সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ জুলাই, ২০২০ ২০:৩৯

বেতনের জন্য শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট আটক: স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচার বলছে বিবিআইএস

বেতন না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট আটকে দেওয়া বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ (বিবিআএস) কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ধরণের সংবাদকে অপপ্রচার বলে দাবি করেছে তারা।

বিবিআইএসের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়-সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে। কয়েকজন অভিভাবকের প্ররোচনায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল কিছু শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

মূল বিষয়টি হলো- বৃটিশ বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজ দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি সম্পুর্ণ বৃটিশ কারিকুলাম ও ন্যাশনাল কারিকুলাম। এর মধ্যে বৃটিশ কারিকুলামের ফলাফল জুন মাসে প্রকাশিত হয়ে থাকে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ লক্ষ্য করে যে, শুধু মাত্র বৃটিশ কারিকুলামের মধ্যেই ১৪৮জন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ছেলে-মেয়েদের টিউশন ফি পরিশোধ করেননি। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ মাস পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে।

এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতার একমাত্র আয়ের উৎসই শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির মাধ্যমে। কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্য্যজনক বিষয় হলো উল্লেখিত ১৪৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক রয়েছেন যারা সর্বোচ্চ ১৮ মাস, ১০ মাস, ৮ মাসের টিউশন ফিও পরিশোধ করেননি। ফলে মোটা অংকের অনেক বকেয়া পড়ায় প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে।

বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান নানা ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের প্রতিষ্ঠানে লক্ষ্যণীয় যে, বাংলাদেশে গত মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেই ক্ষেত্রে কোন অভিভাবক যদি তাদের ছেলে-মেয়েদের টিউশন ফি পরিশোধে কোন সমস্যার সম্মুখীন হন, সেটা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বলতে পারতেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য কেউ যোগাযোগ করেন নি। কিন্তু আমরা মনে করছি অনেকটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিক সংকটে ফেলার জন্য মাসের পর মাস যাবত টিউশন ফি পরিশোধ করা হচ্ছে না। আর এ কারনেই অনেক শিক্ষার্থীর টিউশন ফি ১৮ মাস পর্যন্ত বকেয়া পড়েছে।

যেহেতু এটি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, সেহেতু শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির উপরেই নির্ভর করে এর শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। এটি অনেকের পরিবার নিয়ে চলার অন্যতম আয়ের উৎস। যারা শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার জন্য ব্যস্ত তাদেরই যদি অভিভাবকদের অসহযোগিতা কতটুকু সমিচিন?

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা বরাবরই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি। কিন্তু একমাত্র তাদের অভিভাবকদের কারনেই সদ্য প্রকাশিত অনেক শিক্ষার্থীর ফলাফল সাময়িকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এ প্রতিষ্ঠান ১৮ মাস বকেয়া থাকার পরও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ অনেক ব্যক্তিমালিকাধীন প্রতিষ্ঠান আছে, দুই মাস শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বকেয়া পড়লেই তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি দিয়ে বিদায় করে দেয়। কিন্তু আমরা সে ধরনের অমানবিক কাজ কখনই করিনি।

আমরা সকলের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, সকলের সহযোগিতায় বিগত ২৩ বছর যাবত সুনামের সাথে এ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু বরাবরই কয়েকজন অভিভাবক নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য নানা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে, এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। তারা অন্য অভিভাবকদের নানাভাবে উস্কানি দিচ্ছেন।
যদি কোন অভিভাবকের ব্যক্তিগত কোন অসুবিধা থাকে তাহলে অবশ্যই কারো প্ররোচনায় কান না দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা গেল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত