মিহিরকান্তি চৌধুরী

০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২৩:১০

শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা : প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস

শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস

প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস নজরুলের গান, আধুনিক গান, লোকগীতি এবং ভক্তিমূলক গানের একজন খ্যাতিমান গায়ক। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি সংগীতের জগতে একটি অমোঘ ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর সুরেলা কণ্ঠ ও ছন্দময় দক্ষতায় শ্রোতাদের বিমোহিত করেছেন। বছরের পর বছর, দশকের পর দশক ধরে তিনি সংগীতের এক গল্প সৃষ্টি করেছেন, একটি শৈল্পিক বোধের ভিত্তি স্থাপন করেছেন। সংগীতের প্রতি তাঁর তীব্র উৎসর্গের মাধ্যমে অগণিত ভক্তদের কাছে একজন প্রিয় শিল্পী হয়ে উঠেছেন।

চার বছর আগে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর তাঁর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীর জমকালো অনুষ্ঠান শুধুমাত্র পরিবারের লোকজন, বন্ধুবান্ধব, সমগোত্রীয় শিল্পী, কলাকুশলী ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে এটা জন্মবার্ষিকীর নিছক কোনও উদযাপন ছিল না। এটা এর চেয়েও বেশি ছিল। এটা ছিল একটি বৃহৎ জনপদের ভিন্ন ভিন্ন বর্গ ও গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সংগীত ও সংগীতশিল্পীকে  যুগপৎ সম্মাননা জানানো, জন্মদিন হলেও যা, না হলেও তা তবে জন্মদিনের একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। ওই আয়োজনটি সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসের প্রতি সংগীতজগৎ তথা ভক্তদের গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছিল। আরও চার বছর কেটে গেল। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ছিল তাঁর ৭৯তম জন্মবার্ষিকী। আমার অতি প্রিয়জন, অগ্রজজন হিমাংশু বিশ্বাসদাকে সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসের কর্মজীবনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল, তাঁর বহুমুখী প্রতিভা যা বিভিন্ন ধারার গানে তাঁর দক্ষতার দ্বারা প্রমাণিত।

সমাজজীবনের বিভিন্ন স্তরের লোকদের ওপর হিমাংশুদার প্রভাব অপরিসীম। তিনি শুধুমাত্র একজন মহান শিল্পী নন বরং একজন চিরসবুজ, চিরতরুণ বন্ধু, সব বয়সের, সব প্রজন্মের সাথে রয়েছে তাঁর বন্ধুত্ব যাকে বলে অল এজ ফ্রেন্ড। তিনি অল ওয়েদার ফ্রেন্ডও বটে। সমালোচনা করেও তাঁর বন্ধু থাকা য়ায়।  


লেখকের সাথে হিমাংশু বিশ্বাস।

সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস অসাধারণ কণ্ঠের অধিকারী। একটি অস্থির আত্মাকে প্রশান্তি দিতে পারে এমন কোমল, মসৃণ টোন থেকে শুরু করে শক্তিশালী ক্রিসেন্ডোস যা আবেগের ভিত্তিকে নাড়া দিতে পারে, প্রতিটি নোট একটি বিরল বহুমুখীতার সাথে অনুরণিত হয়। সংগীতশিল্পী অনায়াসে অষ্টভূজের মধ্য দিয়ে পরিভ্রমণ করেছেন, অনায়াসে প্রাণময় নীচ থেকে ঊর্ধ্বমুখী উচ্চতায় স্থানান্তর করেছেন, শ্রোতাদের বিস্মিত করে রেখেছেন নিরন্তর।

কিন্তু শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতাই এই সংগীতশিল্পীকে আলাদা করে দেয়নি; এটি হচ্ছে প্রকৃত আবেগের সাথে প্রতিটি লিরিককে প্রভাবিত করার ক্ষমতা যা তাঁর শৈল্পিকতাকে সত্যতার সাথেই সংজ্ঞায়িত করে। প্রতিটি গান হয়ে ওঠে একটি যাত্রা, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং হৃদয়গ্রাহী অভিব্যক্তির সুতোয় বোনা একটি আখ্যান। সংগীতশিল্পীর আবেগপূর্ণ নিবেদন নিছক অভিনয় অতিক্রম করে ভিন্ন এক উচ্চমার্গীয় মাত্রা লাভ  করে যেখানে সংগীত নান্দনিক পরিপূর্ণতা লাভ করে। এটি একটি যোগসূত্রের সৃষ্টি করে যার মাধ্যমে ভক্ত, শ্রোতারা সংগীতের কাঁচা, খাঁটি সারাংশের সাথে সংযোগ করতে পারে।

শিল্পীর কণ্ঠের কাঠি নিজেই একটি উপহার, এটি একটি উষ্ণ এবং আমন্ত্রণমূলক গুণের অধিকারী যা এমনকি সবচেয়ে নৈমিত্তিক শ্রোতাকেও আকর্ষণ করে। এটি এমন একটি কণ্ঠ যা প্রাণবন্ত জীবনচিত্র আঁকতে পারে এবং প্রতিটি সংক্ষিপ্ত পরিবর্তনের সাথে অগণিত আবেগের উদ্রেক করতে পারে। সূক্ষ্ম কম্পনটি সমৃদ্ধির এক একটি স্তর যুক্ত করে, একটি সাংগীতিক পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করে যার রসায়ন জটিল হলেও অবশ্যই মনোমুগ্ধকর।

প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং মানসিক গভীরতা ছাড়াও সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস তাঁর শ্রোতাদের সাথে জড়িত থাকার একটি সহজাত ক্ষমতার অধিকারী এক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বহুল পরিচিত। মঞ্চে যখন সংগীত পরিবেশন করেন তখন তাঁর ক্যারিশমা বিকিরণ করেন, ব্যক্তিগত স্তরে কনসার্টে অংশগ্রহণকারীদের সাথে সংযোগ স্থাপন করেন। মঞ্চের উপস্থিতি থাকে চৌম্বকীয়, সংগীতের ছায়া ছাড়াই মনোযোগ আকর্ষণ করে। শিল্পকলার প্রতি শিল্পীর প্রকৃত আবেগ সবসময়ই স্পষ্ট, একটি সংক্রামক শক্তি তৈরি করে যা যেকোনও পরিবেশের পুরো স্থানটিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে।

সংগীতের জগতে আমাদের প্রিয় সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস একজন সত্যিকারের গুণি ব্যক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কণ্ঠ শুধু একটি যন্ত্র নয়; এটি হচ্ছে আবেগের একটি বাহক, গল্প বলার জন্য একটি পাত্র এবং অনুপ্রেরণার উৎস। এই শিল্পীর ভালো মানের বৈশিষ্ট্যগুলো নিছক প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয় বরং দক্ষতা, আবেগ এবং সংযোগের একটি সুরেলা সংমিশ্রণ ছিল যা তাঁর সংগীতের অভিজ্ঞতার জন্য যথেষ্ট সৌভাগ্যবানদের হৃদয়ে একটি অদম্য চিহ্ন রেখে যেতে পারে বলে অঅমরা ন্যায়সংগতভাবে আশা করতে পারি।  

লেখকের একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করছেন হিমাংশু বিশ্বাস।

কবি শামসুর রাহমানসহ বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে সর্বস্তরের ভক্ত, শ্রোতার প্রশংসায় একজন মহান শিল্পীর গায়কী শব্দ বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট। কবির প্রশংসা এবং ভক্ত, শ্রোতাদের মধ্যে আবেগ জাগিয়ে তোলার ক্ষমতা শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসের কণ্ঠের গভীরতা এবং শক্তি প্রদর্শন করে। কথিত আছে, এক সংগীতসন্ধ্যায় কবি শামসুর রাহমান অতিথি হয়েছিলেন হিমাংশু বিশ্বাসের। সে সন্ধ্যায় হিমাংশু দার গান শুনে কবি এতোটাই আপ্লুত হয়েছিলেন যে মন্তব্য খাতায় লিখেছিলেন- ‘হিমাংশু বিশ্বাসের কণ্ঠে লোকায়ত বাংলা খেলা করে।’

পরবর্তী বছরগুলোতে স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসের প্রভাব এখনও শক্তিশালীই আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তর করার পর তিনি সেরে উঠেন।

উপসংহারে বলতে হয়, সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস শুধুমাত্র একজন খ্যাতিমান গায়ক হিসেবেই আবির্ভূত হননি বরং একজন বহুমুখী শিল্পী হিসেবে যার সঙ্গীত মানুষের সাথে গভীরভাবে অনুরণিত হয়, সঙ্গীতের জগতে একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে যায়। সিলেটের মতো একটি প্রাণবন্ত শহরের কেন্দ্রস্থলে যেখানে প্রাত্যহিক জীবনের সুরাশ্রিত ঝংকারের মধ্যেই একজন সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসের মতো গায়কের আবির্ভাব ঘটেছিল যার কন্ঠ বরাবরই ব্যতিক্রমী মানের আলোকবর্তিকা, তাঁর সমৃদ্ধ এবং স্বতন্ত্র গুণাবলির সাথে ভক্ত, শ্রোতাদের রয়েছে নিবিঢ় সম্পর্ক রয়েছে। সুর আর ছন্দের দ্যোতনায় নিবিষ্টচিত্ত-মানুষটি রচনা করেছেন সুদীর্ঘ সময়ের এক শিল্পীত উপাখ্যান। নিবিঢ় সাধনায় সংগীতকে হৃদয়ে ধারণ করে তিনি অগণিত দর্শক-শ্রোতার কাছে হয়েছেন প্রিয় শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস।

সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসদা অত্যন্ত সদাশয় এক ব্যক্তি। জীবনসাজের সুরের সুতোগুলো যেখানে অস্তিত্বের ছন্দের সাথে মিশে আছে, সেখানে হিমাংশু বিশ্বাস নামটি একটি উজ্জ্বল বর্ণ হিসেবে আবির্ভূত হয়। একজন মহান শিল্পীর নিবেদনের পরিপ্রেক্ষিত তাঁর হৃদয়ের উদারতা ও আচার ব্যবহারের মাধুর্য দ্বারা অনুরণিত হয়। যেকোনও পরিবেশে তাঁর উপস্থিতি একটি ভালো সুর করা সিম্ফনির মতো। আমার এবং আমাদের পরিবারের একজন অকৃত্রিম বন্ধু তিনি। তাঁর সাথে আমাদের পরিবারের যোগাযোগ ও সংযোগ নিছক পরিচিতি অতিক্রম করে এগিয়ে গেছে আরও দূর।

একজন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস তাঁর কর্মপ্রচেষ্টা ও প্রতিভাকে মূর্ত করে তুলেছিলেন। তাঁর কণ্ঠ মন্ত্রমুগ্ধের একটি যন্ত্র যা আমাদের পারিবারিক বন্ধনের করিডোর দিয়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। আমার প্রতিষ্ঠান দ্বারা আয়োজিত অসংখ্য অনুষ্ঠানে এবং আমাদের পারিবারিক আয়োজন ও অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি আমাদের জীবনে যে সম্প্রীতি দান করেছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। প্রতিটি পারফরম্যান্স ছিল একটি সুরেলা উপহার যা আমন্ত্রিতদের হৃদয়ে সন্তুষ্টির একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছে। এসকল আমন্ত্রিতজন শিল্পীর শিল্পকলা দ্বারা বিমোহিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করেছিলেন।

সবকিছুর পর হিমাংশুদাকে যা আলাদা করেছে তা কেবল তাঁর সংগীত দক্ষতাই নয় বরং প্রতিটি বোধের সাথে থাকা তাঁর সদিচ্ছার চেতনা। আমাদের অনুষ্ঠানসমূহে তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল পরার্থপরতার একটি সিম্ফনি, বস্তুগত স্বার্থের বাইরের এক সুর বিশেষ। আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি ও আমার পরিবার বুঝতে পেরেছিলাম যে এই লোকটির কাছে আমরা কতটা ঋণী যে অনায়াসে তিনি একজন ভাই, বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষীর মাত্রায় আবির্ভূত হয়েছিলেন।

স্ত্রী অনিতা বিশ্বাসের সঙ্গে শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস

শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসদার সহধর্মিনী অনিতা বিশ্বাসও প্রাতভাধর ও খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী। একসাথে, তাঁরা বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের গ্রেড- ১ শিল্পীদের মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত । সংগীতশিল্পী দম্পতির সংগীত শক্তি ও সুরের প্রভাব বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ।

হিমাংশু বিশ্বাস নামের সাথে আরেকজন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী হিমাংশু গোস্বামীর মিলে যায়। উভয়ের সাথে পরিচিত হলেও, উভয়ের গানের ভক্ত হলেও হিমাংশু বিশ্বাসদার সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক গভীর ছিল ও আছে। আমি দুই হিমাংশুদার নাম দিয়েছি, পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানি। এক বন্ধু জিজ্ঞেস করলেন, কে কোনটা, কে পূর্ব, কে পশ্চিম। বললাম, গোস্বামী দাদা এখন ইউকে থাকেন, তাইলে তিনি পশ্চিমই ভালো, ইউকে, পশ্চিম জার্মানি উভয়েই ন্যাটো সদস্য। আমাদের হিমাংশু বিশ্বাসদার সার্বিক অবস্থান বামধারার, তাই তিনি হচ্ছেন ওয়ারশ প্যাক্টভুক্ত পূর্ব জার্মানি ।

শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস শুধুমাত্র সঙ্গীতের একজন উস্তাদ হিসেবেই আবির্ভূত হননি, একজন ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিত্ব হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে তিনি সংযুক্ত। মানুষের বিভিন্ন অংশের সাথে তাঁর পরিচিতি তাঁকে একতার এক ক্যানভাস হিসাবে এঁকেছে যেখানে বৈচিত্র্যের রং মিশেছে নির্বিঘ্নে ।
৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে হিমাংশু বিশ্বাসদার ভূমিকা রয়েছে। তিনি একজন কণ্ঠযোদ্ধা ছিলেন। কবি দিলওয়ার এর নেতৃত্বে ৭১ এর মার্চের শেষ সপ্তাহে সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘দুর্জয় বাংলা’ নামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন। এই গানগুলো পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলা বেতারে পরিবেশিত হয়। তিনি যুদ্ধকালীন ভারতে সুরকার ও সংগীত পরিচালক একুশে পদকপ্রাপ্ত কন্ঠযোদ্ধা সুজেয় শ্যামের নেতৃত্বে ভারতের বিভিন্ন স্হানে গান পরিবেশন করে টাকা সংগ্রহ করেন। এই টাকাগুলো সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন সময়ে কাজে লাগে। তিনি সিলেটের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ও সুরস্রষ্টা বিদিতলাল দাশের সংস্পর্শে ছিলেন তাঁর মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। বিদিতলাল দাশ ছিলেন সিলেটের গানের জগতের সকল শিল্পীদের গুরু। তিনি ছিলেন সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার ও একজন বড়ো মাপের পৃষ্ঠপোষকও। তাঁর রচিত অনেক গান এখনও অপ্রকাশিত। সিলেটের সংগীত মহলে বিদিতলাল দাশের পরেই সিনিয়র শিল্পী হিসেবে ছিলেন হিমাংশু বিশ্বাস। (এই অনুচ্ছেদের তথ্যসূত্র : মি. শাহাদাত বখত শাহেদ)

তিনি সিলেট নজরুল একাডেমির অধ্যক্ষ ছিলেন এবং সিলেট শিল্পকলায় গানের শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ সিলেটের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখে আসছেন। তিনি সংগীতকে ভালোবেসে আজও তাঁর নিজ বাসায় গানের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলছেন।
শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়ার উপযুক্ত এক ব্যক্তিত্ব। সরকার ও সমাজের দায়িত্ব আছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।

সম্প্রতি, একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের প্রাণবন্ত পটভূমিতে হিমাংশু বিশ্বাসদার মুখোমুখি হলাম। ভদ্রলোক বরাবরের মতোই আনন্দময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন । একটি স্বতঃস্ফূর্ত সেলফি মুহূর্তটিকে বন্দী করে, আমার স্মৃতির ভাণ্ডারে জমা হয়।
এই মহান সংগীতশিল্পীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। তাঁর সুর সময়ের করিডোরে প্রতিধ্বনিত হতে থাকুক, হিমাংশু বিশ্বাস নামের মানুষটির মধ্যে মূর্ত হওয়া মঙ্গলের চিরন্তন বার্তা দীর্ঘায়ু লাভ করুক।

মিহিরকান্তি চৌধুরী : ডেপুটি রেজিস্ট্রার, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, সিলেট এবং লেখক, অনুবাদক ও নির্বাহী প্রধান, টেগোর সেন্টার, সিলেট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত