রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:৪২

জামিন পাওয়ার পরও হয়রানির শিকার রাবি শিক্ষার্থী!

বর্ধিত ফি ও বাণিজ্যিক সান্ধ্যকোর্সবিরোধী আন্দোলনের মামলায় জামিন পাওয়ার পরও এক শিক্ষার্থী পুলিশী হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১ অগাস্ট রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক আখতারুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীসহ ১৬ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনে মুক্ত ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম উৎসব মোসাদ্দেক। তিনি ছাত্র ফেডারেশনের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তিনি বলেন, “আমি জামিনে আছি তবুও শনিবার সকালে নওগাঁ সদরের মোল্লাপাড়া এলাকায় আমার বাসায় পুলিশ যায়। আমি বাসায় আমার জামিনের একটি কাগজ রেখে আসছিলাম, সেটা পুলিশকে দেখায় আমার পরিবার। কিন্তু জামিনে থাকার পরও কেন আমার বাসায় পুলিশ যাচ্ছে। এতে করে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে পরিবারের সদস্যরা।

“বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করি আপনারা রাজশাহী পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানান। এভাবে হয়রানি করবেন না। যদি জামিনের কাগজ থানায় না পৌঁছে থাকে তবে দ্রুত পাঠিয়ে দিন। তা না হলে ঈদের আগে আমার মত আরও ১৫ জনও হয়রানির শিকার হতে পারে।”

জামিন পাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, রাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মুইজ, সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব রকি ও ফারুক ইমন, রাবি ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি প্রদীপ মার্ডি ও সুমন অগাস্টিল সরেন, রাবি ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি খাদেমুল বাশার, আবু সুফিয়ান বকসী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র মশিউর রহমান সজল, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক ছাত্র সাজু আহমেদ, ফোকলোর বিভাগের সাবেক সাহাবুদ্দিন, ইলিয়াস খান, আসাদুজ্জামান আসাদ ও ইকবাল কবির।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিলের দাবিতে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে আন্দোলন শুরু করে কয়েকটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। আন্দোলন চলাকালে ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগ-পুলিশ অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনায় অর্ধশত শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

হামলার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন, অ্যাকাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলে ভাঙচুর চালান। ঘটনার পরের দিন নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও ছাত্রলীগ পৃথকভাবে দুইটি করে মোট ছয়টি মামলা করে। যেখানে ১০৫ জনের নাম উল্লেখ্যসহ ৪৭৫ জনকে আসামি করা হয়।

পরে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ফের আন্দোলনের হুমকি দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার বসে মামলাগুলো প্রত্যাহারের আশ্বাস দেয়। পরে ছাত্রলীগ তাদের দুইটি মামলা তুলে নিলেও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা প্রত্যাহার করেনি। পুলিশ বাদী হয়ে করা ‘নাশকতা, সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা’ দেওয়ার মামলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর পর চলতি বছরের ৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলা দুইটি বর্তমানে নিষ্ক্রিয় আছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত