সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২১ আগস্ট, ২০১৬ ০২:২১

শেখ হাসিনাকে হত্যা করে খালেদাকে দায় দিয়ে ক্ষমতা দখলের প্লান ছিল তারেকের!

মানবঢাল তৈরি করে এভাবেই সেদিন শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন আওয়ামীলীগ নেতারা

রক্তাক্ত, ভয়াল ২১ আগস্ট আজ। এক যুগ আগে ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় এই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় মানবঢাল  তৈরি করে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন।

সেসময় দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকে কাজ করতেন সাংবাদিক ফজলুল বারী। এই ঘটনা নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও করেছিলেন তিনি। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা প্রবাসী এই সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলে ধরেছেন ওই সময়কার কথা, যা তৎকালীন বিরুদ্ধ সময়ে খোলাসা করে প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।


বারী লিখেছেন:

একুশ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে হত্যার মূল নকশাটি জামায়াতের এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর। তারেককে সংগে নিয়ে তারেকের উপস্থিতিতে এর চূড়ান্ত নকশাটি হয়। এ নিয়ে মুফতি হান্নানের সংগে হাওয়া ভবনে তারেকের বৈঠকে তার নিয়োগকৃত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলো। তবে সবকিছুর নেপথ্যে ছিল জামায়াতে ইসলামী। তাজুলের মাধ্যমে হামলার গ্রেনেড সহ অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দেয় আইএসআই। পরিকল্পনা সাজিয়ে কক্সবাজার চলে যায় তারেক। ২১-২২-২৩ আগস্ট এই তিনদিন সে কক্সবাজারে ছিল। তখন প্রতিদিনের পত্রিকায় তারেকের নানা রিপোর্ট থাকতো। এই তিন দিন তার কোন রিপোর্ট ছিলোনা মিডিয়ায়।

আমি যতোটা জানি এই হত্যা পরিকল্পনার কথা খালেদা জিয়া ঘটনার আগে জানতেন না। পরিকল্পনাটি ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার পর এর দায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় বসবে তারেক! সংসদীয় ব্যবস্থা পাল্টে তার নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার পুন:প্রবর্তন করা হবে! খালেদার পর বিএনপির সরকার প্রধান এমনিতে তারেকের হবার কথা। কিন্তু অতদিন অপেক্ষার তর তার সইছিলনা। পুরো বিষয়টি ছিল রানীকে ক্ষমতাচ্যুত করে রাজপুত্রের সিংহাসন দখলের নকশা-ষড়যন্ত্রের মতো। কিন্তু মেয়র মোহাম্মদ হানিফ সহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐতিহাসিক ভূমিকায় মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলার মুখেও প্রাণ রক্ষা পায় তৎকালীন বিরোধীদলের নেত্রী শেখ হাসিনার।

আমার বিএনপির সূত্রগুলো তখন বলেছে ঘটনার পর মূল নকশাটি জেনে ভয় পেয়ে যান খালেদা জিয়া। তিনি শেখ হাসিনাকে দেখতে যেতে চান। কিন্তু সুধা সদন থেকে সায় না মেলায় পরে সে পরিকল্পনা বাদ দিয়ে সিএমএইচে আইভি রহমানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাকে সেখানে দেখতে যান। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দেবার পর ছেলেকে রক্ষার উদ্যোগ নেন মা। তখন জনকণ্ঠে নেপথ্যের এই ঘটনাগুলো আমি লিখেছিলাম। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার কারনে তখন এভাবে সুনির্দিষ্ট নাম ধরে ধরে লেখা সম্ভব ছিলোনা। রাজা-রানী, রাজ সিংহাসন' এসব প্রতীকী শব্দের লিখতে হয়েছিল।

যেহেতু ঘটনার সংগে তারেক, বাবর, জামায়াত নেতারা জড়িত সে কারণে তদন্তের নামে সাজানো হয় জজ মিয়া নাটক! যা পরে ফাঁস হয় ওয়ান ইলেভেনের সরকারের আমলে। জজ মিয়া নাটক ফাঁস করতে প্রথম আলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যা ষড়যন্ত্রের রহস্য উন্মোচনে সেরা অনুসন্ধানী রিপোর্টগুলো করেন প্রথম আলোর টিপু সুলতান। ফেনীতে থাকতে যাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন দাপুটে নেতা জয়নাল হাজারী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত