সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২২ মার্চ, ২০১৬ ১৭:২৩

‘বাবা চিৎকার করে বললেন- মা, মা, মারে আমার’

কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে (১৯) ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

রোববার রাতে (২০ মার্চ) ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছ থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এই হত্যার ঘটনায় ভিক্টোরিয়া কলেজ ও কুমিল্লা শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গন ক্ষোভে উত্তাল হয়ে আছে।

পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে তনুর হত্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রাক্তন ছাত্র সৈকত ভৌমিক।

মাকে বলে গিয়েছিলো " মা টেইলারের কাছ থেকে আমার নতুন জামাটা আজ নিয়ে আইসো, আমি কাল নতুন জামা পরে কলেজ যাবো।’' সেই কাল আর আসলো না ওর জীবনে।

বাবা মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে দেখে তার মেয়ের মাথার চুল পড়ে আছে , তার একটু সামনেই পড়ে আছে জুতা, তার একটু দূরে মোবাইলটা, আর একটু দূরে তনুর লাশ। বাবা চিৎকার করে বললেন মা, মা, মা, মা আমার।’

যে কলেজে পড়েছি সেই কলেজেরই ভিসিটির (ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার) এক অনুজের কাছ থেকে তনুর পুরো ব্যাপারটা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।

ওর কিছু ছবি আপলোড করা দেখেছিলাম ২০শে মার্চ শ্রীমঙ্গল গিয়ে তোলা কিছু ছবি । আমার সাথে তার কিছুদিন আগে ফেসবুকে কথা হয়েছিলো আবৃত্তি সংসদের ব্যাপারে। সেই তনুর এমন মৃত্যু মেনে নেয়া আসলেই কষ্টকর। তনুর ছবির সাথে তনুর লাশের এমন ছবিও দেখতে হবে কখনো ভাবিনি।


তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ময়নামতি সেনানিবাস এলাকায় অলিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। পরিবার আর্থিক ভাবে তেমন সচ্ছল ছিলো না ,তা সে নিজেই টিউশনি করে খরচ যোগাতো নিজের পড়াশোনার । সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে নাটক, নৃত্য ও আবৃত্তি তে জড়িত ছিলো সে। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সে ছিল একজন নিয়মিত সদস্য। আর তার সাথেই কিনা ঘটে গেলো এমন দুঃখজনক এক ঘটনা ।

তনুর পরিবার মামলা করেছে কিন্তু পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে মিডিয়া থেকে দূরে রাখা হচ্ছে।

বিচারহীনতার সংস্কৃতির এই দেশে বিচার তো আমরা সকল সময়েই চেয়ে থাকি তবু বিচার পাই না আর সেইখানে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে এমন ঘটনার বিচার কতটুকু হবে তা আসলেই দেখার বিষয়। সেনানিবাসের মতো সুরক্ষিত এলাকায় একটা মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে যেখানে সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়।তবুও আশা করি তনু হত্যাকাণ্ডের সকলকে গ্রেফতার করে সর্ব্বোচ্চ শাস্তির দেয়া হবে।

বিঃদ্রঃ- ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক বর্তমান সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের সম্মিলিত আওয়াজ হয়তো একটি পরিবারকে ন্যায্য বিচার পেতে সাহায্য করতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত