রাবি প্রতিনিধি

২৯ আগস্ট, ২০১৬ ১৬:৪৯

হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে রাবিতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) রহমতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিলি জেসমিন ও আবাসিক শিক্ষিকা পাক নেহাদ বানুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হলের ২৪৬ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র ছাত্র উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। অভিযোগ পত্রে হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ, জায়গা থাকতেও ছাত্রী না ওঠানোসহ ১১ দফা সমস্যা জানানো হয়। এর আগে তারা আধা ঘণ্টা ধরে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

‘হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষিকার পদত্যাগ চাই, আমরা হলের ভৃত্য নই’ সহ হাতে নানা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা এসময় হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন।

এ সময় ওই প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষিকার দুর্ব্যবহার নিয়ে ওই হলের এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ওপর তালায় উঠা-নামা করতে পারি না। খাবার পানি নিয়ে আসার জন্য নিচে যেতে হয়। এ বিষয়ে আমি হল প্রাধ্যক্ষ ম্যামের কাছে বলতে গেলে তিনি বলেন, তুমি শারীরিক প্রতিবন্ধী তো কী হয়েছে? এই হলে থাকতে হলে তোমাকে ওপরেই থাকতে হবে। নীচ থেকে পানি না আনতে পারলে টয়লেটের পানি খেয়ে থাকবে।’

এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষিকা পাক নেহাদ বানুর কাছে কোন সমস্যার কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, হলে থাকার দরকার নাই হল ছেড়ে চলে যাও। তাছাড়া যে কোন কাজ করতে হলে দিনের পর দিন তাদের পেছনে ঘুরতে হয়। তারা আমাদের সমস্যা তো দেখেন ই না বরং ছাত্রীদের বলেন তোমাদের সমস্যা দেখার দায়িত্ব আমার না। হলে সিট খালি থাকা স্বত্বেও শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা প্রদান করা হয় না। এমনকি আমাদের সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে দ্বিধাবোধ করেন না।’

পরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের দফতরে শিক্ষার্থীরা সকল দাবি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা শেষে ছাত্র উপদেষ্টা তাদেরেকে আশ্বস্ত করলে তারা হলে ফিরে যান।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিলি জেসমিন বলেন, ‘আমরা বিরুদ্ধে সাজানো একটি অভিযোগ। এ ধরনের কোন কাজই আমি করিনি। আর পাক নেহাদ বানুও একজন অমায়িক মানুষ। তিনি এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, হলের কিছু সমস্যা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করছে। তবে সামান্য বিষয় নিয়ে যে শিক্ষার্থীরা এতো কিছু করবে এটা আমি তাদের নিকট থেকে কামনা করিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু জানেন না জানিয়ে পাক নেহাদ বানু বলেন, ‘আমি তো সুষ্ঠুভাবেই আছি। কেউ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকেও কিছু জানানো হয়নি।   

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা শুনেছি। ঘটনাগুলো সত্যি হয়ে থাকলে তা দুঃখজনক। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত