সিলেটটুডে ওয়েব ডেস্ক

১৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ২০:০৪

প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম যৌন নিপীড়নের আসামী ফয়েজকে চিনতেন না

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সিলেটের ওসমানীনগরে এক অনুষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন মামলার এক আসামী ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোললেও তিনি তাকে চিনতেন না বলে জানিয়েছেন।

নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আমীন রাসেল গত বছরের ৩০ নভেম্বর হবিগঞ্জে এক গৃহবধূকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, জামিন পেয়ে বের হলেও সেই মামলাটি এখনো বিচারাধীন। জামিনে থাকা অপরাধী ফয়েজ আমীন রাসেলের সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ছবি বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে সর্বত্র।

যৌন নিপড়নের দায়ে অভিযুক্ত ফয়েজ আমীন রাসেলের সঙ্গে ছবি বিতর্ককে অনাকাঙ্খিত এবং অসাবধানতা বশত বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

এ প্রসঙ্গে তারানা হালিম বলেছেন,‘সিলেট সফরকালীন শত শত মানুষ আমাকে এসে ফুল দিয়ে গেছেন, ছবি তুলেছেন। এতো মানুষের ভিড়ে কে চোর, কে ডাকাত, কে ধর্ষক; তা নিশ্চয় আমার চিনবার কথা নয়?

‘তবে উক্ত সংবাদে যাকে ধর্ষক বলা হয়েছে, সে তথ্য যদি সঠিক হয়; তবে আপনাদের মতো আমিও তার শাস্তি দাবি করবো এটাই স্বাভাবিক। কেননা, রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী হিসেবে যেকোন অন্যায়কে আমি কখনও কোনদিন প্রশ্রয় দেয় নাই, ভবিষ্যতেও দিব না।’

তারানা হালিমের বক্তব্য তুলে ধরে তার এপিএস জয়দেব নন্দী এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন:

 

তারানা হালিম বাংলাদেশ সরকারের একজন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এবং দুই বারের মাননীয় সংসদ সদস্য। বাংলাদেশের রাজনীতিতে- রাজনীতি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন হয়েছে তাঁদের মতো আর দুই একজনের নেতৃত্বে।

মেধা-মনন-প্রজ্ঞা দিয়ে তিনি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজের নামকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন। আপনারা জানেন, মানুষের প্রয়োজনে, দেশের স্বার্থে তিনি রাজনীতি করেন। সংস্কৃতির মসৃণ পথ আর রাজনীতির কণ্টকাকীর্ণ পথে হেঁটে তিনি পেয়েছেন আসল গন্তব্য, অর্থাৎ জনগণের ভালবাসা।

স্বভাবতই সিলেট সফরকালীন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণ তাঁর সাথে দেখা করতে আসবেন; এটাই স্বাভাবিক। তাঁর একার পক্ষে এতো মানুষের পরিচয় জানা সম্ভব নয় এবং তিনি সিলেটের অধিবাসীও নন। আর তাঁর পক্ষে এটাও সম্ভব নয় যে, তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কে ছবি তুলবেন বা তুলবেন না; সেটা নিয়ন্ত্রণ করা।

সুতরাং কে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন এতো জনতার ভিড়ে; সেটা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করার আদৌও কোন যৌক্তিকতা আছে কিনা, তা আমার বোধ্যগম্য নয়। আপনারা জানেন, তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই কিন্তু ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এখন স্থবিরতা কাটিয়ে উঠে একটি গতিময় মন্ত্রণালয়ে পরিণত হয়েছে।


এটাও সম্ভব হয়েছে সবার সম্মিলিত প্রয়াসে। আপনারা ভাল করে জানেন, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম রাজনীতির পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তার বিভিন্ন সময়ের ইতিবাচক ভূমিকার কথাও আপনারা জানেন।

আপনারাই বলুন, একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে, একজন খ্যাতনামা আইনজীবী হিসেবে, নারী অধিকার প্রশ্নে আপসহীন নেত্রী হিসেবে কোন ধর্ষককে পাশে রেখে কাউকে ছবি তুলতে সম্মতি দিতে কি তিনি পারেন?

মাননীয় প্রতিমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, "সিলেট সফরকালীন শত শত মানুষ আমাকে এসে ফুল দিয়ে গেছেন, ছবি তুলেছেন। এতো মানুষের ভিড়ে কে চোর, কে ডাকাত, কে ধর্ষক; তা নিশ্চয় আমার চিনবার কথা নয়?

তবে উক্ত সংবাদে যাকে ধর্ষক বলা হয়েছে, সে তথ্য যদি সঠিক হয়; তবে আপনাদের মতো আমিও তার শাস্তি দাবি করবো এটাই স্বাভাবিক। কেননা, রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী হিসেবে যেকোন অন্যায়কে আমি কখনও কোনদিন প্রশ্রয় দেয় নাই, ভবিষ্যতেও দিব না"।

মাননীয় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের এক দক্ষ কারিগর। সেই মহৎ কর্মযজ্ঞকে ত্বরান্বিত করতে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তাঁর এমন ইতিবাচক কাজ করার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে আপনাদের ইতিবাচক সাংবাদিকতার মাধ্যমে। আসুন, তার এগিয়ে যাওয়াকে সাধুবাদ জানাই।

আমাদের কিছু কর্মে যেন উনি হতাশ না হন, সেটা যেন আমরা খেয়াল রাখি।

 


এদিকে অভিযুক্ত  ফয়েজ আমীন রাসেল তার ফেসবুক থেকে প্রতিমন্ত্রীর সাথে তোলা ছবিটি সমালোচনার মুখে সরিয়ে নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, তাঁর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে যৌন নিপিড়নের মামলা দায়ের করা হয়। (মামলা নং- ৫৫৪/২০১৫)। বর্তমানে তিনি জামিনে থাকলেও মামলাটি বিচারাধীন।  রাসেলের বিরুদ্ধে  নবীগঞ্জে বাড়ি জবর দখলের ঘটনায় মামলাও রয়েছে (৩৭৮/১) । 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত