আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ জুন, ২০২০ ২১:৩৭

সবার আগে শিশু-কিশোরদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে বয়স্করা। কিন্তু, তাদের দেহে আবার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও কম। এই লক্ষ্যেই তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে সবার আগে পরিবারের শিশু-কিশোরদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাজ্য সরকারের এক শীর্ষ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

প্রফেসর পিটার ওপেনশ নামের এ বিজ্ঞানী যুক্তরাজ্যের 'নিউ অ্যান্ড ইমার্জিং র‍্যাস্পেরটরি ভাইরাস থ্রেটস অ্যাডভিজরি গ্রুপ' বা নার্ভট্যাগের একজন উপদেষ্টা।

তার মতে, অল্পবয়সীদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকলেও, তাদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়ার মধ্যে দিয়ে অবসরভাতা ভোগী বয়স্কদের পরোক্ষভাবে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব।  ভ্যাকসিন অল্পবয়সীদের দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে সহজেই সংযোজিত হয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এর মাত্রা কম থাকায় সে ক্ষেত্রে সফলতার মাত্রাও অনেক কম।

তাই যুক্তরাজ্যে করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আসা মাত্রই আগে অল্পবয়সী শিশু-কিশোরদের দেহে তা প্রয়োগের মাধ্যমে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের সুরক্ষার পরামর্শ দেন তিনি। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।

পিটার ওপেনশ তার পরামর্শটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডসের 'বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক' কমিটিকে। সেখানে তিনি জানান, এ আগেও ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারি মোকাবিলায় অধিক ঝুঁকিতে না থাকা স্বত্বেও আগে শিশুদেরই আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। তাই বয়স্কদের সুরক্ষায় এটি একটি প্রমাণিত পদ্ধতি। এতে করে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে তাদের মাধ্যমে বয়স্কদের দেহে সংক্রমণ ছড়াবে না।

বিশ্বজুড়ে এখন জোরতালে করোনাভাইরাস স্থায়ীভাবে মোকাবিলায় সক্ষম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের গবেষণা চলছে। এর মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভ্যাকসিন চলতি বসন্তেই বাজারে আসতে পারে। এই গবেষণার অর্থায়ন করছে যুক্তরাজ্য সরকার। তার আগেই ব্রিটিশ বিজ্ঞানী এ পরামর্শ দিলেন।

আলোচিত বিজ্ঞানী লন্ডনের বিখ্যাত ইম্পেরিয়াল কলেজের একজন অধ্যাপক এবং পরীক্ষামূলক ওষুধ গবেষক। তিনি জানান, নার্ভট্যাগ নামের সরকারি পরামর্শক সংস্থাটি ইতোমধ্যেই নানা ধরনের জনসমষ্টিকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসার বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে একটি গবেষণাপত্র তৈরির কাজ করছে।

ওই গবেষণাপত্রের সূত্র ধরেই ভিন্ন একটি জনসমষ্টিকে প্রথমে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার মাধ্যমে আরেকটি বয়স শ্রেণির ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি। শিশুদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদেরকেও ঝুঁকি বিবেচনায় সবার আগে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করেন এ বিজ্ঞানী।

যুক্তরাজ্যের অনেক বিজ্ঞানীই প্রফেসর পিটার ওপেনশ'র মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে সমর্থন জানিয়েছেন। তার পরামর্শের যৌক্তিকতার বিষয়ে প্রমাণ দিয়ে ব্রিটিশ সোসাইটি অব ইমিউনোলজির বিশেষজ্ঞ আর্নে আকবর বলেন, বয়স্কদের দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরিতে ভ্যাকসিন খুব একটা কার্যকর হয়না, এর আগেও অন্যান্য রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর এমন ফলাফল পাওয়া গেছে। তাই ভ্যাকসিন প্রদানের পাশাপাশি বয়স্কদের সুরক্ষায় অন্যান্য পদক্ষেপও নিতে হবে আমাদের। সেক্ষেত্রে শিশুদের প্রথমে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা একটি বাস্তবসম্মত উপায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত