১৫ মার্চ, ২০১৬ ১০:২২
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আপিল রায় নিয়ে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে ২০ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাজির হতে হবে সরকারের দুই মন্ত্রীকে। এ দুই মন্ত্রী হচ্ছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালতের তলবে হাজির হয়ে ক্ষমা চাইলেও বিদেশ সফরে থাকা খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন।
এরপর বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন নয় বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ দুই মন্ত্রীর হাজিরার জন্য নতুন তারিখ ঠিক করে দেয়।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল গত রোববারই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তার আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুবের মাধ্যমে আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন। সেখানেই তিনি সময়ের আবেদন করেন।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আপিল বিভাগে উপস্থিত হন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
দুই মন্ত্রীর পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে একটি আবেদন দাখিল করেন। প্রধান বিচারপতি ও বিচারাধীন মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেয়ায় গত ৮ মার্চ আপিল বিভাগের ফুল কোর্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে ওই দুই মন্ত্রীকে তলব করে। একইসঙ্গে আদালত অবমাননার দায়ে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। আদালতের আদেশ অনুযায়ী সোমবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ওই দুই মন্ত্রীর পক্ষে দুটি আবেদন দাখিল করা হয়।
গত ৫ মার্চ ঢাকায় এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানির দাবি তোলেন কামরুল।
তিনি বলেন, আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বলে গণমাধ্যমের খবর।
তাদের ওই বক্তব্য সে সময় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। মীর কাসেমের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং বিএনপি নেতারা মন্ত্রীদের বক্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্বপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটা বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ।
এ ধরনের মন্তব্য এড়ানোর পাশাপাশি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিতর্কিত বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের বিচারই প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কারও মন্তব্য করা উচিৎ নয়।
রায়ের আগের দিন সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে কথা বলেন। দুই মন্ত্রীর ওই বক্তব্য যে সরকারের ভাষ্য নয়, তা তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
আপনার মন্তব্য