সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০৩:০৪

এশিয়ায় তথ্যকেন্দ্র নির্মাণে শতকোটি ডলার বিনিয়োগ করবে ফেসবুক

সিঙ্গাপুরে নতুন একটি তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে ফেসবুক, যা এশিয়ায় সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির প্রথম তথ্যকেন্দ্র হবে। তবে বিশ্বে এর অবস্থান হবে ১৫তম।

তথ্যকেন্দ্রটি নির্মাণে শতকোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর হিন্দুস্তান টাইমস ও সিনেট।

ফেসবুকের তথ্য অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরে ১ লাখ ৭০ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে এ তথ্যকেন্দ্রটি নির্মিত হবে। এতে তাদের বিনিয়োগ শতকোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ২০২২ সাল নাগাদ এটির কার্যক্রম শুরু হবে। এতে কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তথ্যকেন্দ্রটি চালু হলে সেখানে কয়েকশো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি সিঙ্গাপুর ও এশিয়ায় তাদের উপস্থিতি বাড়বে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে ফেসবুকের তথ্যকেন্দ্রগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে চালু রয়েছে।

২০২০ সালের শেষ নাগাদ ফেসবুক গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন ৭৫ শতাংশ কমানোর প্রত্যাশা করছে। একই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নিজস্ব পরিচালন ব্যবস্থায় বিদ্যুতের উৎস হিসেবে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। এশিয়ার প্রথম তথ্যকেন্দ্রটিতেও শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করছে সিঙ্গাপুরে।

এশিয়ার প্রথম তথ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য সিঙ্গাপুরকে বেছে নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি কারণে তারা সিঙ্গাপুরকে বেছে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— দেশটির শক্তিশালী অবকাঠামো, ফাইবার অ্যাকসেস, স্থানীয় দক্ষ কর্মী এবং ব্যবসা পরিচালনায় দেশটির সরকারের সহযোগিতা।

ফেসবুক বিশ্বব্যাপী তথ্যকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরে নতুন তথ্যকেন্দ্রটি চালুর ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকের তথ্যকেন্দ্র বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট টমাস ফুরলং বলেন, এশিয়ায় তাদের প্রথম তথ্যকেন্দ্রটি ২০২২ সালের মধ্যে চালুর প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এটি তাদের সার্ভার ও তথ্যপ্রযুক্তি কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহূত হবে।

এশিয়া-প্যাসিফিক ফেসবুকের বৃহৎ বাজার। গত জুনে অঞ্চলটিতে ফেসবুকের দৈনিক ব্যবহারকারী গড়ে ৫৪ কোটি ৬০ লাখে পৌঁছেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির মোট ব্যবহারকারীর প্রায় ৩৭ শতাংশ। ফেসবুকের মোট গ্রাহক বৃদ্ধিতে এ অঞ্চল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। তবে ফেসবুকের রাজস্ব আয়ে অঞ্চলটি পিছিয়ে রয়েছে। ফেসবুকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির মোট রাজস্বের ১৮ শতাংশ জোগান দিয়েছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল, যা একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের অর্ধেকেরও কম। তাই এ অঞ্চল থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরে তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করবে প্রতিষ্ঠানটি।

সিঙ্গাপুরে বর্তমানে ফেসবুকের প্রায় এক হাজার কর্মী রয়েছে। দেশটির স্থানীয় স্টার্টআপদের সহায়তা দিচ্ছেন তারা।

টমাস ফুরলং বলেন, এশিয়ায় তাদের গ্রাহক দ্রুত বাড়ছে। তাই এ অঞ্চলের গ্রাহকদের উন্নত সেবা দিতে এখানে তথ্যকেন্দ্র চালু করা হচ্ছে।

ফেসবুক জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের আর্দ্র আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্যকেন্দ্রটির নকশা করা হবে। এতে নতুন স্টেটপয়েন্ট লিকুইড কুলিং সিস্টেম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এর ফলে ২০ শতাংশ পর্যন্ত পানির খরচ কমানো সম্ভব হবে।

সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী চ্যান চুন সিং বলেন, তাদের দেশে ফেসবুকের উপস্থিতিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। কারণ এর মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।

ফেসবুক ছাড়াও এশিয়ায় তথ্যকেন্দ্র নির্মাণে সম্প্রতি বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগল। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরে তৃতীয় তথ্যকেন্দ্র উন্নয়নে তারা বিনিয়োগ করছে। এছাড়া এশিয়ার তাইওয়ানে গুগলের আরেকটি তথ্যকেন্দ্র রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত