সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:৫৫

এমপিকে পেট্রল না দেয়ায় ফিলিং স্টেশনে কেনাবেচা বন্ধ!

ফিলিং স্টেশনগুলোতে ধর্মঘট চলাকালে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের গাড়িতে পেট্রল না দেয়ার প্রতিবাদে সোমবার শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের ব্যক্তিগত সহকারী ও জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম স্বপন জানান, ঠাকুরগাঁও সফর শেষে রোববার বিকালে ঢাকা যাওয়ার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পথে রওনা দেন রমেশ চন্দ্র সেন। পথে তাকে বহনকারী দুটি গাড়ি শহরের চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে পেট্রল নেয়ার জন্য যায়। কিন্তু ফিলিং স্টেশনের কর্মীরা ধর্মঘটের কথা বলে গাড়ি দুটিতে পেট্রল দিতে অস্বীকৃতি জানান।

তিনি জানান, সে সময় একটি গাড়িতে সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বসে ছিলেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আরেকটি ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রল নিয়ে সৈয়দপুরের দিকে রওনা দেন।

এমপিকে অসম্মান করার প্রতিবাদে সোমবার বিকাল থেকে চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের সামনে এল পাতাড়ি ট্রাক ও পিকআপ রেখে পেট্রল-ডিজেল বেচাকেনা বন্ধ করে দেন বিক্ষুব্ধ মোটর পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন শ্রমিক নেতা এন্তাজুল হক বলেন, ‘এমপিকে অসম্মান করার জন্য এই পাম্প থেকে কোনো শ্রমিক ডিজেল-পেট্রল কিনবে না।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, লোক দেখানো পেট্রল বিক্রি না করলেও, পাম্প থেকে একটু দূরে বেশি দামে পেট্রল ঠিকই বিক্রি করেছে।

স্থানীয় ট্রাক, ট্যাংক, লরি, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জয়েনুদ্দীন বলেন, এলাকার এমপি নিজে একটি পাম্পে পেট্রল নিতে গিয়েছেন। আর কর্মচারীরা তাকে পেট্রল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এটা করে ওই পেট্রল পাম্প কর্তৃপক্ষ তাকে অসম্মান করেছে। এ ঘটনায় এমপির অনুসারী শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তাই তারা পাম্পটির যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে চৌধুরী ফিলিং স্টেশনের বিতরণকর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এমপি স্যারের গাড়ি যখন এখানে পেট্রল নিতে আসে, সে সময় অনেক মোটরসাইকেল আরোহী পেট্রল নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাদের পেট্রল দিতে অস্বীকার করায় মোটরসাইকেল আরোহীরা এমপির গাড়ি দেখিয়ে বলতে থাকেন, দেখব তাকে (এমপিকে) পেট্রল দিচ্ছেন কি না। এ কথা শুনে জনরোষের ভয়ে এমপি স্যারের গাড়িতে পেট্রল দিতে রাজি হইনি।’

বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঠাকুরগাঁওয়ের সভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। কর্মবিরতি সমিতির সিদ্ধান্ত। এ ঘটনা জেনে পরে আমিই অন্য একটি পাম্প থেকে তাদের পেট্রল নেয়ার ব্যবস্থা করে দিই। এখন শুনছি, ওই ঘটনা নিয়ে একদল শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে পাম্পের কেনাবেচা বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি আর কী বলব?’

পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা বাবলু রহমান বলেন এমপি সাহেব ঢাকায় অবস্থান করছেন, দেখি বিষয়টি সুরাহা করা যায় কি না।

জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে তিনটি রোববার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, পেট্রল পাম্প মালিক সমিতিসহ জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। সোমবার বিকালের পর ওই কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত