আনসার আহমেদ উল্লাহ, লন্ডন থেকে

১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২২:২৬

‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক ও শেখ মুজিব’ বিষয়ে লন্ডনে নির্মুল কমিটির আলোচনা

‘নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যদি ইতিহাস জানতে না পারে, তাহলে তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবেনা, এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তো এখনই প্রায় একশো বছরের পুরনো। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের গান্ধী হত্যার পরেও প্রায় পঁচাত্তর বছর কেটে গেছে। ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার এই যে খেলা শুরু হয়েছে সেখানে নাথুরাম গডসে দেশদ্রোহী নয়, দেশভক্ত’ এই কথাগুলো বললেন ড. পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিউ ইয়র্ক থেকে আগত ডা. পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ব লন্ডনের বাংলাটাউনে অবস্থিত লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি, অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক ও শেখ মুজিব’ মুজিববর্ষ কাউন্টডাউন উপলক্ষে যুক্তরাজ্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত সেমিনারে অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন।

ডা. পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় মানবাধিকার কর্মী, লেখক, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম সমালোচক এবং সংগীতশিল্পী। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়া এবং বিকৃতকরণের খেলা চলেছে। একশ্রেণির তথাকথিত বুদ্ধিজীবী প্রকাশ্যে ও গোপনে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির সঙ্গে ওঠাবসা করেন, তাদের মিটিং সমাবেশে বক্তৃতা দেন। আর ভারতবিরোধিতা তো তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেই ভারতবিরোধিতায় যেমন যুক্তিযুক্ত কারণ আছে ফারাক্কা বাঁধ, বাংলাদেশকে তার প্রাপ্য জলের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ভারতীয় শাসকশ্রেণির খেলা, তেমনি আছে ইসলামী চরমপন্থার ভারতবিদ্বেষ। ঘোলা জলে মাছ ধরতে তারা সদাসক্রিয়।

তিন আরও বলেন, হাজার বছরের বাঙালি জাতির ইতিহাস; পালরাজাদের বাংলা থেকে শ্রীচৈতন্যের বাংলা থেকে রবীন্দ্র-নজরুল-বিভূতিভূষণের বাংলা থেকে লালন-সিরাজের বাংলা আজ নতুন প্রজন্মের বাঙালির মন থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বাংলা ভাষা রক্ষার ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল আন্দোলন ও আত্মত্যাগের ইতিহাস সেই সময়েও যেমন আমাদের জানতে দেওয়া হয়নি, তেমনই এখনও পশ্চিমবঙ্গের এক বিরাট সংখ্যক মানুষের কাছে তা অজ্ঞাত, এবং গৌণ।

শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ পালনের বছরে দুই বাংলা যেমন এই মহান নেতাকেও স্মরণ করবে, তেমনি তার সঙ্গে সঙ্গে দুই বাংলার এই দুই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও তাদের নেতা ও নেত্রীদের, এবং অসংখ্য নামহীন খ্যাতিহীন শহীদদেরকেও স্মরণ করে।

আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের এই শুভক্ষণে আমরা যেন দুই বাংলার ও বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ভুলে না যাই। সেমিনারটি সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য নির্মল কমিটির সভাপতি নূরউদ্দিন আহমেদ এবং পরিচালনা করেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাল খান। যারা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন তারা হলেন- বঙ্গবন্ধু পরিষদের সেলিম উল্লাহ, নির্মল কমিটির উপদেষ্টা হুসেনেরা মতিন, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ওয়ালিউর রহমান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের আবদুল আহাদ চৌধুরী, ড. অমিত মুখোপাধ্যায়, প্রেসক্লাবের নাজমুল হুসেন, নির্মল কমিটির কাউন্সিলর মঈন কাদরী, সহ-সম্পাদক স্মৃতি আজাদ, তোফাজ্জল হুসেন, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সৈয়দ গোলাব আলী, শায়ক আহমেদ এবং সাংবাদিক তানভীর আহমেদ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত