১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৫:৩৬
সিলেটের খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কলার্সহোমের শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়েল (১৯)-এর মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে শিক্ষাব্যবস্থার অমানবিক দিক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে আজমানের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও অপমান তার ছেলেকে গভীরভাবে আঘাত করেছিল।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দুর্বল ছাত্রদের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়ার কথা থাকলেও, কেন বারবার বেইজ্জত করা হলো? কেন আলাদা করে তাদের উন্নতির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হলো না?”
অন্যদিকে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রেসনোটে বলা হয়, আজমান তার পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়া এবং নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ না করার কারণে হতাশাগ্রস্ত ছিল। প্রেসনোটে উল্লেখ করা হয়, অভিভাবক ও পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
তবে প্রশ্ন উঠেছে—তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই এসএমপি কেন এভাবে একতরফা প্রেসনোট প্রকাশ করলো? আজমানের মায়ের স্পষ্ট বক্তব্যে উঠে এসেছে অপমান ও অবমাননার অভিযোগ। অথচ প্রেসনোটে সেই দিকটির কোনো প্রতিফলন নেই। এতে নিরপেক্ষ তদন্তের বিষয়ে জনমনে সন্দেহের অবকাশ তৈরি হয়েছে।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নাগরিক মহল মনে করছে, পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব হলো সঠিক তদন্ত নিশ্চিত করা, কোনো পক্ষকে আগেভাগে দায়মুক্ত ঘোষণা করা নয়। আজমানের মৃত্যু কেবল একটি পরিবারের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং পুরো শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
আজমানের মৃত্যু এবং পরবর্তী প্রশাসনিক ভূমিকা তাই এক বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—আমরা কি সত্যিই শিক্ষার্থী ও পরিবারের পাশে আছি, নাকি কেবল প্রতিষ্ঠান রক্ষার তাড়নায় সত্যকে আড়াল করছি?
প্রসঙ্গত, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্কলার্সহোম’র শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়াল (১৯)-এর মরদেহ নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এ মৃত্যুর ঘটনায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছেন তার মা। স্কলার্সহোমের শিক্ষকরা আজমান ও তার পরিবারের সাথে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ মায়ের।
এ ব্যাপারে আজমানের বাবা রাশেদ আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি।
এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়- ‘প্রি-টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় কলেজের প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল আজমানের অভিভাবকদের ডাকেন। তারা দুই তিনদিন আগে কলেজে গেলে শিক্ষকরা জানান, প্রি-টেস্টপরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় আজমানকে আগামী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মন খারাপ হয়। এর মধ্যে বুধবার অন্য একটি কলেজে থেকে ফিরে বাসায় এসে সে আত্মহত্যা করে।’
এ ঘটনায় নিহতের অভিভাবরা কোন অভিযোগ করবেন না জানিয়ে মহানগর পুলিশ জানায়, এ বিষয়ে পুলিশের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনার বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
অন্যদিকে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রেসনোটে বলা হয়, আজমান তার পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়া এবং নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ না করার কারণে হতাশাগ্রস্ত ছিল। প্রেসনোটে উল্লেখ করা হয়, অভিভাবক ও পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
তবে প্রশ্ন উঠেছে—তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই এসএমপি কেন এভাবে একতরফা প্রেসনোট প্রকাশ করলো? আজমানের মায়ের স্পষ্ট বক্তব্যে উঠে এসেছে অপমান ও অবমাননার অভিযোগ। অথচ প্রেসনোটে সেই দিকটির কোনো প্রতিফলন নেই। এতে নিরপেক্ষ তদন্তের বিষয়ে জনমনে সন্দেহের অবকাশ তৈরি হয়েছে।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
নাগরিক মহল মনে করছে, পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব হলো সঠিক তদন্ত নিশ্চিত করা, কোনো পক্ষকে আগেভাগে দায়মুক্ত ঘোষণা করা নয়। আজমানের মৃত্যু কেবল একটি পরিবারের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং পুরো শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
আজমানের মৃত্যু এবং পরবর্তী প্রশাসনিক ভূমিকা তাই এক বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—আমরা কি সত্যিই শিক্ষার্থী ও পরিবারের পাশে আছি, নাকি কেবল প্রতিষ্ঠান রক্ষার তাড়নায় সত্যকে আড়াল করছি?
আব্দুল করিম কিম : সমন্বয়ক, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন, সিলেট।
আপনার মন্তব্য