সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ নভেম্বর, ২০১৯ ১৮:০৬

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি, ক্ষমা চাইলেন যবিপ্রবি ভিসি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ক্যালেন্ডারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেছেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে ছবি বিকৃতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় আগামী ২০ নভেম্বর মামলার শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

সোমবার (৪ নভেম্বর) ছবি বিকৃতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সশরীরে হাজির হয়ে ভিসিসহ তিনজনের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এমকে রহমান। যবিপ্রবির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কেএম সাইফুদ্দিন আহমেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

পরে আইনজীবী কেএম সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যবিপ্রবির ভিসিসহ তিনজন হাই কোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। আদালতকে ভিসি জানিয়েছেন, ক্যালেন্ডারে ছবি বিকৃতির কোনও ঘটনা ঘটেনি। অন্য কেউ ডেস্ক ক্যালেন্ডারে ছবি বিকৃতির দায় চাপাতে চাচ্ছে। রিট আবেদনকারী আনোয়ার হোসেন বিপুল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছবি বিকৃতির অভিযোগ এনেছেন, যা ভিত্তিহীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের লাঞ্ছিত করার দায়ে এর আগে তাকে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

এর আগে যবিপ্রবির ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃতির অভিযোগে রিট দায়ের করেন যশোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বিপুল। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরামর্শে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি।

ওই প্রতিবেদনে ছবি বিকৃতির সত্যতা এবং এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায় খুঁজে পায় তদন্ত কমিটি।

কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবি এবং ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করা হয়নি। এছাড়া, ২০১৮ সালের ক্যালেন্ডারে জাতির পিতার ছবির ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির নাম লেখাও সমীচীন হয়নি। ২০১৯ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারটি পুনর্মুদ্রিত। আগের (প্রথম) প্রিন্ট করা কপিতে জাতির পিতার ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিদ্র করে স্পাইরাল বাইন্ডিং করা হয়। এছাড়া, জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি (ছবির মাথা কেটে) বিকৃত করা হয়, যা প্রথম মুদ্রিত ডেস্ক ক্যালেন্ডার থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা করেননি। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই তারা দায় এড়াতে পারেন না। ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত