আসিফ মোক্তাদির

১৭ মার্চ, ২০২০ ২৩:০৭

করোনাভাইরাসের ফলে আমেরিকার অর্থনীতিতে বিপর্যয়

নভেল করোনাভাইরাসের ফলে আমেরিকার অর্থনীতিতে ইতোমধ্যেই মন্দাবস্থা দেখা দিতে শুরু করছে। অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী এই দেশের উপর অন্যান্য অনেক দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। আমেরিকার জিডিপি বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রায় ৩৩.০৬ শতাংশ। তাই আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা দেখা দিলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়া খুবই স্বাভাবিক।

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের ফলে ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক খরা দেখা দিবে। করোনাভাইরাসের ফলে আমেরিকাতে বিভিন্ন খাতে কিরকম প্রভাব পড়েছে তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক-

শেয়ার বাজারে ধস: করোনাভাইরাসের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শেয়ারবাজার। দ্যা ডো জোন্স নামে শীর্ষে থাকা শেয়ারের প্রায় ২০০০ পয়েন্ট কমেছে সোমবারে। যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তাছাড়া S & P 500, NASDAQ 100 ইত্যাদি শেয়ারের দাম নিম্নমুখী।

রপ্তানি খাতে বিপর্যয়: ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের পর আমেরিকা থেকে রপ্তানি কমেছে প্রায় ০.৯ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে চীনে রপ্তানি কমেছে ১৮.৭ শতাংশ, জাপানে প্রায় ১৯.১ শতাংশ।

তেলের দাম নিম্নমুখী: ২০১৯ সালে চীন বিশ্বের প্রায় ১৪ শতাংশ উদ্ধৃত তেলের চাহিদা পূরণ করে। চীনে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় আমেরিকায় তেলের দামের উপর এর প্রভাব পড়েছে। গবেষকরা বলছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই তেলের দাম দুই ডলারের নিচে নেমে আসবে।

কৃষিখাতে বিপর্যয়: গত কয়েকমাস থেকেই চীনের সাথে আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধের জন্য আমেরিকার কৃষিখাতের সাথে যারা জড়িত তারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে ছিলেন। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসলেও বর্তমানে ভাইরাসের জন্য তারা আবার ব্যাপক ক্ষতির মুখে। চীন সাধারণত আমেরিকা থেকে ব্যাপক পরিমাণ সয়াবিন এবং ভুট্টা আমদানি করে থাকে। ভাইরাসের জন্য এসব আমদানি বন্ধ হওয়ার ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

চীন থেকে পণ্য আমদানি ব্যাহত: আমেরিকার অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসার জন্য চীনের উপর নির্ভরশীল। চীনে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য আমদানি করতে ব্যাহত হবে। তাছাড়া আমেরিকান অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন: স্টারবাকস, মাইকেল কোর, এপল ইত্যাদি চীনে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে এসব প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। এতে আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা দেখা দিবে।

পর্যটন খাতে ব্যাঘাত: ভাইরাসের ফলে ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ইউরোপ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তাছাড়া আমেরিকার এয়ারলাইন্স, ডেলটা এয়ারলাইন্স ইত্যাদি মার্চের শেষ পর্যন্ত চীন থেকে আগত এবং বহির্গত ফ্লাইট বাতিল করেছে। পর্যটন খাত থেকে যে আয় হত তা ভাইরাসের ফলে এ খাতে ঘাটতি দেখা দিবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত