সাব্বির খান, সুইডেন থেকে

১৫ মার্চ, ২০১৬ ২৩:০৬

সুইডেন আ.লীগের সম্মেলন পণ্ড, সর্বইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে প্রায় দীর্ঘ এক যুগের প্রতীক্ষিত সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়।

গত ১৩ মার্চ সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে অনুষ্ঠিত সুইডেন আওয়ামী লীগের গোলাম আম্বিয়া ঝন্টুর সভাপতিত্বে এবং জাহাঙ্গীর কবিরের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্রী অনিল দাস গুপ্ত। এছাড়া প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ. গনি।

ত্রুটিপূর্ণ ও দায়সারা গোছের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনকে ঘিরে সুইডেনে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে যথেষ্ট বিরক্তি উৎপাদন করেছে। পদ পদবী ভাগ বাটোয়ারাই ছিল সম্মেলনের মূল বিষয় বলেও অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়াও সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল, এইসব ভাগবাটোয়ারাতে সর্বইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ও মদদ।

স্থানীয় সময় দুপুর একটায় সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হোটেল থেকে প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে সম্মেলন কক্ষে এসে উপস্থিত হন সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

একাত্তরের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলন।

সর্বসাধারণের কাছে দু’হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়াই ছিল দীর্ঘ ছয় বছরের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরের রিপোর্ট পেশ। তার ক্ষমা মঞ্জুর করে বক্তব্য দেন সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্রী অনিল দাস গুপ্ত এবং জাহাঙ্গীর কবিরকে আগামী তিন বছরের জন্য সভাপতি হিসেবে ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বক্তব্য রাখেন। ঠিক তখনই সম্মেলনে উপস্থিত প্রায় তিনশ ডেলিগেট ক্ষোভে ভেঙ্গে পড়েন এবং এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সরাসরি নির্বাচন চেয়ে শ্লোগানে কাপিয়ে তোলেন সম্মেলন কক্ষ। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সম্মেলন কক্ষের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং অবস্থার বেগতিক দেখে অনিল দাস গুপ্ত এবং এম এ গনি পুলিশ প্রহরায় কোন কমিটি ঘোষণা ছাড়াই সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করেন।

এব্যাপারে খবর নিয়ে জানা যায় যে, জাহাঙ্গীর কবিরকে সভাপতি নির্বাচন করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে নাকি অনিল গুপ্তের উপর বাংলাদেশ হাইকমান্ডের সরাসরি নির্দেশ ছিল। এব্যাপারে জানতে চাইলে অনিল দাস গুপ্ত উত্তর দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

এদিকে, সুইডেন আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের ব্যাপারে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের ব্যাপারেও উপস্থিত অনেকে মত প্রকাশ করেন। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন নেতার প্রভাবে এবং বিভিন্ন উপঢৌকনের বিনিময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগের পদ-পদবী কেনাবেচা হয়।

সুইডেন আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কমিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ গনি জানান, সভাপতি শ্রী অনিল দাস গুপ্ত এব্যাপারে আগামীতে ঘোষণা দেবেন। সুইডেন আওয়ামী লীগের ক্ষুব্ধ নেতৃবৃন্দ অবশ্য এব্যাপারে কোন মন্তব্য দিতে রাজি না হয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণের কথা বলেন।

সুইডেন আওয়ামী লীগের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা জনাব সামসুদ্দিন আহমেদ খেতু মিয়া সর্বইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের আচরণে ক্ষুব্ধ মনোভাব পোষণ করে বলেন, এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে তাঁরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত