জুয়েল রাজ, লন্ডন

২৭ মার্চ, ২০২২ ০৯:৫২

একাত্তরের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান

বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল)-এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ গণহত্যা দিবসের ৫১তম বার্ষিকীতে আয়োজিত এক স্মারক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মাটিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্বারা সংঘটিত ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানালেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম।

তিনি বলেন, “১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান স্যার পিটার শোর এমপি পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরবর্তীতে ২৩৩ জনেরও বেশি ব্রিটিশ ক্রস-পার্টি সদস্য পূর্ব বাংলায় গণহত্যার অবসান এবং বাংলাদেশের স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়ে আরেকটি প্রস্তাব আনেন।”

হাইকমিশনার ৫১ বছর আগে সংঘটিত বাঙালি গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নতুন করে আরেকটি প্রস্তাব গ্রহণের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টেরিয়ানদের প্রতি আহবান জানান এবং ব্রিটিশ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণহত্যা জার্নালে বাঙালি গণহত্যার ওপর প্রকাশনা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্রিটিশ পার্লামেন্টারিয়ান ও গবেষকদের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

২৫ মার্চকে বাংলাদেশের গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হাইকমিশনার বলেন, “এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ব্যাপারে বৈশ্বিক সচেতনতা তৈরি করা।”

কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাজ্যের হাউস অফ লর্ডসের সদস্য রামি রেঞ্জার অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য তাঁর অব্যাহত সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে যুক্তরাজ্যে এই গণহত্যার একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করার আহবান জানান।

যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার গাইত্রী ইসার কুমার, টেক্সাস এ এন্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের লিবারেল স্টাডিজ বিভাগের প্রধান প্রফেসর জোয়ান ডিজেওর্জ-লুৎজ, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা গবেষণা উদ্যোগ বাংলাদেশের পরিচালক, অধ্যাপক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, লন্ডনে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা দূতাবাসের প্রতিনিধি জেসমিনা সারাজলিচ এবং ইউসিএল-এর রিসার্চ ফেলো বায়েস আহমেদ অনুষ্ঠানে অন্যতম প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চ-এর গণহত্যার একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এই ভার্চূয়াল অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, শিক্ষাবিদসহ যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি যোগ দিয়ে জাতির পিতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত