বশির আহমদ জুয়েল, নিউইয়র্ক

০২ জুলাই, ২০১৬ ১২:৫১

কী হচ্ছে দেশে?

কী হচ্ছে বাংলাদেশে? কেন হচ্ছে? কারা এসব করছে? এ রকম অনেক প্রশ্নই এখন প্রবাসী বাঙালিসহ বিদেশীদেরও। এক কথায় বলা যায় যে, বিশ্বের সকল দেশের প্রবাসী বাঙালির জিজ্ঞাসা কী হচ্ছে বাংলাদেশে?

ঢাকার গুলশানের রেস্টুরেন্টে রাতের শুরুর দিকে সন্ত্রাসীরা বন্ধুক হামলা চালায়। জিম্মি করে নেয় রেস্টুরেন্টের ভেতরে থাকা সবাইকে। যেখানে অনেক বিদেশী নাগরকও রয়েছেন। পুলিশের সাথে বন্দুকধারীরা যুদ্ধ করে নিহত করেছে ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তাকে। আহত হয়েছেন অনেকেই। যার অধিকাংশই পুলিশবাহিনীর সদস্য।

আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রতিটি বাঙালির চোখ এখন টেলিভিশন ও অনলাইনে। উদ্দেশ্য একটাই গুলশানের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানা। বিশ্বমিডিয়াও ঘটনাটিকে বড় করেই দেখছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানসহ অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের নাগরিক কূটনৈতিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তবে একটি গণমাধ্যম ইতোমধ্যেই বিদেশী দুইজন কূটনীতিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া বিবিসি, রয়টার্স এ হামলাকে আইএস এর হামলা বলে খবর প্রকাশ করেছে।

সর্বোপরি বর্তমান সময়ে গুলশানের এ ঘটনাকে আমরা প্রবাসীরা অশনি বিপদ সংকেত হিসেবেই মনে করছি। যে কথাটি আজ বলা প্রয়োজন তা হলো বাংলাদেশে ব্লগার, লেখক, সাংবাদিক, মুয়াজ্জিন, ইমাম, পুরোহিত, শিক্ষক, বিদেশী নাগরিকসহ অনেক হত্যাই ছিলো এক একটি 'বিচ্ছিন্ন' ঘটনা। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো চলমান এ ঘটনাটি কী হিসেবে মন্তব্য করবেন কর্তা ব্যক্তিরা।

ঘটনার বিস্তৃত বিবরণে আমি যাচ্ছি না। কারণ প্রতি মুহূর্তের খরব অনলাইন ও টেলিভিশনের কল্যাণে সবাই পাচ্ছি। কেবল বলতে চাচ্ছি যে, বাংলাদেশের আজকের পরিস্থিতির জন্য কাকে দায়ী করবো আমরা। অতি সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর জন্যই প্রবাসী বাঙালিরা বহি:বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। আজকের ঘটনায় যদি সত্যি সত্যি দুইজন কূটনৈতিক নিহত হয়ে থাকেন, কিংবা জিম্মিদের মধ্যে থাকা কোনো কূটনৈতিককে যদি হত্যা করা হয়, তাহলে কী হবে আগামীর বাংলাদেশ? আর বিশ্বের নানা দেশে থাকা বাঙালিরাই বা মাথা উঁচু করে কথা বলকে কেমন করে?

আইএস প্রতিটি ঘটনার পরেই দায় স্বীকার করেছে। এবারের ঘটনার সমাপ্তির আগেই দায় স্বীকার করে নানা শর্ত জুড়ে দেয়ার কথাও বলা হচ্ছে। এতেই বোঝা যায় যে, বন্দুকধারীরা কতটা শক্তিশালী। তাদের শক্তির কাছে আমার দেশের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা আজ পরাজিত কেনো? পুলিশ কর্মকর্তা নিহতের খবর আসে। কিন্তু কোনো সন্ত্রাসী নিহত তো দূর থাক গ্রেফতারের খবরও আসে না। যদিও সন্দেহজনকভাবে দুইজনকে আটক করার খবর প্রকাশ হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হলো আটককৃতরাই বা কারা?

আমরা এখনো ভুলে যাইনি বাংলা ভাই আর আব্দুর রহমান কাহিনী। রাতের বেলাই শুরু হয়েছিলো জঙ্গি আব্দুর রহমানকে গ্রেফতারের অভিযান। সেখানে কোনো রক্তপাত ছাড়াই তার সকল সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় বলবো, বাংলাদেশে জঙ্গিদের গ্রেপ্তার সম্ভব। সম্ভব জঙ্গিবাদ নির্মূল।

(লেখাটি রাতে যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালে তৈরি করা)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত