সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ জুলাই, ২০১৭ ০২:১১

আমরা অন্যায়ের শিকার হলাম, দাবি বরিশালের সাবেক ডিসির

প্রত্যাহার হওয়া বরিশালের জেলা প্রশাসক গাজী মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান। ছবি: ফেসবুক

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনকে হয়রানির ঘটনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রত্যাহার হওয়া দুই জেলা প্রশাসকের (ডিসি) একজন বলেছেন, তারা একটি অন্যায় পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।

সরকার বলছে, 'নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করতে পারায়' বরিশাল ও বরগুনার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই বদলির ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বরিশালের জেলা প্রশাসক গাজী মুহাম্মদ সাইফুজ্জামান বলেন, সরকার যে কোন সিদ্ধান্ত আমরা মানতে বাধ্য। তবে বাস্তব পরিস্থিতি হলো আমরা ব্যর্থ হইনি, আমরা একটি অন্যায় পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।"

বিবিসি বাংলার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, "এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যার সাথে আমরা কোনভাবেই সম্পৃক্ত না। কারণ আদালত মামলা আমলে নিয়েছিল অন্যায়ভাবে, জামিন বাতিল হয়েছে অন্যায়ভাবে, ঘটনার ছবি তোলা হয়েছে, পুলিশ যেভাবে ইউএনওকে নিয়ে গেছে তাও অন্যায় হয়েছে। "

"এ প্রক্রিয়াগুলোর সাথে তো আমাদের কোন সরাসরি ইনভলভমেন্ট নাই। কিন্তু এ কারণে যদি আমরা শাস্তি পাই - সেটাতো আমরা অন্যায়ের শিকার হলাম", জানান সাইফুজ্জামান।

এ বছর স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের একটি শিশুর আঁকা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে কার্ড ছাপানোর জেরে তারিক সালমনকে আটক করার পর, এ নিয়ে ব্যাপক ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই সরকার সোমবার এসব ব্যবস্থা নিলো।

এ দুই ডিসিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফেরত আনা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসক হিসেবে নতুন দুজনের নামও ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে বরগুনার ইউএনওকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়ায় কোন ব্যত্যয় হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ। ওই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র এবং আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন এবং এ কমিটিকে আগামী পনের দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ইউএনও থাকার সময় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ছাপান যেটি পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা ছিলো। পরে সে ছবিকে 'বিকৃত' অভিযোগ করে বরগুনার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয় বরিশালে। মামলা করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়েদুল্লাহ সাজু। আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যেই ওবায়েদুল্লাহকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে।

ওই মামলায় হাজির হওয়ার পর তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে এমন ছবি প্রকাশের পর দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয় জনপ্রশাসনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও তার বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, মামলার বাদী ওবায়েদুল্লাহ সাজু গত রোববার মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত