সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ মে, ২০১৭ ১৩:৩০

অবসরে বেরোবি ভিসি নূর-উন নবী

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অবরোধ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর মুক্ত হয়ে আলোচনায় আসা রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্য এ কে এম নূর-উন নবীর অবসরে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থের অপচয় সহ অনেক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টায় বাসভবনের পেছনের গেট দিয়ে কালো জীপের একটি গাড়িতে চড়ে বের হয়ে যান উপাচার্য।

বুধবার সারাদিন ও মধ্যরাত পর্যন্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। রাত পৌনে একটায় অবমুক্ত হয়ে উপাচার্য তার বাসভবনে প্রবেশ করেন। বৃহস্পতিবার বাসভবনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এরপর নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে তার চার বছর পূর্ণ করে দুনীতি আর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের দায়ের করা মামলা মাথায় নিয়ে অবসরে যান এ উপাচার্য।

মিথ্যা মামলায় শিক্ষকদের জড়িয়ে পদোন্নতি আটকে রাখার অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবীর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান। বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ তারিক হোসেনের আদালতে বাদীর পক্ষে মামলাটি করেন অ্যাডভোকেট মুনীর চৌধুরী।

মামলার বাদী তাবিউর রহমান প্রধান জানান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর একেএম নূর-উন-নবীর স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত অনশন মঞ্চে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ভিসির আর্শীবাদপুষ্টরা হামলা চালিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করেন এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ একটি অজ্ঞাত মামলা দায়ের করে। যাতে শিক্ষকদের অনৈতিকভাবে জড়ানোর চেষ্টা করেন উপাচার্য এবং মামলার অজুহাতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদোন্নতি আটকে রাখেন। যা শিক্ষকদের মানহানি ঘটিয়েছে। আর সেই মানহানির যথাযথ বিচার নিশ্চিতে মামলা করা হয়েছে।

দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগের দাবির মুখে আগের উপাচার্য আব্দুল জলিল মিয়াকে সরিয়ে অধ্যাপক নূর-উন নবীকে ২০১৩ সালের ৬ মে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার।

তার চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুদিন আগে বুধবার সকালে উপাচার্যকে অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। উপাচার্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে কথা রাখেননি বলে দাবি করেন তারা। দিনভর অবরুদ্ধ থাকার পর মধ্যরাত সাড়ে ১২টায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এই ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে ইউজিসির ওই তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য গণমাধ্যমে আসে। প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে ইউজিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

২০১৬ সালের ৬ মার্চ ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা দেখতে গেলে তখনকার শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরএম হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান উপাচার্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।

এরপর ২ আগস্ট ইউজিসির সদস্য আখতার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি; যার প্রতিবেদন গত ২২ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত