আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ নভেম্বর, ২০২১ ১১:৩৬

আফগানিস্তানে টিভি নাটকে নারী উপস্থিতি নিষিদ্ধ

আফগানিস্তানে টিভি নাটকে নারীদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। নতুন আইন করে টিভি নাটকে নারীদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করল কট্টরপন্থি এই গোষ্ঠীটি। সোমবার (২২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এছাড়া নারী সাংবাদিক ও টেলিভিশনে কর্মরত উপস্থাপিকাদেরও হিজাব পরার নির্দেশনা দিয়েছে আফগান সরকার। যদিও তাদেরকে কোন ধরনের হিজাব পরতে হবে সেটি নতুন ওই গাইডলাইনে উল্লেখ নেই। আফগান সাংবাদিকরা বলছেন, আফগান সরকারের কিছু নিয়ম অস্পষ্ট এবং সেগুলোর ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এরপর আশঙ্কা বাড়ছে যে, তালেবান কার্যত কট্টরপন্থার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং নারীদের ওপর কঠোর নিয়মকানুন আরোপ করছে।

বিবিসি বলছে, তালেবানের সর্বশেষ গাইডলাইনগুলো মূলত আফগান টেলিভিশন চ্যানোলগুলোকে লক্ষ্য করেই সামনে আনা হয়েছে। এই গাইডলাইনে ৮টি নতুন নিয়ম রয়েছে।

নতুন নিয়মে ইসলাম বা শরীয়াহ পরিপন্থি এবং আফগান মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কোনো সিনেমা তৈরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া সিনেমার দৃশ্যে পুরুষের অনাবৃত শরীর দেখানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কৌতুক ও বিনোদনের অনুষ্ঠানগুলোতে ধর্মকে অসম্মান করে এমন এবং আফগানদের জন্য আক্রমণাত্মক হিসেবে মনে হতে পারে এমন অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশি সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে পারে এমন বিদেশি সিনেমা প্রদর্শনের ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, আফগান টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রধানত বিদেশি নাটকই প্রচার করে থাকে এবং সেসব নাটকের প্রধান চরিত্রেও থাকেন নারীরা।

আফগানিস্তানের গণমাধ্যম বিষয়ক একটি সংগঠনের সদস্য হুজাতুল্লাহ মুজাদ্দেদি তালেবানের নতুন এই বিধিনিষেধকে অপ্রত্যাশিত বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, তালেবানের আরোপিত নতুন নিয়মের কয়েকটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এই নিয়ম কার্যকর হলে সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

তালেবানের নিষ্ঠুর শাসনের ভয় বিরাজ করছে আফগানিস্তানজুড়ে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনামলে নারীদের শিক্ষা ও চাকরির অধিকার ছিল না। তারা পুরুষসঙ্গী ছাড়া একা বাড়ি থেকে বের হতে পারতেন না।

এ কারণেই গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নেওয়ার পর থেকেই ব্যাপকভাবে এই উদ্বেগ জারি রয়েছে যে, আবারও হয়তো আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত