সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০১:৫৭

প্রতি মাসে কলড্রপ ও ক্ষতিপূরণের তথ্য দিতে হবে অপারেটরদের

সেলফোন অপারেটরদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি মাসে কলড্রপ ও এর জন্য ক্ষতিপূরণের হিসাব নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দিতে হবে। রোববার সচিবালয়ে অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এ নির্দেশনার কথা জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। বৈঠকে সেলফোন অপারেটরদের সেবার মান, কলড্রপ ও বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা হয়।

কলড্রপে ক্ষতিপূরণ প্রদান বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, বিটিআরসির মতামত ও অপারেটরদের দেয়া কাগজপত্র থেকে দেখা যায়, ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) নির্ধারিত কলড্রপ হারের চেয়ে অপারেটরদের কলড্রপ হার তার নিচেই রয়েছে। তবে এর পরও যদি অতিরিক্ত কলড্রপ হয়, তার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে শুরু করেছে অপারেটররা। গ্রাহকদের এসএমএসের মাধ্যমে এটি জানিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে তারা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে যেহেতু এখনো এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেজন্য আইটিইউ নির্ধারিত মানের বেশি কতগুলো কলড্রপ হচ্ছে, এর বিপরীতে কয়টিতে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে এবং কতজন গ্রাহককে এসএমএসের মাধ্যমে তা জানানো হয়েছে— এসব বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি মাসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে তাদের। এ প্রতিবেদনের কপি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে বিটিআরসি। এর ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি তদারক করবে। চলতি মাসের প্রতিবেদন আগামী ফেব্রুয়ারিতে দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারিতে সেলফোনে কলড্রপপ্রতি ১ মিনিট করে ক্ষতিপূরণ দিতে অপারেটরগুলোকে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বৈঠকে টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শওকত মোস্তফা বলেন, এ নির্দেশনা বাংলালিংক ছাড়া আর কোনো অপারেটরই অনুসরণ করেনি।

অপারেটরদের সেবার মান প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেবার মান নিশ্চিত করতে অপারেটররা তাদের সমস্যার কথা উল্লেখ করেছে। বর্তমানে ডাটার চাহিদা বেড়েছে, ফলে তরঙ্গের ব্যবহারও অনেক বেড়েছে। ভয়েসের ক্ষেত্রে তরঙ্গের ব্যবহার তুলনামূলক কম। ডাটার কারণে তরঙ্গের ওপর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ভয়েস সেবার মানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ সমস্যা সমাধানে অপারেটররা দুই বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছে। এর একটি হলো প্রত্যক্ষ অবকাঠামো ভাগাভাগির সুযোগ। আর অন্যটি হলো প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা। এ বিষয় দুটি নিশ্চিত করতে পারলে সেবার মান আরো উন্নত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে অপারেটররা। এসব বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে চলতি মাসের মধ্যেই মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হবে।

প্যাকেজ নিয়ে গ্রাহক হয়রানি প্রসঙ্গে তারানা হালিম বলেন, অপারেটররা বলছে, অনুমোদন নিয়ে তারা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে। তবে এ বিষয়ে বৈঠকে তাদের আবারো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, গ্রাহক গ্রহণ করলেই কেবল প্যাকেজ চালু করা যাবে। অন্যথায় নয়।

বিদেশে মিস কল দিলে টাকা কেটে নেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারিগরিভাবে এটা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে অপারেটররা। বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখতে বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানান তারানা হালিম।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পেটার-বি ফারবার্গ, বাংলালিংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এরিক অস, রবির এমডি ও সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, টেলিটকের এমডি গিয়াস উদ্দিন আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত