মাঈনুল ইসলাম নাসিম

২৪ জুন, ২০১৬ ১৩:৩৭

বেশ কিছু সেক্টরে হাঙ্গেরির সহায়তা নিতে পারে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ওয়েস্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট (পানির নিরাপত্তা ও আবর্জনা ব্যবস্থাপনা) সেক্টরে এবং আর্সেনিক দূষণ রোধকল্পে সহায়তা করতে পারে হাঙ্গেরি, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশটির দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আবু জাফর। প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রিয়া থেকে দেখা হয়ে থাকে হাঙ্গেরি। রাজধানী ভিয়েনাতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের মাধ্যমে অস্ট্রিয়ার পাশাপাশি হাঙ্গেরি ও স্লোভেনিয়ার দায়িত্ব পালন করছেন পেশাদার কূটনীতিক এম আবু জাফর। হাঙ্গেরি-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলছিলেন তিনি।
 
রাষ্ট্রদূত এম আবু জাফর বলেন, “হাঙ্গেরি বাংলাদেশের একটি বন্ধুপ্রতীম দেশ। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হাঙ্গেরি আমাদের পাশে শক্তভাবে দাড়ায় এবং হাঙ্গেরীয় জনগণ দৃঢ় সমর্থন দেয়। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সবাই ১৯৭১ সালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আমাদের স্বাধীনতা লাভের ক্ষেত্রে। হাঙ্গেরি সেরকমই একটি বন্ধুপ্রতীম দেশ। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে হাঙ্গেরি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে। মজার বিষয় হচ্ছে, ১৯৭৩ সালে হাঙ্গেরি বাংলাদেশে তাদের পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসও প্রতিষ্ঠা করে, ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে তার কার্যক্রম চলে। পরে তারা সেটি বন্ধ করে দেয় বা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায়”।
 
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, “এককথায় বলতে গেলে বাংলাদেশের জন্য হাঙ্গেরির অবদান অনেক। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের কৃষি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তারা আমাদেরকে প্রচুর সহায়তা দিয়েছে। অনেক বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী তখন হাঙ্গেরিতে পড়তে এসেছিলেন এবং এখনো অনেকেই পড়তে আসছেন। এখানে পড়ার খরচ অনেক কম। হাঙ্গেরির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য খুব বেশি নয়, গত  অর্থবছরের হিসেব অনুযায়ী তা প্রায় ১৬ মিলিয়ন ইউএস ডলারের মতো। ক্রমান্বয়ে বাড়ছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। মূলত তৈরি পোশাক তথা আরএমজি বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে রপ্তানি হয়। এছাড়া ছোট পরিসরে আমরা কিছু কৃষিপণ্য, পাটজাত সামগ্রী এবং প্রক্রিয়াকৃত চামড়া রপ্তানি করি। বাংলাদেশী সিরামিক সামগ্রী ও হস্তশিল্পেরও ভালো সম্ভাবনা আছে হাঙ্গেরির বাজারে। অন্যদিকে হাঙ্গেরি থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে ঔষধ, হাসপাতালের সরঞ্জাম এবং রেলওয়ের স্পেয়ার্স”।
 
হাঙ্গেরি-বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে যেসব সম্ভাবনা আগে ছিল সেগুলো এখন নতুন করে রিনিউ করতে হচ্ছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত এম আবু জাফর। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। রাশিয়ান প্রযুক্তির পাওয়ার প্লান্ট আছে হাঙ্গেরিতে, আমরা সেই একই প্রযুক্তি বাংলাদেশে ব্যবহার করছি। নিউক্লিয়ার সায়েন্স শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে হাঙ্গেরি অনেক দূর এগিয়ে আছে। বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা যেমন এখান থেকে পড়াশোনা করে যেতে পারে কিংবা আমাদের দেশে যারা এটমিক এনার্জি কমিশনে কাজ করছেন তারা হাঙ্গেরিতে এসে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে গেলে সেই শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারবেন বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্রোগ্রামে”।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত