বশির আহমদ জুয়েল

০৪ অক্টোবর, ২০১৬ ১৯:০৫

নার্গিস ফিরে আসুক সুস্থ হয়ে

খাদিজা আক্তার নার্গিস। মেধাবী ছাত্রীটি মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করতে করতে গেছে ঢাকায়।

ছাত্রলীগ নামধারী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক জানোয়ারের আক্রমনে রক্তাক্ত হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়া ভিডিও ক্লিপে কুপানোর দৃশ্যটি জঙ্গি হামলাকেও হার মানিয়েছে।

জঙ্গিরা হামলা করার সময় নিজেদের মুখ ঢেকে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু বদরুল আলম নামের এই অমানুষটি রাস্তায় ফেলে নার্গিসিকে প্রকাশ্যে কুপিয়েছে।

সরকার দলীয় ছাত্রলীগ এই নেতার এমন কর্মকান্ডে ছাত্র সমাজ নিশ্চয়ই লজ্জিত! সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজটি কেবল দেশেই নয় বিদেশের অনেক পর্যটকদের কাছেও পরিচিত!

আজ এই ঘটনায় কলুশিত হলো এর ঐতিহ্য। পরীক্ষার হল থেকে বের হতে না হতেই বদরুল ধারালো অস্ত্র নিয়ে কেবল কি নার্গিসকে কুপিয়েছে?

আমি তো মনে করি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজটিকেই আঘাত করেছে। সুশীল সমাজকেও যেন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিলো ছাত্রলীগ নামধারী এই ক্যাডারটি।

ইতিহাস ঘাটিয়ে দেখা যায় যে ১২৪ বছরে এমন ঘটনা আর ঘটে নি। খাদিজা আক্তার নার্গিস সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আক্রমণকারী বদরুল আলম শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা।

সে একসময় নার্গিসদের ববাড়িতে লজিং মাস্টার ছিলো। সাথে সাথে ঘটনাটি অনলাইনে প্রকাশানুযায়ী ৪ অক্টোবর সোমবার বিকেলে এমসি কলেজের পুকুর পারে, মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে এবং হামলাকারী বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছে।

যদিও এ কাজটি আক্রমনের শুরুতেই করতে পারলে নার্গিসের অবস্থা এতোটা জটিল হতো না! আশঙ্কাজনক অবস্থায় নার্গিসকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

বর্তমানে স্কয়ার হসপিটালে ভর্তি আছে তবে অবস্থা অপরিবর্তিই।

নার্গিস সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে। সিলেটের মতো সম্প্রীতির নগরীতে এই ঘটনায় দল মত নির্বিশেষে বিচারের দাবীতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া জরুরী বলে মনে করছি।

তবে সকলের প্রত্যাশা হোক, নার্গিস ফিরে আসুক সুস্থ হয়ে। সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ সামাজিক রাজনৈতিক নেতারাও সক্রিয় ভূমিকা রেখে সিলেটকে সকল কালো ছায়ামুক্ত রাখাটা কেবল সময়ের দাবী নয় প্রতিটি নাগরিকের অধিকার।

লেখক: বশির আহমদ জুয়েল, মন্ট্রিয়ল, কানাডা।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত