবি করেছেন জগন্নাথপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তাদির আহমদ মুক্তা। বঙ্গবন্ধুর খুনি লে. কর্ণেল আজিজ পাশা ও ব্যারিস্টার ইমনের মামা মেজর আব্দুল মুকিত চৌধুরী(পাশা) একই ব্যক্তি নন বলে ফেসবুকে এক লেখায় দাবি করেন মুক্তা।

ফেসবুকে মুক্তাদির আহমদ মুক্তা লেখেন-

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এবং একটি অনলাইন পত্রিকার ফেইসবুক শেয়ারিং এর মাধ্যমে জানতে পারলাম বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামী নাকি আমাদের জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর গ্রামের এবং তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন এর মামা। এই তথ্যটি জেনে দেশে বিদেশে ঐতিহ্যবাহী কুবাজপুর গ্রামের অনেক আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে খুবই মর্মাহত হলাম।

কিভাবে শুধু রাজনৈতিক আক্রোশের কারণে শেষ বয়সে একজন ধার্মিক, সজ্জন, সম্ভ্রান্ত মানুষকে রাজনীতির ধারে কাছে যার নূন্যতম সংযোগ নেই তাঁর সম্পর্কে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত নিম্ন রুচির গর্হিত কাজ বলে মনে করি। এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণায় আমরা জগন্নাথপুরের মানুষ অপমানিত বোধ করছি। আমাদের এলাকার একজন কৃতি সন্তানকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘাতক আখ্যা দিয়ে মিথ্যা প্রচারনায় আমরা মারাত্বকভাবে আহত। একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা তাঁর বর্নাঢ্য কর্মজীবন সুনামের সঙ্গে পালন করে যখন ভাগ্নার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের আক্রোশের জের হিসেবে নিজে সামাজিকভাবে মিথ্যা রটনার শিকার হন। তখন স্বাভাবিক প্রশ্ন জাগে আমরা কোন আদিম, বন্য, হিংস্র সমাজে বাস করছি।

লে . ক. আজিজ পাশা বঙ্গবন্ধুর একজন চিহ্নিত খুনী। যিনি জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন বলে বহু বছর আগেই পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অথচ আজকে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় দেখলাম এই আজিজ পাশা নাকি ব্যারিস্টার ইমনের মামা। এটা একটি জঘন্য মিথ্যাচার। শুধু কি ব্যরিস্টার ইমনের মামা হওয়ার কারণে মেজর আব্দুল মুকিত চৌধুরী(পাশা) কে এমন নির্মমতার শিকার হতে হলো? ধিক এমন সাংবাদিকতার, ধিক এমন রাজনীতির। একজন জীবিত ব্যাক্তিকে মৃত বানিয়ে ঘৃণ্য পরিচয়ে পরিচিতি দেওয়া কোনো বিবেকবান,সুস্থ মানুষের পক্ষে কি সম্ভব। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ তাঁর নিজ জন্মস্থান জগন্নাথপুরে একজন বঙ্গবন্ধুর খুনীকে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচারের জন্য দীর্ঘ একুশ বৎসর আন্দোলন করবেন, আর একবারও এই লোকটির পরিচয় জাতিকে জানাবেন না এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা কে?কোথায়? এর সঠিক তথ্য যাদের কাছে নেই তারা কি করে নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর অনুরাগী ভাবে এ প্রশ্ন আজ সকলের কাছে? লে.ক. আজিজ পাশাকে জগন্নাথপুরের মানুষ হিসাবে পরিচয় দেওয়াই আমাদের জন্য কলংকের বিষয়। কেনো এমন কালিমা লেপনের অপচেষ্টা? মেজর আব্দুল মুকিত চৌধুরী বাংলাদেশের পোস্ট মাস্টার জেনারেলসহ অনেক জাতীয় প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে চাকুরী করেছেন এবং বর্তমানে ঢাকায় অবসর জীবনযাপন করছেন। শুধু তাই নয় মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে তাঁর পরিবার গোটা উপজেলায় সমাদৃত ও সম্মানিত। মেজর মুকিত চৌধুরীর দুই বোন জামাইর দুজনই মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। দুজনই আমার জগন্নাথপুর উপজেলার কৃতি সন্তান। একজন মরহুম আব্দুল হান্নান চৌধুরী যিনি মুজিবনগর সরকারের আইন সচিব, পরে জেলা জজ এবং অপরজন মরহুম আব্দুর রইছ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরেও দীর্ঘদিন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

আজ ব্যারিস্টার ইমনের মামা হিসেবে পরিচয় দিয়ে একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক কে যেভাবে নোংরা রাজনৈতিক খেলায় অপদস্ত করা হচ্ছে তা কতটুকু মানবিকতাপূর্ণ। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি তাঁর পিতার হত্যাকারীদের সম্পর্কে খোঁজ খবর না নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্যানেল আইনজীবি হিসেবে ব্যারিস্টার ইমন কে মামলা পরিচালনায় অংশ নেওয়ার সূযোগ দিয়েছিলেন? লজ্জা লাগে, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সম্পর্কে যারা সঠিক ধারণা রাখে না তারাই বঙ্গবন্ধুর জন্য মায়াকান্না করে বঙ্গবন্ধুর প্রেমিক সাজে। বঙ্গবন্ধু কন্যার বন্দনা করে ফায়দা লুটে। এ ধরনের ঠুনকো আদর্শ ব্যবসায়ীদের ঘৃণা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।

দুঃখিত মেজর(অবঃ)আব্দুল মুকিত চৌধুরী। আপনার মনোবেদনার সঙ্গে রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন তথা গোটা জগন্নাথপুর উপজেলার মানুষ আজ মর্মাহত। জগন্নাথপুরের পবিত্র মাটি বঙ্গবন্ধুর খুনীর ঘাঁটি হতে পারে না।আপনি ধৈর্য ধরুন। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। জয় বাংলা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত