সৈকত ভৌমিক

০৫ মার্চ, ২০১৬ ১২:৩৯

কালোবাজারিদের কাছে জিম্মি সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা


আসেন সবাই মিলে একটা সামান্য হিসেব করে দেখি। মিরপুর স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ২৫৪১৬। যার মধ্যে

ভিআইপি স্ট্যান্ডের ধারণক্ষমতা:-২৭৮৮
আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডের ধারণক্ষমতা:-১৩৫৬
ক্লাব হাউজের ধারণক্ষমতা:- ৬৩৪৪
প্যাভিলিয়ন হসপিটালটি বক্সের ধারণক্ষমতা:- ২৪২
সাউদার্ন কর্পোরেট বক্সের ধারণক্ষমতা:-২৬৮
সাউদার্ন হসপিটালটির ধারণক্ষমতা:- ২৫০

মানে মোট ১১২৪৮ টি টিকেট বরাদ্দ রয়েছে ভিভিআইপিদের জন্যে আর বিদেশী দর্শকদের জন্যে যেসব টিকেটের দাম ৫০০ , ১০০০ , ৩০০০ টাকা করে। এরকম দামের টিকেট আমাদের মতন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যের নাগালের বাইরে।

বাকি রইলো জেনারেল টিকেট ১৪১৬৮টি যেগুলোর দাম ১৫০ টাকা ( Eastern Gallery ) থেকে ২৫০ টাকা ( Northern and Southern Gallery )। বিসিবি ও টিকেট সরবরাহ কারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যাংক যে টিকেট গুলো বিক্রি করার কথা ছিলো ম্যাচের আগের দিন মানে ৬ তারিখের টিকেট ৫ তারিখ বিক্রি হওয়ার কথা ।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাস্তবতা হলো ব্যাংকের এই ১১২৪৮ টি টিকেটের মাঝে ৫০০০ টিকেটও আমাদের মতন আমজনতা কে দিতে পারবে না কারণ ২ তারিখ থেকেই চলছে এই সব টিকেটের বিক্রি কালোবাজারিদের হাতে ঘুরে ঘুরে । যার প্রতিটার দাম সর্বনিম্ন  ৩০০০ টাকা ।

ধরি এই কালোবাজারিরা মোট ৬০০০ টিকেট বিক্রি করছে যার প্রতিটার দাম হলো ৩০০০ টাকা সর্বনিম্ন  । তার মানে দাঁড়ায় ১৮০০০০০০ টাকার টিকেট বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে ।

আর যারা বিক্রি করছে তারা কারা ? কি তাদের পরিচয় ? কিভাবে তাদের হাতে যাচ্ছে এই টিকেট ? টাকার জন্যে যারা এভাবে সাধারণ মানুষের আবেগের চড়া মূল্য নির্ধারণ করতে পারে তারা দেশ ও দশের কি উপকার করছে ?

বাস্তবতা হলো বিসিবি কর্মকর্তা , খেলোয়াড় , বাংলাদেশের বড় বড় হর্তা কর্তা কারোর কাছে টিকেট না থাকলেও টিকেট আছে কালোবাজারিদের কাছে । তাও আবার প্রকাশ্যেই । অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা না !!

ব্যাপারটা এমন না যে এবারই ঘটছে আর আগে ঘটে নি । আইসিসির প্রতিটা টুর্নামেন্টে এই একই ব্যাপার ঘটে আসছে যে কোন দলের খেলাতে , বিশেষ করে  বাংলাদেশ , ভারত , পাকিস্তান , শ্রীলংকার ম্যাচগুলোতে ।

এই টাকাগুলো কোথায় যাচ্ছে ? কাদের কারণে এমন হচ্ছে ?

আইসিসির টুর্নামেন্ট হলে বিসিবির ভাষ্য থাকে যে টিকেটের তত্ত্বাবধানে থাকে আইসিসি তাই তাদের হাত পা বাধা , এসিসির টুর্নামেন্ট হলে একই কথা । কিন্তু প্রশ্ন হলো হাত পা বাঁধা হলে কালোবাজারে টিকেট সরবরাহ করছে কারা?

বিসিবির মনে হয় এদিকে নজর দেয়ার সময় এসে গেছে কারণ এভাবে কালোবাজারির হাতে টিকেট দিয়ে নিজেরা নিশ্চিন্তে বসে থাকতে গিয়ে দেখা যাবে একদিন এই টিকেট নিয়েই ঘটে যাবে কোন এক অপ্রীতিকর ঘটনা যার দায় হতো দিতে হবে চড়া মূল্যে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইমেজে দাগ ফেলে ।

ব্যাংকে বা যে ভাবেই টিকেট দেয়া হোক না কেনো আমরা সেখান থেকেই টিকেট লাইন ধরে নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই নিতে চাই কিন্তু সেটা ঠিক মতন দেয়া হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কিন্তু বিসিবিরই ।

আর এই কালোবাজারিদের শক্তির রহস্য বের করতে বেশী দূরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না যদি থাকে সদিচ্ছা ।

অনুগ্রহ করে আপনারা জেগে উঠুন আর বুঝতে চেষ্টা করুন মানুষের আবেগের স্থান ।

কর্তৃপক্ষের জেগে ওঠার অপেক্ষাতে রইলাম ।

সংযুক্তি:- ছবিতে দেখুন শনিবার সকাল দশটা থেকে টিকেট দেয়ার কথা থাকলেও ইউসিবি ব্যাংকের মিরপুর ব্রাঞ্চে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই সেখানে অপেক্ষারত সাধারণ মানুষের অবস্থান অথচ কেউই নিশ্চিত না আদৌ টিকেট পাবে কিনা। দেশের সাধারণ মানুষের আবেগের স্থানটা বোঝার চেষ্টা করুন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত