রাবি প্রতিনিধি

১০ জুলাই, ২০১৭ ২২:৩৭

রাবিতে সাংবাদিক মারধরকারী আরো ৪ ছাত্রলীগ নেতা শনাক্ত, বিভিন্ন মহলে নিন্দা

পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দ্য ডেইলি স্টারের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আরাফাত রাহমানকে বেধড়ক মারধারকারী আরো চারজন ছাত্রলীগ নেতাকে প্রত্যক্ষদর্শী ও গোয়েন্দা তথ্যানুযী শনাক্ত করা হয়েছে।

মারধরের সঙ্গে জড়িত ওই নেতারা হলেন- ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ, সাংগাঠনিক সম্পাদক ও ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন চন্দ্র রায়, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও কানোন এবং ভাষা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের উপ সম্পাদক সানিওর রহমান সানি।

সাংবাদিক মারধরকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর।

এদিকে বাস ভাঙচুরের ছবি তোলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক সাংবাদিককে মারধর করে গুরুতর জখম করায় বিভিন্ন মহলে নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় রাবি সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শাবি সাংবাদিক সংগঠন নিন্দা জানিয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের অভিলম্বে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

পেশাগদ দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিককে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটি (রুরু)। সোমবার বিকেলেই রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি কায়কোবাদ খান ও সাধারণ সম্পাদক হুসাইন মিঠু এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান। সেই সঙ্গে হামলাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ কঠোর শাস্তির দাবি করেন।

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, রাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত আরাফাত রাহমান একজন সংবাদকর্মী। তাকে তার পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হামলা করার ঘটনা গণমাধ্যমের ওপর হামলা বলে মনে করি। আমরা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। হামলাকারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহমেদ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবন ও আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়সহ জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাই।

বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকের ওপর হামলা প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব। বিবৃতিতে তারা হামলা ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর কঠোর শাস্তির দাবি জানান। এছাড়া তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (রাবিসাস), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে), রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট, রাবি ছাত্র ফেডারেশন, রাবি ছাত্র ইউনিয়ন, রাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহীগামী দেশ ট্রাভেলসের একটি বাসে ক্যাম্পাসে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। কুমিল্লায় ভাড়া নিয়ে বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়েল মেইন গেটে জড়ো হন ছাত্রলীগের ১৫-১৬ জন নেতাকর্মী। বাসটি সেখানে আসলে ভাঙচুর শুরু করেন ছাত্রলীনেতাকর্মীরা। এসময় সাংবাদিক আরাফাত তার ক্যামেরায় ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে তাকে বেধড়ক মারধর করেন ৭-৮ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। রাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি আহমেদ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান লাবণ ও বিজয় মারধরে নেতৃত্ব দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত