এনামুল হক এনাম

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৯:২০

সিলেট-৩ আসন: ‘যোগ্যতার বিচারে’ ডা. দুলাল কেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী!

ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট-৩ আসন! সিলেট-১ আসনের সবচেয়ে নিকটবর্তী হওয়ায় এই আসনের গুরুত্ব ও আগ্রহ অনেক বেশি; প্রার্থী, ভোটার এমনকি ঐ এলাকার বাইরের মানুষদেরও কাছে। সিলেট-৩ আসনে ইতিমধ্যেই দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় অনেক প্রত্যাশী, পদপ্রার্থী তাদের নির্বাচনী ব্যানার ফেস্টুন টাঙিয়ে ফেলেছেন ইতোমধ্যে।

নিবন্ধের শুরুতেই প্রশ্ন করে বসি, সিলেট-৩ আসনের একজন ভোটার হিসেবে কিংবা সিলেটের নাগরিক হিসেবে কেমন প্রার্থী বা সংসদ সদস্য আপনি দেখতে চান?

ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ-দক্ষিণ সুরমা এই তিন উপজেলা মিলে ৩ লক্ষ ২২ হাজার ২৯৩ জন ভোটারের এই আসন নিয়ে হবে আগামী নির্বাচন। সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে জয়ী সংসদ সদস্য শ্রদ্ধেয় জনাব হাবিবুর রহমান হাবিব দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনে শক্ত প্রার্থী। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যে প্রার্থীই মনোনয়ন পান না কেন, তাঁকে বর্তমান সংসদ সদস্য থেকে নিজেকে যোগ্যতর প্রমাণ করে তবেই নির্বাচনের টিকেট পেতে হবে। বিষয়টি একই সাথে কঠিন এবং সহজ। কঠিন, কারণ নতুন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে হলে যোগ্যতার বিচারে একই সাথে সিলেট- ৩ আসনের তৃণমূলের ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় হতে হবে, প্রমাণ করতে হবে মনোনয়ন প্রার্থী ব্যক্তি তৃণমূলের নিকটজন। আর সহজ বলছি এই কারণে, স্থানীয় লোকজনের কাছে যার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে, অতীত ইতিহাস থেকে দেখে আওয়ামী-নির্বাচকমণ্ডলী এবং দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন প্রদান করেন।

নেত্রীর একটি মন্তব্য ঘুরেফিরে কানে বাজে, “আমার কাছে আসার চেষ্টার প্রয়োজন নেই, লবিং এর প্রয়োজন নেই, জনগণের কাছে যান… আমিই আপনাকে কাছে টেনে নেবো”। তাই কঠিন কাজটাই হল এলাকার মানুষের কাছে আসা, জনসেবায় নিজেকে নিবেদিত করা, তৃণমূলের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করা। জনমানুষের সেবায় নিবেদিত প্রার্থীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনোই নিরাশ করেন না।

সিলেট-৩ আসনে তুমুল জনপ্রিয় এমন নেতাই ছিলেন মাহমুদ-উস-সামাদ। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র একজন যোগ্য প্রার্থীই হারায়নি, সিলেট-৩ আসনের বাসিন্দারা হারিয়েছে সুখ-দুঃখ ভাগ করা, শত অভিযোগের 8সহজ সমাধান করে দেওয়া একজন কাছের মানুষকে, যিনি সংসদ সদস্য কম, জনমানুষের নেতা ছিলেন বেশি। এ ক্ষতি নিশ্চিত ভাবেই অপূরণীয়।

আমরা সবাই দেখেছি, গত এক দশকে ভোটের রাজনীতির বড়সড় পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। টাকার জোরে উড়ে এসে জুড়ে বসার প্রথা অনেক আগে থেকেই নির্বাচনগুলোতে পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এখনও হয়। সিলেট-৩ আসনের জনগণ হিসেবে আমাদের ভয় দুই জায়গায়ই। অর্থ, ক্ষমতা আর রাজনীতির মারপ্যাঁচে যোগ্য ব্যক্তি যদি এমপি হতে না পারেন, তবে হয়তো এমনও দেখা লাগতে পারে এই আসনের কোন এমপি ভিন্ন দেশের জেলে মানব বা অর্থ পাচারের দায়ে বন্দি কিংবা দেশের সংসদ সদস্য হয়েও কানাডার বেগমপাড়ার বাসিন্দা। এসব উদাহরণের পুনরাবৃত্তি যেন বারবার না হয় সেজন্য যারা মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ব্যক্তিবর্গ এবং স্থানীয় সুপারিশকারীগণ ও ভোটার সর্বোপরি সিলেটের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।

আমরা চাই, আমাদের এলাকায় একজন সৎ, যোগ্য ব্যক্তি সাংসদ হয়ে আসুন, যিনি শুধু এলাকার নয়, পুরো বাংলাদেশের উন্নয়নে, ডিজিটাল বাংলার রূপায়নে অবদান রাখতে পারবেন। যাকে নিয়ে এলাকার মানুষ গর্ব করবে। যার পরিচিতি জাতীয় পর্যায়ে আছে, যিনি ঢাকাকেন্দ্রিক সচিবালয়, মন্ত্রণালয়ের অলিগলি চেনেন, যিনি শিক্ষিত হবেন এবং তাকে সিলেট থেকে ঢাকা অবধি সবাই মূল্যায়ন করবে, এক নামে চিনবে। (একবার ভেবে দেখুন, বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত মোট ৩৫০ জন সংসদ সদস্য, যাদের দিকনির্দেশনায় দেশ চলে কতজনের নাম আমরা জানি বা চিনি!)

ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল কেন সিলেট-৩ আসনে যোগ্যতার বিচারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী?
গুরুত্বপূর্ণ সিলেট-৩ আসনে কে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন তা বলা মুশকিল। কিন্তু দলের নীতিনির্ধারণী স্থান থেকে যে বা যারা মনোনয়নের জন্য প্রার্থীকে আলোচনায় আনেন বা নির্বাচিত করেন, সম্মানিত নির্বাচকমণ্ডলীর ব্যক্তিবর্গের কাছে সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের দাবি রাখতে পারি।

গত বছর উপনির্বাচনের সময়ে একটি কলাম লিখেছিলাম “কেমন সাংসদ চাই?” সেই কলামের আলোকে যাচাই করতে চাই ডা. ইহতেশামুল হক দুলালকে। প্রথমেই আমাদের সংসদ সদস্যের কিছু অত্যাবশ্যকীয় গুণাবলী, যা না থাকলেই নয়… সেগুলি উল্লেখ করি। সবচেয়ে জরুরি, প্রার্থীর মধ্যে নেতৃত্বগুণ থাকতেই হবে। তিনি যদি নেতৃত্বগুণে পারদর্শী না হন, বা ব্যর্থ নেতা হন তবে উনাকে আলোচনায় না আনাই শ্রেয়।

ডা. দুলালের রাজনৈতিক জীবন ৫০ বছরেরও বেশি। সিলেট এমসি কলেজে ৭০ দশকের শুরুতে ভর্তির পর থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তৎকালীন সময়ে তিনি ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন, পেয়েছেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের মত নেতার সাহচর্য। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম, বড় ভাই ১৯৭১ সালে সম্মুখ সমরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর প্রতীক। শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত এই পরিবারটি ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এবং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। শহরের ডা. দুলালের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ, লুটপাট করে স্বাধীনতাবিরোধী দুর্বৃত্তরা। সিলেট মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেওয়ার কারণেই হয়েছেন মিথ্যা মামলার আসামি। আদালতের রায়ে সেই মামলা থেকে নির্দোষ সাব্যস্ত হয়ে শেষ করেছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষানবিশ পাঠ। এরপর থেকে একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান করে বিএমএ, স্বাচিপ, প্রকৃচির মত সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন অগণিতবার। ৩২ বছরের সফল কর্মজীবনে নীতি-নৈতিকতা আর সততার সাথে কখনোই আপোষ করেননি। বিএনপি-জামায়াত আমলে কর্মস্থলে হয়েছেন নিপীড়িত, নির্যাতিত, বিভাগীয় স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে ট্রান্সফার করা হয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে; তবু ভেঙে পড়েননি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এই সৈনিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে দেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী স্থানে গিয়েও স্বমহিমায় ছিলেন উজ্জ্বল। ডা. দুলাল ছিলেন জনগণের প্রতি বিশ্বস্ত, বিশ্বস্ত ছিলেন দেশ ও দলের প্রতি। একটি কথা বারবারই বলতে হয়, নীতি ও আদর্শের প্রতি এই দুলাল কখনোই আপোষ করেননি জীবনের শেষ কর্মক্ষণটি পর্যন্তও। এজন্য অনেকের বিরাগভাজন হয়েছেন। কিন্তু আপামর চিকিৎসক সমাজ ও জনসাধারণের কাছে হয়েছেন প্রশংসিত, ভালবাসার পাত্র।
ডা. দুলালের কর্মজীবন, কর্মঅভিজ্ঞতা, দল ও দেশের সঙ্কটে সঠিক সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্ব দেয়ার পূর্বঅভিজ্ঞতা আওয়ামী লীগের জন্য সম্পদসরূপ। তিনি সৃজনশীল কাজে উৎসাহী এবং কর্মতৎপর ছিলেন সবসময়। একজন প্রার্থীর পূর্ববর্তী কর্মযজ্ঞে জনগণ আস্থাশীল হবে, জানবে হ্যাঁ আমাদের একজন প্রার্থী আছে যিনি সক্রিয় এবং বিশ্বাসী, যার যোগ্যতায় আস্থা রাখা যায়। ব্যক্তি হিসেবে ডা. দুলাল এমনই একজন যোগ্য প্রার্থী।

বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের মধ্যে যোগ্যতার যে অভাব দেখি তা হল প্রগতিশীলতা। স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে এবং দীর্ঘ কর্ম জীবনের সহকর্মী হিসেবে সকল প্রগতিশীল কাজ ও মুক্তচিন্তায় ডা. দুলাল ছিলেন ও আছেন সর্বাগ্রে। দক্ষ, শিক্ষিত এবং নৈতিক গুণের সাথে মুক্তচিন্তা ও প্রগতিশীলতাকে গুরুত্বের সাথে আলোচনায় আনতে চাই। ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল নিঃসন্দেহে কুসংস্কারমুক্ত শিক্ষিত একজন প্রগতিশীল ব্যক্তি যিনি দেশ ও সমাজকে অনেক কিছু দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। আমরা চাই না এই আসনে কোন রাজনৈতিক মুনাফা-লোভী, সুবিধাভোগী ব্যক্তি ডিগবাজি দিয়ে দক্ষ যোগ্য প্রার্থীকে ডিঙিয়ে সংসদে যাক, যার কারণে সিলেট-৩ আসনসহ পুরো দেশ লজ্জিত হয়। কারণ অতীতে এমন প্রার্থীর উদাহরণ বাংলাদেশ, এমনকি সিলেটেও কম নয়।

সাধারণত, সংসদ সদস্যরা তার অনুসারী/দলের আনুগত্য স্বীকার করে কাজ করেন এবং সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা চাই পরিবর্তন আসুক, সংসদ সদস্য শুধু দল নয়, জনগণের আনুগত্য স্বীকার করে নিজেকে জনগণের তরে নিয়োজিত করুন। দিন দ্রুত বদলাচ্ছে, হাতের কাছে মোবাইল, ইন্টারনেট, নিউজ, ইউটিউব… কোন এমপি জনতার ভয়ে দৌড় দিলেন আর কোন এমপিকে কারা কাদা ছুড়ে মারলো তা মুহূর্তেই শুধু নিউজ নয় ভিডিও আকারে জনগণের হাতে চলে আসে। আমরা চাই না কোন অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি সিলেট-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হোন, যিনি তার কর্মদোষে জনরোষের শিকার হবেন… যার কারণে তার দল-দেশ লজ্জিত হবে। আমরা চাই ব্যক্তি সংসদ সদস্য জনগণের স্বার্থে কাজ করবেন। আত্মীয়স্বজন বা দালালবেষ্টিত না হয়ে জনগণের নেতা হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবেন। ব্যক্তিস্বার্থের সীমাবদ্ধতাকে উৎরে তিনি এলাকার জনসেবক হিসেবে নিজেকে নিবেদিত করবেন, দেশের জন্য কাজ করবেন। এমন একজন প্রার্থীর খুব দরকার।

সৎ, কর্মদক্ষ, দাগহীন রাজনৈতিক প্রোফাইল এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করা একজন ডা. দুলাল ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সত্যিকার অর্থে একজন জনমানুষের নেতা হয়ে উঠেছেন। দীর্ঘ কর্ম জীবনে দেশে-বিদেশে পেয়েছেন অনেক সম্মান, বিএমএ, বিএমডিসি থেকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ সংস্থা ডব্লিউএইচওতে রেখেছেন কর্মের স্বাক্ষর। তাঁর জীবনে চাওয়া পাওয়ার আদতে আর কিছু বাকি নেই, তাই কর্মজীবন শেষে নিজ এলাকায় শতভাগ নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন জনসেবায়। কোভিড মহামারি, বন্যা, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গেছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণে।

ডা. দুলাল, যিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি, সাংবিধানিক চেতনায় অসাম্প্রদায়িক মানুষ হয়ে সকল দল, মত, জাতি, গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সবসময়। যিনি মৌখিক স্বপ্ন দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চান না, বাস্তববাদী হয়ে কাজ করছেন আজীবন। এমন প্রার্থী দল থেকে নির্ধারিত হয়ে যিনি নির্বাচিত হলে তার সততা এবং কার্যগুণে জাতীয় পর্যায়ে দলের বিজ্ঞাপন হবেন নিশ্চিত। দাপ্তরিক কাজকর্ম ও কর্তব্যে তো তার পারফরম্যান্স ভাল থাকবেই, নিজে দুর্নীতি করবেন না এবং তার অধীনস্থ কাউকে দুর্নীতিও করতে দেবেন না… এমন লোকই ডা. দুলাল। যার নাম শুনলেই দুর্নীতিবাজ কর্মচারী, দালালরা দশবার চিন্তা করবে, দুর্নীতি করে সে রেহাই পাবে না। এমপি হিসেবে তিনি দলীয় "ম্যান্ডেট" নিয়ে জনগণের সামনে দাঁড়াবেন, যা বাস্তবমুখী এবং পূর্ববর্তী যেকোনো সময়ের চেয়ে চিত্তাকর্ষক। যার চেক-লিস্টে প্রথমেই থাকবে মানুষের প্রতি ভালবাসা, এলাকার উন্নয়ন, দেশের উন্নয়ন। যিনি একজন আধুনিক মানুষ, চিন্তা-চেতনায়, কর্মে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে।

এসব কিছুর বাইরে গিয়েও সাধারণ জনগণ হিসেবে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে মনোনয়ন প্রত্যাশী ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালের কয়েকটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাই।

প্রথমত. প্রার্থী হিসেবে তাঁর ট্র্যাক-রেকর্ড কেমন এবং কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা কী? যা শুরুতেই বলে দেবে প্রার্থী হিসেবে তিনি কতটা যোগ্য এবং নির্বাচিত হয়ে এলে আমাদের জন্য কী করবেন।

দ্বিতীয়ত. পূর্ববর্তী সময়ে যেখানে বা যে সংগঠনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সেখানে তার নেতৃত্ব কেমন ছিল, তিনি দায়িত্ব সচেতন ছিলেন কি না। কর্মে নিষ্ঠাবান এবং সংগঠনের প্রতি ব্যক্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা কেমন তা সহজেই জানিয়ে দেয়।

তৃতীয়ত. নীতি নৈতিকতায় তিনি আপোষহীন কি না?

চতুর্থত. এলাকা, জনগণ এবং দেশের উন্নয়নের প্রতি আদৌ ব্যক্তির আগ্রহ আছে কি না! নাকি তিনি মৌসুমি পাখির মত উড়ে এসেছেন উন্নয়নের নামে জনগণের টাকা লুটপাটের উদ্দেশ্যে?

উপরোক্ত যেকোনো প্রশ্নের উত্তরে যোগ্যতার বিচারে যে কোন প্রার্থী থেকে ট্রাক-রেকর্ড, কর্ম অভিজ্ঞতা, সততা, নিষ্ঠা, নেতৃত্বগুণ, সংগঠনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা, এলাকার মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং এলাকায় জনপ্রিয়তা… সব বিচারে ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

ব্যক্তি আমি স্বপ্নবাজ মানুষ, সত্যই স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখি একজন সৎ, শিক্ষিত, কর্মদক্ষ যোগ্য মানুষের, যিনি সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের দায়িত্ব নেবেন এবং জনগণের উন্নয়ন করবেন। ভেবে দেখুন, স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরও স্বাধীন সার্বভৌম দেশে, একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক সংবিধানে একজন যোগ্য প্রার্থী চাওয়াটা কি সত্যিই খুব বেশি কিছু? আওয়ামী লীগ ডা. দুলালের পেছনে গত ৩২ বছরে যে বিনিয়োগ করে “জনতার দুলাল”এর মত রিসোর্স পার্সনে রূপান্তর করতে পেরেছে, সে বিনিয়োগ যেন অপচয় না হয়।

প্রার্থী হিসেবে আমরা একজন সত্যিকারের আলোকিত, যোগ্য মানুষ চাই। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সমর্থক হিসেবে আশা করি, জননেত্রী এবং দলের নির্বাচকমণ্ডলী আমাদের নিরাশ করবেন না।

  • এনামুল হক এনাম: সাহিত্যিক, কলামিস্ট, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

 

  • প্রকাশিত লেখার মতামত, মন্তব্য লেখকের নিজস্ব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত