সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ০৯:৫৪

কানাডার ভিএজিবির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত

ভিএজিবির উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন উপলক্ষে কানাডার মন্ট্রিয়লে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ।

বিশ্বের নানা প্রান্তের রাজনীতিক, লেখক, গবেষক, সামাজিক-সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল, রাজনীতিক গোলাম মোতাহের মিয়া, লেখক ও সংস্কৃতিককর্মী আবিদ ফয়সাল, ডাক্তার সুধেন্দু বিকাশ দাস, রিপন চন্দ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু; এগারো শত মাইল দূরের কারাগারে অবস্থান আর তাঁর নামের উপর ভিত্তি করে একটি দেশ স্বাধীন হওয়া এমন ঘটনা বিশ্বে বিরল। তাঁর মুক্তি ও দেশের স্বাধীনতা লাভের পেছনে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধির বিশ্ব জনমত সৃষ্টি ও আন্তরিক পূর্ণ অবদান অনস্বীকার্য ও চিরস্মরণীয় ।

বক্তব‍্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ৭৩-সালের সাংসদ মাফিজুল ইসলাম খান কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক উপাচার্য প্রফেসর সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন, লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক তাজুল মোহাম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নরুল আমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ বাতেন, যুবনেতা ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ জাহিদ হোসেন, ব‍্যারিস্টার তৌহিদুল ইসলাম বাহার, বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী আনোয়ার হোসেন, সংগঠনের সদস‍্য-সচিব হামোম প্রমোদ সিনহা, যুবনেতা ও সাংস্কৃতিক কর্মী সুশান্ত দাস প্রমুখ।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের বিভিন্ন দিক ও সমসাময়িক আলোচনা করতে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিমানে করে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাকে মিয়ানওয়ালির কারাগারে সরিয়ে আনা হয়। ফাঁসির আসামিদের জন্য নির্ধারিত সেলে তাঁকে থাকতে দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাঁকে সেখানে ও পাঞ্জাবের উত্তরে লায়ালপুর ও শাহিওয়ালের দুটি কারাগারে কাটাতে হয়। এ সময় পাকিস্তান সামরিক সরকার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ‘বিচার’ শুরু করে। অভিযোগে ‘মৃত্যুদণ্ড’ রায় করা হয়। কারাগারের বাহিরে কবর খোঁড়াও হয়।

তারা আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান থেকে ছাড়া হয় ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন পিআইএ’র একটি বিশেষ ফ্লাইটে বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। অতঃপর কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দীন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি স্বাধীন দেশের পথে যাত্রা করেন। ১০ জানুয়ারি সকালে দিল্লিতে ভারতের প্রেসিডেন্ট ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা শেষকরে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান নিজ মাতৃভূমিতে প্রত‍্যাবর্তন করেন।

সভাপতি শাহ মোস্তাইন বিল্লাহ প্রত‍্যাবর্তন দিবসের প্রত‍্যয় ও ঐতিহাসিক দিক ব্যক্ত করে ৭২-এর সংবিধান ও রাষ্ট্রের চার মূলনীতি, পাকিপ্রাণ প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি বন্ধকরণ, দুর্নীতি, সংঘাত, সন্ত্রাস ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে উবে দিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যের আহ্বান করে সভা সমাপ্ত করেন।

উল্লেখ‍্য ভিএজিবি (ভয়েস ফর একাউন্ট্যাবিলিটি এন্ড গুডগভার্নেন্স ইন বাংলাদেশ) ২০১১ সালে র জুন মাসে কানাডার মন্ট্রিয়ল প্রতিষ্ঠিত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত