স্পোর্টস ডেস্ক

২২ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ১৭:২৭

জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২২৮, বাংলাদেশের প্রাপ্তি ৬ উইকেট

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ২০১৭ সালে। ছোট্ট এই ক্যারিয়ারে তিনবার ইনিংসে ৮ উইকেট পাওয়া বিস্ময়কর ব্যাপারই তো। বয়সের প্রসঙ্গে এলে, সেটা আরও অবাক করে। ১৯ বছর বয়সী নাঈম হাসান বিস্ময় ছড়িয়েই যাচ্ছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের অভিষেকে আলো ছড়ানো ডানহাতি স্পিনার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে আরেকবার দেখালেন তার সামর্থ্য। তার দুর্দান্ত বোলিংয়েই প্রথম দিন শেষে একটু হলেও এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।

৬৮ রান দিয়ে নাঈমের শিকার ৪ উইকেট। ২ উইকেট পেয়েছেন আবু জায়েদ। প্রথম দিনে বাংলাদেশের সাফল্যে তাদেরই সব অবদান। তাই ক্রেগ আর্ভিনের সেঞ্চুরির পরও জিম্বাবুয়ের শেষটা ভালো হয়নি। দিন শেষ করেছে তারা ৬ উইকেটে ২২৮ রানে।

জিম্বাবুয়ে টেস্টের আগেই বিসিএলে ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন নাঈম। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিরপুরের প্রথম দিন শেষে পেলেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান উইকেটটি সফরকারী অধিনায়ক আর্ভিনের। টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি পূরণ করে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। দিন শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে তাকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফেরান নাঈম। যাওয়ার আগে খেলে যান ১০৭ রানে দুর্দান্ত ইনিংস। আর্ভিন ২২৭ বলের ধৈর্যশীল ইনিংস সাজান ১৩ চারে। সফরকারী দলের চতুর্থ অধিনায়ক হিসেবে মিরপুরে সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। তার আগের তিনজন- রাহুল দ্রাবিড়, মাহেলা জয়াবর্ধনে ও অ্যালিস্টার কুক।

প্রথম সেশন কেটেছিল হতাশায়। তবে দ্বিতীয় সেশন খারাপ যায়নি বাংলাদেশের। লাঞ্চের পর ২ উইকেট তুলে নিয়ে চা বিরতি যায় বাংলাদেশ। দুটো উইকেটই নেন নাঈম। তার আগে দিনের শুরুতে আবু জায়েদের সাফল্যে এসেছিল প্রথম উইকেট।

লাঞ্চ থেকে ঘুরে এসেও ছন্দ ধরে রেখেছিল জিম্বাবুয়ে। চমৎকার ব্যাটিংয়ে রান বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন প্রিন্স মাসভাউরি ও ক্রেগ আর্ভিন। অবশেষে তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন নাঈম। হাফসেঞ্চুরি করা মাসভাউরিকে ফেরানোর পরপরই এই স্পিনার তুলে নেন ব্রেন্ডন টেলরের উইকেট। তাতে স্বস্তি ফেরে স্বাগতিক ক্যাম্পে।

আগেই উইকেট উদযাপন করতে পারতেন নাঈম। লিটন দাস ও নাজমুল হাসান শান্তর ভুলে পারেননি। লিটনের গ্লাভস হয়ে শান্তর হাত লেগে বেরিয়ে গিয়েছিল যার ক্যাচ, সেই প্রিন্স মাসভাউরিকে আউট করে নিজের প্রথম উইকেট পেয়েছেন নাঈম। এবার আর কারও ওপর নির্ভর করেননি ডানহাতি স্পিনার। নিজের বলে নিজেই নিয়েছেন মাসভাউরির ক্যাচ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি করে জিম্বাবুয়ের এই ওপেনার আউট হয়েছেন ৬৪ রানে। ১৫২ বলের ধৈর্যশীল ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৯ বাউন্ডারিতে। তার বিদায়ে জিম্বাবুয়ে হারায় দ্বিতীয় উইকেট।

একটু পর আবারও উইকেট আনন্দে মাতলেন নাঈম। মাসভাউরিকে আউট করার পরের ওভারেই ফিরিয়েছেন টেলরকে। জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক উইকেটটা একরকম দিয়েই গেছেন! রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বল টেনে লাগিয়েছেন স্টাম্পে। তাতে ১০ রানে শেষ হয় টেলরের ইনিংস।

ওই সাফল্য নিয়ে চা-বিরতিতে যাওয়া নাঈম ঘুরে এসে আবারও করেন উইকেট উদযাপন। এবার ফেরান সিকান্দার রাজাকে। তার বল সিকান্দারের ব্যাট ছুঁয়ে গিয়ে জমা পড়ে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। জিম্বাবুয়ের চতুর্থ ‍ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৮ ‍রান।

এর আগে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছিলেন আবু জায়েদ। ধীরগতিতে শুরু করা জিম্বাবুয়েকে আরও চাপে ফেলেন তিনি ওপেনার কেভিন কাসুজাকে আউট করে। শুরু থেকেই বাংলাদেশের পেস আক্রমণের সামনে পরীক্ষা দিতে হয়েছে সফরকারী দুই ওপেনারকে। সতর্ক শুরুতেও কাজ হয়নি। জায়েদের বলে গালিতে নাঈম হাসানের হাতে ধরা পড়েন কাসুজা। ২৪ বলে খেলে তিনি করেন ২ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: জিম্বাবুয়ে- প্রথম ইনিংসে ৯০ ওভারে ২২৮/৬ (আর্ভিন ১০৭, মাসভাউরি ৬৪, সিকান্দার ১৮, টেলর ১০; নাঈম ৪/৬৮, জায়েদ ২/৫১)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত