বিনোদন ডেস্ক

২৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ০১:০৪

বৃহন্নলা ছবির গানও নকল!

বর্তমানে ঢাকাই ছবিতে সবচেয়ে সমালোচিত শব্দ ‘বৃহন্নলা’। ২০১৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য সেরা কাহিনি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এটি। এ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবেও পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন এর পরিচালক মুরাদ পারভেজ।

অথচ সেই পরিচালক-চিত্রনাট্যকারের বিরুদ্ধেই গল্প ‘চুরি’র গুরুতর অভিযোগ উঠেছে কলকাতা থেকে। তাদের দাবি, ‘বৃহন্নলা’র প্রায় পুরো গল্পই নেওয়া হয়েছে সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের ছোট গল্প ‘গাছটি বলেছিল’ থেকে।

গল্প নিয়ে বিতর্কের শেষ হতে না হতেই ছবিটি এবার প্রশ্নবিদ্ধ হলো গান চুরির অভিযোগে। এবার অভিযোগ উঠেছে ২০১৪ সালের শ্রেষ্ঠ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষিত এ চলচ্চিত্রটির একটি গান বলিউডের ছবি থেকে হুবহু নকল করা। শুধু হিন্দি কথাগুলোকে বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে। অথচ গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গানটির গায়িকা দেবলীনা সুরের নাম!

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ২০০৯ সালে বলিউড ছবি ‘রেইন কোট’-এ প্রায় একই কথার একটি গান ব্যবহার করা হয়েছিল। যার সুরটিও বেশ কাছাকাছি। ভারতের প্রশংসিত সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্রর সংগীতায়োজন ও সুরে গানটির কথা ছিল- ‘পিয়া তোরা ক্যায়সা আভিমান/সাঘান সাওয়ান লায়ি/কাদাম বাহার/মাথুরা সে ডোলি লায়ে/চারো কাঁহার।’ আর ‘বৃহন্নলা’ ছবিতে ব্যবহৃত গানের কথা হলো- ‘প্রিয় তোর কিসের অভিমান/ সঘন শ্রাবণ এল পায়ে পায়ে/ মথুরার পালকি এল চাদর গাঁয়ে/ এল না এল না প্রিয় সখা আমার/ আঙিনা হলো সুনসান।’

কলকাতায় রবীন্দ্রসংগীতের ওপর পড়াশোনা করা একজন শিল্পীর এমন চুরি কান্ডে সমালোচনার ঝড় উঠেছে নতুন করে। তবে গানটির বিষয়ে এর সংগীত পরিচালক ইমন সাহা দিলেন নতুন তথ্য।

তিনি জানালেন, ‘এটা নকল কিছু নয়। এই সুর হলো তিন-চার শ’ বছর আগের একটি বান্দিস। তাই ছবিটি সেন্সরে জমা দেওয়ার সময় গানটির সুর প্রচলিত বলে দেওয়া হয়েছে। আর গানের কথার বাংলা অনুবাদক ও কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নাম গেছে দেবলীনার।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বান্দিসটি আমি শিখেছি এ আর রাহমান স্যারের কাছে যখন পড়তে যাই। এখনও প্রায়ই এই বান্দিসটি আমি গাই। এটি নকল নয়।’

কিন্তু ইমন সাহার কথা মেনেও এই গানে চুরির অভিযোগ ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না। কেননা, ইমন বলছেন গানের সুরটি প্রচলিত একটি প্রাচীন সুর। কিন্তু ‘বৃহন্নলা’ ছবিতে এই গানের সুরকার দাবি করা হয়েছে দেবলীনাকে! আর হিন্দি থেকে বাংলার রুপান্তর করে বড়জোর অনুবাদক হতে পারেন দেবলীনা। কিন্তু তিনি নিজেকে এই গানের গীতিকার দাবি করে বসেছেন। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে দেবলীনা দেশের বাইরে রয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ছবির গল্প চুরির দায়ে অভিযুক্ত মুরাদ পারভেজ গান নকলের অভিযোগে মুখ খুলেনেনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত