সিলেটটুডে ডেস্ক:

০৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ২৩:৫২

নিন্দার মুখে সু চির সাজা কমল দুই বছর

বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি নেত্রী অং সান সু চির সাজা দুই বছর কমানো হয়েছে। রাজধানী নেপিদোর একটি বিশেষ আদালত তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

সু চির বিরুদ্ধে ১১টি মামলার মধ্যে সোমবার একটির রায় দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কানি দেওয়া ও করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুটি অভিযোগে দুই বছর করে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৭৬ বছরের এ নেত্রীকে। খবর এএফপি, বিবিসি ও এনডিটিভির

এই রায়ের পর চীন চুপ থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নিন্দা জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করে। তাদের অনেকে বলছে, এই রায়ের মধ্য দিয়ে সু চিকে বছরের পর বছর বন্দি রাখার প্রক্রিয়া শুরু হল।

স্বাধীনতার পর প্রায় ৯০ ভাগ সময় সামরিক শাসনের অধীনে থাকা মিয়ানমারের সংক্ষিপ্ত গণতান্ত্রিক যাত্রার ইতি ঘটে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। জরুরি অবস্থা জারি করে সরকারের প্রধান হন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হদ্মাইং।

বিনা বিচারে বন্দি করা হয় সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ শীর্ষ নেতাদের। একই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে মিন্টেরও চার বছর কারাদণ্ড হয়। তার সাজাও দু’বছর মওকুফ করা হয়েছে।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, সু চিকে জীবনের বাকি সময় কারাগারে রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দাপ্তরিক গোপনীয় আইন ভঙ্গ, অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ মামলা চলছে। এসব মামলার রায়ে তার ১০০ বছরের জেল হতে পারে। এর আগেও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় ২০ বছর বন্দি ছিলেন তিনি। তার প্রতি বিশ্বের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি থাকলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কিত হন সু চি।

রায় ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক বিবৃতিতে সু চির মুক্তি দাবি করে বলেছেন, এ ঘটনা গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থাকে তিরস্কারের সমান।

নোবেল পিস প্রাইস কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসন সু চির সাজায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এই ঘটনা মিয়ানমারের গণতন্ত্রের পথে বাধা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, সু চির বিরুদ্ধে এই রায় দেশটির 'স্বাধীন ব্যবস্থার শ্বাসরোধ' করার শামিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট বলেছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়। একইসঙ্গে তিনি মিয়ানমারে নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বর দমন-পীড়ন বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাজ্য বলেছে, সু চির সাজার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ও স্বাধীন ব্যবস্থাকে আরও সংকুচিত করা হলো। তারা সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত